রাফাল বিতর্ক নিয়ে মুখ না খুললেও, লোকসভা ভোটের আগে তিনি যে পুরোদমে আত্মবিশ্বাসী ছাপান্ন ইঞ্চি ছাতি ফুলিয়ে ওডিশার জনসভায় সে কথা বুঝিয়ে দিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। রাফাল বিতর্ক এবং রাহুল গান্ধীর তোপের ধার দিয়েও গেলেন না প্রধানমন্ত্রী। বরং কথা শুরু করলেন তিন তালাকের অর্ডিন্যান্স জারি নিয়ে।
চলতি মাসেরই প্রথমে তিন তালাক নিয়ে অর্ডিন্যান্স জারি করে কেন্দ্র। কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার বৈঠকে এই অর্ডিন্যান্স পাশ হয়। লোকসভা ভোটের মুখে অর্ডিন্যান্স জারি করে বিজেপি মুসলিম সম্প্রদায়ের মন জয়ের চেষ্টা করছে বলে আওয়াজ তোলে বিরোধী শিবির। সেই প্রসঙ্গই টেনে এনে শনিবার ওডিশার তালচেরে এক শিল্যান্যাস প্রকল্পের অনুষ্ঠানে মোদী বলেন, “এই সরকার এমন সিদ্ধান্ত নিতে পারে, যা দশক ধরেও কেউ নেওয়ার কথা ভাবতে পারে না। উদ্দেশ্য যদি সৎ হয়, তাহলে সিদ্ধান্ত নিতে ভয় পায় না কেন্দ্রীয় সরকার। এমনই এক সিদ্ধান্ত হল তিন তালাক বিল।”
সুপ্রিম কোর্ট আগেই তিন তালাককে অবৈধ ঘোষণা করেছিল। শীর্ষ আদালতের রায়কে মর্যাদা দিতেই তৈরি হয় মুসলিম উইমেন (প্রোটেকশন অব রাইটস অন ম্যারেজ) বিল ২০১৭। গত বাদল অধিবেশনেই লোকসভায় পেশ হয় সেই বিল। পাশও হয়ে যায়। কিন্তু বিরোধীরা বিলটি সিলেক্ট কমিটিতে পাঠানোর দাবি তোলে। এছাড়াও আরও কিছু জটিলতায় শেষ পর্যন্ত রাজ্যসভায় পেশ হয়নি এই বিল। পরে কেন্দ্র অর্ডিন্যান্স জারি করে তিন তালাককে আইনি স্বীকৃতি দেয়। এ দিনের জনসভায় মোদী বলেন, “সরকার যখন সিদ্ধান্ত নিয়েছিল রাজ্যসভায় এই বিল পেশ হবে তথন সেটা হয়েছে। কেন্দ্রই এই বলিষ্ঠ সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা রাখে।”
সেই সঙ্গে তালচেরে শিল্যান্যাস প্রকল্পের বিষয়ে মোদী আশ্বাস দেন আগামী ৩৬ মাসের মধ্যে এই প্রকল্পের কাজ শেষ হবে। এই প্রসঙ্গে মোদী বলেন, “ওডিশার মানুষজনকে আমি আশ্বাস দিলাম, ঠিক ৩৬ মাস বাদে ফিরে এসে আমি নিজে এই প্রকল্প আপনাদের উৎসর্গ করব।”
এ দিকে রাফাল নিয়ে গত কয়েকদিন ধরেই রাহুলের নেতৃত্বে সরব কংগ্রেস ব্রিগেড। ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ফ্রাঁসোয়া ওঁলাদের বিস্ফোরক মন্তব্যের পরেই আরও জোরালো ভাষায় মোদীকে আক্রমণ করেছেন রাহুল গান্ধী। শনিবার ওলাঁদের মন্তব্যকে হাতিয়ার করে রাহুল বলেন, “প্রাক্তন ফরাসি প্রেসিডেন্ট মোদীকে চোর বলছেন। কিন্তু তার থেকে ভয়ংঙ্কর যে প্রধানমন্ত্রী চুপ রয়েছেন। একটা শব্দও উচ্চারণ করছে না।” মোদীর জবাব তলব করে সাংবাদিক বৈঠক করে রাহুল এও বলেন, “বোঝা যাচ্ছে যে প্রধানমন্ত্রী দুর্নীতিপরায়ণ”।
Be the first to comment