কুসংস্কারের বশবর্তী হয়ে নিজেদের দুধের শিশুকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেওয়ার অভিযোগ বাবা-মায়ের বিরুদ্ধে

Spread the love
অন্ধ বিশ্বাসের বশবর্তী হয়ে নিজেদের দুধের শিশুকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেওয়ার অভিযোগ উঠল বাঁকুড়ার রাইপুরের এক দম্পতির বিরুদ্ধে। তাঁদের বিরুদ্ধে অবশ্য এখনও কোনও ব্যবস্থা নেয়নি পুলিশ । পুলিশের বক্তব্য, শিশুটির বাবা-মা এতোটাই কুসংস্কারাছন্ন যে আগে তাঁদের মনের ভুল ভাঙানো দরকার। এলাকার বাসিন্দারাও কেউ ওই দম্পতির বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ দায়ের করতে চাননি। সেই কারণেই পুলিশ শুধুমাত্র একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করেছে।
রাইপুর থানার মণ্ডলকুলী গ্রাম পঞ্চায়েতের ব‍্যেঙ্গদা গ্রামের বাসিন্দা সঞ্জয় ও শিবানী দিগার। অন্যের গরু চরিয়ে কোনও মতে সংসার চালান সঞ্জয়। বছর খানেক আগে একটি ছেলে হয় ওই দম্পতির। জন্ম থেকেই সে খুবই রুগ্ন। শিবানীর বক্তব্য, সাধ্যমতো চিকিৎসা করিয়েও ছেলেকে সুস্থ করে তুলতে পারেননি। দিনকয়েক আগে ঠাকুর তাঁকে স্বপ্নে দেখা দেন। লালগড়ের নিপুরা গ্রামে ধন্বন্তরীর থানে তিনি রয়েছেন বলে জানান। এরপরেই শিশুটিকে নিয়ে নিপুরায় চলে আসেন তাঁরা। সেখানে শিশুটিকে স্নান করিয়ে ভিজে গায়ে খোলা আকাশের নীচে দেবতার থানে শুইয়ে দেন। সারাদিন প্রখর রোদে থেকে আরও অসুস্থ হয়ে পড়ে এক বছরের শিশু তারাপদ। তাকে সারাদিন কিছু খেতেও দেওয়া হয়নি।
সন্ধে নাগাদ ঝাড়গ্রামের পুলিশ ও প্রশাসনিক আধিকারিকদের কানে এই খবর পৌঁছয়। তড়িঘড়ি ঘটনাস্থলে যান তাঁরা। শিশুটিকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করতেই বাধা দেন তার বাবা-মা। তাঁদের অনেক বুঝিয়ে শিশুটিকে ঝাড়গ্রাম সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু ততক্ষণে মৃত্যু হয়েছে শিশুটির।  হাসপাতালের চিকিৎসকরা শিশুটিকে মৃত ঘোষণা করেন । সোমবার দেহের ময়নাতদন্তের পর পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হয়। জেলা শাসক আয়েশা রানী বলেন, “ছেলেকে সুস্থ করতে গিয়েই কুসংস্কারের বশে তাকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিয়েছেন ওই বাবা-মা। এমন কুসংস্কার দূর করতে বিভিন্ন গ্রামে সচেতনতার প্রচার চালানো হবে।”

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*