গতবারের মতো না হলেও শহরে মাঝেমধ্যেই ডেঙ্গি থাবা বসাচ্ছে। ফের ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হলো ১০ বছরের এক বাচ্চা মেয়ের। মৃতের নাম পরিস্মিতা ঘোষ। চতুর্থ শ্রেণির পড়ুয়া পরিস্মিতার বাড়ি কলকাতার বড়তলা থানা এলাকার জগন্নাথ লেনে। বাবার নাম সুদেব ঘোষ।
পরিস্মিতার পরিবার সূত্রে খবর, চলতি মাসের ১৭ তারিখ জ্বরে আক্রান্ত হয় ওই নাবালিকা৷ এরপর চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে রক্ত পরীক্ষা করা হয়৷ সেই রিপোর্টে ধরা পড়ে ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়েছে বছর দশেকের পরিস্মিতা৷ বাড়িতে চিকিৎসা চললেও ক্রমে প্লেট লেট কমতে থাকে তার৷
তাই বাধ্য হয়ে ১৯ সেপ্টেম্বর উত্তর কলকাতার একটি হাসপাতালে তাকে ভর্তি করা হয়৷ সেখানেই ২৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ভর্তি থাকে পরিস্মিতা৷ কিন্তু অভিযোগ, ওই হাসপাতালে কোনও রকম শারীরিক অবস্থার উন্নতি হয়নি নাবালিকার৷ তাই, ২৫ সেপ্টেম্বর রাতেই ই এম বাইপাসের ধারে একটি হাসপাতালে ওই পরিস্মিতাকে ভর্তি করা হয়৷ নাবালিকার শারীরিক অবস্থা খারাপ থাকার কারণে পেডিয়াট্রিক ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিট অর্থাৎ পিআইসিইউ-তে রাখা হয়েছিল তাকে৷
হাসপাতাল সূত্রে খবর, কোনও ভাবেই প্লেটলেট স্বাভাবিক হচ্ছিল না৷ বারেবারে ওঠা নামা করছিল পরিস্মিতার প্লেটলেট৷ জানা গেছে, হাসপাতালে ভর্তির পর পরিস্মিতার প্লেটলেট প্রথমে ৮০ হাজার থাকলেও পরে তা পৌঁছয় ১ লক্ষ ২০ হাজারে৷ কিন্তু অভিযোগ, আচমকা ১৫ হাজারে প্লেটলেট নেমে যায়৷ তবে ফের আবার ওই প্লেট লেটের সংখ্যা বেড়ে যায়৷ ৩৫ হাজার হয় বলেও জানা গিয়েছে৷
ফলে প্লেটলেট স্বাভাবিক করতে বেশ বেগ পেতে হয় চিকিৎসকদের৷ কিন্তু হাজার চেষ্টা সত্বেও শেষ রক্ষা কোনও ভাবেই করা যায় নি৷ বাঁচানো সম্ভব হয় নি ওই নাবালিকাকে৷ বুধবার সন্ধ্যে ছ’টা নাগাদ মৃত্যু হয় ওই পরিস্মিতার৷ মৃত্যুর কারণ হিসাবে তার ডেথ সার্টিফিকেটে ডেঙ্গির কথা উল্লেখ করা হয়েছে। যদিও পরিবারের তরফে কোনও অভিযোগ এখনও করা হয়নি৷
তবে এত সচেতনতার পরেও ডেঙ্গির প্রকোপ কমানো যাচ্ছে না বলে চিন্তায় শহরবাসী ও প্রশাসন। বিশেষত, এ বছর মূলত বাচ্চাদেরকেই নিজের শিকার বানাচ্ছে ডেঙ্গির মশা। কলকাতায় চলতি বছর ডেঙ্গিতে যে কয়েকটি মৃত্যু হয়েছে তার বেশিরভাগই বাচ্চা। তাই কীভাবে এর মোকাবিলা করা যায়, তা নিয়েই চিন্তায় বাবা-মা থেকে শুরু করে প্রশাসন।
Be the first to comment