রান্নাঘরে বাটিতে বাটিতে ভরে রাখা সিদ্ধ নরমাংস। ফ্রিজে জমানো মানুষের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ। আচারের মতো জারে ভর্তি মানুষের ছিন্ন বিছিন্ন চামড়া, দেহের নানা অংশ। নরখাদক দম্পতিকে গ্রেফতার করতে গিয়ে শিউড়ে উঠলেন দুঁদে পুলিশ অফিসাররা। অভিযুক্তদের ঠাণ্ডা, হিম শীতল চাউনি কাঁটা দিল তাঁদের শরীরেও।
নরখাদক বা নরমাংস ভোজীদের নিয়ে মানুষের কৌতুহল চিরদিনের। এই নিয়েই বিস্তর লেখালেখি, গবেষণাও হয়েছে। বিশ্বের নানা প্রান্তে এমন নরখাদকদের কথা খবরের শিরোনামেও এসেছে। এই ঘটনাটা রাশিয়ার। গোপন সূত্রে খবর পেয়ে পুলিশ হানা দেয় ৪৩ বছরের নাটালিয়া বকশিবার বাড়িতে। খুনি সন্দেহে তাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ধরা পড়ে তার স্বামী দিমিত্রি বকশিবাও (৩৫)। পুলিশের সন্দেহ ছিল মানুষ খুন করে নরমাংস খায় এই দম্পতি।
এক তদন্তকারী অফিসারের কথায়, খবর পেয়ে ওই দম্পতির বাড়িতে হানা দিয়ে চোখ কপালে ওঠে পুলিশের। গোটা বাড়িটাই যেন একটা মৃত্যুপুরী। রান্নাঘর থেকে ফ্রিজ-সব জায়গাতেই ছড়িয়ে রয়েছে মানুষের দেহের নানা অংশ। সিদ্ধ বা কাঁচা, কাটা-ছেঁড়া অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ। দেখলে রোম খাড়া হয়ে যায়। জেরায়, নাটালিয়া তাদের অপরাধ স্বীকার করেছে। জানিয়েছে এক রোমহর্ষক কাহিনী।
নাটালিয়ার কথায়, মানুষের মাংসের লোভ তাকে খুনি করে তোলে। এই কাজে সে সামিল করে তার স্বামীকেও। এখনও পর্যন্ত মোট ৩০ জনকে খুন করে তাদের মাংস খেয়েছে নাটালিয়া ও তার স্বামী দিমিত্রি। তাদের শেষ শিকার ছিল এক রেস্তোরাঁর কর্মী এলেনা ভাশ্রুশ্রেবা। নাটালিয়ার দাবি, এলেনাকে তার স্বামীর সঙ্গে ফ্লার্ট করতে দেখে মাথায় রক্ত উঠে যায় তার। তখনই তাকে খুন করার ছক কষে সে।
প্রথমে এলেনাকে দেখা করার জন্য ডেকে পাঠায় নাটালিয়া। দিমিত্রিকে দিয়ে খুন করায় তাকে। পরে দেহ ছুরি দিয়ে টুকরো টুকরো করে কাটে। খণ্ড বিখণ্ড দেহের সঙ্গে সেলফিও তোলে নাটালিয়া। তার পর দেহের টুকরো গুলো ব্যাগে ভরে বাড়ি ফিরে ফ্রিজে যত্ন করে রেখে দেয়।
নরখাদক দম্পতি এলেনার মাংসের স্বাদ চেখেছিল কিনা জানা নেই, তবে রুশ তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, তাদের আপাতত শ্রীঘরে রাখা হয়েছে। তদন্তকারীদের দাবি, ওই দম্পতির কোনও মানসিক ব্যধি নেই। বরং ঠাণ্ডা মাথায় প্রতিটা খুন করেছে তারা। খুনের মামলা শুরু হয়েছে। দোষী সাব্যস্ত হলে দু’জনেরই ১৫ বছর কারাবাসের সাজা হবে।
Be the first to comment