স্পার্ম ডোনেশন বা বীর্য দান নতুন কিছু নয়।সারা বিশ্বে প্রায় অর্ধ শতাব্দীরও বেশি সময় ধরে, দাতার কাছ থেকে শুক্রাণু নিয়ে গর্ভধারণ করে আসছেন অনেক বন্ধ্যা নারী, যাঁদের স্বামীরদের শুক্রাণু সন্তান সৃষ্টিতে সক্ষম নয়।ভারতে অবশ্য স্পার্ম ডোনেশনের জনপ্রিয়তা ও প্রচার বৃদ্ধি পেয়েছে আয়ুষ্মান খুরানার ‘ভিকি ডোনার’ ছবিটির দৌলতে।ভিকি ডোনার ছবিটিতে, ভিকি ডোনার(আয়ুষ্মান খুরানা) তাঁর বীর্য দান করে চিকিৎসক অন্নু কাপুরকে তাঁর চিকিৎসায় সাহায্য করতেন।
কিন্তু আমেরিকায় এক চিকিৎসক ডোনাল্ড ক্লিন(৭৯) তাঁর কাছে স্পার্ম নিতে আসা নারীদের না জানিয়ে দিব্যি নিজের বীর্য দান করে গেছেন দীর্ঘকাল ধরে। আর তার জেরেই বুড়ো বয়েসে তিনবছরের জন্য শ্রীঘরে ঠাঁই হল ওই চিকিৎসকের। পুলিশ সূত্রে খবর, সন্তানলাভের জন্য তাঁর কাছে আসা নারীদের ফেরাতেন না ওই চিকিৎসক। স্পার্মের জন্য উপযুক্ত দাতা পাওয়া না গেলে নিজের শুক্রাণুই দান করতেন। বন্ধ্যা নারীদের অন্ধকারে রেখে। এ ভাবে দিব্যি চলছিল নিজের বীর্য বেচার ব্যবসা। ফার্টিলিটি চিকিৎসক হিসেবে বাড়ছিল সুনাম, বাড়ছিল সন্তানের সংখ্যাও।
কিন্তু ব্যবসায় বাদ সাধল তাঁরই দুই বায়োলজিক্যাল সন্তান। মায়েদের কাছ থেকে তাঁরা জানতে পারেন কোথা থেকে নেওয়া হয়েছিল শুক্রাণু। নিজেদের সঙ্গে চিকিৎসকের অস্বাভাবিক মিল দেখে সন্তানদের সন্দেহ হয়। সাবালক সন্তানেরা তাঁদের ডিএনএ টেস্ট করান। টেস্টে ওই চিকিৎসকের ডিএনএ-এর সঙ্গে সন্তানদের ডিএনএ-এর ৫০ শতাংশেরও বেশি মিল পাওয়া যায়। এরপরই ওই দুই ব্যক্তি পুলিশের কাছে তাঁদের অভিযোগ দায়ের করেন। পুলিশি তদন্তে জানা গেছে মোট ২০ জনেরও বায়োলজিক্যাল বাবা ওই চিকিৎসক। তাঁর কনিষ্ঠতম সন্তানের বয়স ৩০ বছর। ইন্ডিয়ানা পুলিশ জানিয়েছে, ২০০৯ সালে অবসর নেন ওই চিকিৎসক। আর ১৯৭০ সাল থেকে তিনি এই ‘কাজটি’ চালিয়ে যাচ্ছিলেন। ক্লিনিকে আসা মহিলাদের মোট ৫০ বার নিজের স্পার্ম দিয়েছেন। এবং মহিলাদের বলেছেন শুক্রানুগুলি কোনও মেডিক্যাল কলেজের ছাত্রের।
সম্প্রতি, ইন্ডিয়ানা আদালত চিকিৎসককে যে কারনে তিন বছরের জেল দিয়েছে সেটাও রীতিমতো চমকপ্রদ। চিকিৎসকের জেল হয়েছে একজন চিকিৎসক হয়ে নিজের স্পার্ম গ্রহীতাদের দেওয়ার জন্য নয়। কারণ, ইন্ডিয়ানার আইনে এটা কোনও অপরাধ নয়। তাঁর জেল হয়েছে স্পার্ম গ্রহীতাদের কাছে মিথ্যা বলার জন্য। ইন্ডিয়ানা আইনে চিকিৎসকের চিকিৎসার লাইসেন্সও বাতিল করা হয়েছে। মামলার রায় ঘোষণার দিন এমন দশজন কোর্টে উপস্থিত ছিলেন যাঁদের বায়োলজিক্যাল বাবা হলেন ওই কীর্তিমান চিকিৎসকই।
Be the first to comment