হু হু করে বাড়ছে মৃতের সংখ্যা। ইন্দোনেশিয়ায় ভয়ঙ্কর সুনামির গ্রাসে শনিবার মৃতের সংখ্যা ছিল ৩৮৪। রবিবার তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮৩২। এখনও নিখোঁজ বহু মানুষ। মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
শুক্রবার প্রথমে ইন্দোনেশিয়া কেঁপে ওঠে তীব্র ভূমিকম্পে। রিখটার স্কেলে কম্পনের মাত্রা ছিল ৭.৫। কেন্দ্রস্থল সুলাওয়েসি দ্বীপ। কিছুক্ষণের মধ্যেই সুনামি সতর্কতা জারি করে উপকূল এলাকার বাসিন্দাদের নিরাপদ দূরত্বে সরে যেতে বলা হয়। ‘ইন্দোনেশিয়ান এজেন্সি ফর মিটিওরোলজি, ক্লাইমেটোলজি অ্যান্ড জিওফিজিক্স’-এর তরফে জানানো হয়, সমুদ্রের ঢেউয়ের উচ্চতা কম করে ১০ ফুট।
ভয়াবহ ভূকম্পের পরেই সুনামি আছড়ে পড়ে সুলাওয়েসি দ্বীপের পালু শহরে। ডোনগালার তালিসা বিচে ধেয়ে আসা সেই সুনামি মুহূর্তে ভাসিয়ে নিয়ে যায় সবকিছু৷ ভয়ে এলাকা ছেড়ে পালাতে দেখা যায় বহু মানুষকে। ভূমিকম্পের উৎসস্থল ছিল যেখানে, তার থেকে ৮০ কিলোমিটার দূরে পালু শহরে আছড়ে পড়েছে সুনামি। পালু শহরে বসবাস করেন সাড়ে তিন লক্ষেরও বেশি মানুষ। প্রথমে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ জানা না গেলেও যত সময় গড়ায় ছবিটা স্পষ্ট হতে থাকে।
মার্কিন জিওলজিক্যাল সার্ভে প্রথমে জানিয়েছিল, কম্পনের মাত্রা ৭.৭। তবে পরে জানানো হয়, রিখটার স্কেলে ৭.৫ তীব্রতার কম্পন ধরা পড়েছে। ইন্দোনেশিয়ার পাশাপাশি জাপানেও জারি করা হয়েছে সুনামি সতর্কতা। পরে ‘ইন্দোনেশিয়ান এজেন্সি ফর মিটিওরোলজি, ক্লাইমেটোলজি অ্যান্ড জিওফিজিক্স’-এর তরফে জানানো হয়, ওই ভূমিকম্পের পরেই এ দিন রিখটার স্কেলে ৬.১ মাত্রার আরও একটি ভূমিকম্প হয় একই এলাকায়।
ইতিমধ্যেই সোশাল মিডিয়ায় সেই ভয়াবহতার বেশ কিছু ছবি, ফুটেজ ভাইরাল৷ আতঙ্কে মানুষের আর্তনাদ, সবছেড়ে প্রাণ বাঁচানোর জন্য ছুট, ত্রাহি ত্রাহি রব! ন্যাশনাল ডিজাসটার ম্যানেজমেন্ট এজেন্সির মুখপাত্র জানান, আহতদের সকলকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে৷ চিকিৎসা চলছে৷
এর আগে, আগস্ট মাসের প্রথমদিকেও ভয়াবহ ভূমিকম্পে বিধ্বস্ত হয়ে পড়ে ইন্দোনেশিয়া৷ ২৯ জুলাই তীব্র ভূমিকম্পের কবলে পড়ে লোম্বক দ্বীপ৷ রিখটার স্কেলে এই ভূকম্পনের তীব্রতা ছিল ৬.৪। তখন ১২জনেরও বেশি মানুষ মারা যান৷ ২০০৪ সালে এখনও পর্যন্ত সবচেয়ে বড় ভূমিকম্প এবং তার জেরে সুনামি আছড়ে পড়ে অন্তত ১৩টি দেশে। সব দেশ মিলিয়ে দু’লক্ষেরও বেশি মানুষের মৃত্যু হয়। শুধু ইন্দোনেশিয়াতেই মৃতের সংখ্যা ছিল এক লক্ষ ২০ হাজার।
Be the first to comment