শতাধিক মানুষকে বাঁচিয়েছিলেন নিপুণ দক্ষতায়। দু’হাত বাড়িয়ে জলে থেকে তুলে এনেছিলেন ডুবন্ত মানুষকে। কেরলের বন্যাবিধ্বস্তদের আর্ত চিৎকার তাঁকে ঘরে বন্দি করে রাখতে পারেনি। সেই যুবকই হয়ে উঠেছিলেন দুর্গতদের কাছে ‘হিরো’।
নাম তাঁর জিনেশ জেরোম। সবে কুড়ির কোঠায় পা দিয়েছেন জিনেশ। এর মধ্যেই অন্ধকার নেমে এল তাঁর জীবনে। পথ দুর্ঘটনা কেড়ে নিল এই ঝকঝকে তরুণের প্রাণ।
ঘটনাটা গত শুক্রবারের। পুলিশ জানিয়েছে, বাইকে চেপে কন্যাকুমারীতে কোনও কাজের জন্য গিয়েছিলেন জিনেশ। বাইকটি চালাচ্ছিলেন তাঁর এক বন্ধু জগন। তিনি বসেছিলেন পিছনে। চিন্নাথুরাইয়ের রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময়েই নিযন্ত্রণ হারিয়ে বাইকটি রাস্তার পাশে সরু খাদের মধ্যে নেমে যায়। বাইক থেকে ছিটকে পড়েন জিনেশ। সেই সময় পিছনে থেকে দ্রুত গতিতে আসা একটি ট্রাক তাঁকে পিষে দিয়ে চলে যায়। গুরুতর জখম তাঁর বন্ধু জগনও।
জিনেশের মৃত্যুর খবর প্রকাশ্যে আসতে শোকের ছায়া গোটা কেরলেই। ভয়াল বন্যা যখন গ্রাস করেছিল কেরলের বিভিন্ন এলাকাকে, তখন বিপর্যয় মোকাবিলা দল, সেনা, স্থানীয়দের সঙ্গে উদ্ধারের কাজে এগিয়ে এসেছিলেন জিনেশও। পেশায় মৎস্যজীবী জিনেশ ছিলেন দুর্দান্ত সাঁতারু এবং ডুবুরি। জলে ঝাঁপিয়ে পড়ে বন্যাদুর্গতদের সাহায্য করতে দেখা গিয়েছে তাঁকে। চেঙ্গানুর-সহ বিভিন্ন জায়গায় উদ্ধারকারী দলের মধ্যে জিনেশও হয়ে উঠেছিলেন চেনা মুখ। অন্তত ১০০ জন মানুষের প্রাণ বাঁচিয়েছিলেন জিনেশ।
তিরুঅনন্তপুরমের পল্লীভিলাকামে তাঁর গ্রামের কাছেই জিনেশকে কবর দেওয়া হয়েছে। গোটা গ্রাম জড়ো হয়ে তাঁকে শেষ সম্মান জানিয়েছেন। জিনেশের শেষযাত্রায় হাজির ছিলেন তিরুঅনন্তপুরমের কংগ্রেস সাংসদ শশী তারুরও। জিনেশের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন তিনিও।
Be the first to comment