ঝুঁকি নিয়ে শেয়ার মার্কেটে কষ্টার্জিত অর্থ বিনিয়োগ করতে ভয় পান অনেক মধ্যবিত্ত। তাঁদের কাছে বিনিয়োগের পছন্দসই মাধ্যম হল পাবলিক প্রভিডেন্ড ফান্ড। সংক্ষেপে পিপিএফ। তাতে মোটামুটি ভালো সুদ পাওয়া যায়। সেই সঙ্গে আয়করে পাওয়া যায় ছাড়। খুব কম বিনিয়োগ প্রকল্পেই এত সুবিধা আছে।
কিন্তু অন্যান্য প্রকল্পের মতো পিপিএফেও আছে কয়েকটি অসুবিধা। বিনিয়োগ করার আগে প্রত্যেকেরই সেই নেতিবাচক দিকগুলি সম্পর্কে সচেতন থাকা উচিত।
প্রথমত, পিপিএফে সুদের হার ক্রমশ কমছে। আগে সুদের হার ছিল ৭.৬ শতাংশ। চলতি অক্টোবরে হয়েছে আট শতাংশ। কিন্তু আট শতাংশও খুব আকর্ষণীয় রেট নয়। সুতরাং যাঁরা বিনিয়োগের ওপরে উঁচু হারে সুদ পেতে চান, পিপিএফ তাঁদের আকর্ষণ করে না ।
দ্বিতীয়ত, পিপিএফে বিনিয়োগ করলে দ্রুত টাকা পাওয়ার আশা ছাড়তে হবে। লিকুইডিটির প্রশ্নে পিপিএফ মোটেই আকর্ষণীয় নয়। পিপিএফ অ্যাকাউন্টের মেয়াদ ১৫ বছর। সেখান থেকে প্রথমবার টাকা তোলা যায় সাত বছর পর। তাতেও অনেক সীমাবদ্ধতা থাকে। এমনকী পিপিএফের ভিত্তিতে ঋণ নিতে গেলেও বিনিয়োগের পর তিন বছর অপেক্ষা করতে হয়। তাও ঋণ নেওয়ার ক্ষেত্রে নানারকম নিয়মকানুন আছে ।
পারিবারিক সঞ্চয়ের ক্ষেত্রে পিপিএফ বিশেষ সুবিধাজনক নয়। কারণ পিপিএফে জয়েন্ট অ্যাকাউন্ট হয় না। কোনও স্বামী ও স্ত্রী একসঙ্গে পিপিএফে বিনিয়োগ করতে পারেন না। অ্যাকাউন্টে একজন প্রাপ্তবয়স্কের সঙ্গে এক নাবালকের নাম থাকতে পারে। কিন্তু দুই প্রাপ্তবয়স্ক কখনও একটি পিপিএফ অ্যাকাউন্টের মালিক হতে পারেন না।
ইকুইটি বা মিউচুয়াল ফান্ডের মতো পিপিএফে অনাবাসী ভারতীয়রা বিনিয়োগ করতে পারেন না। ভারতে থাকাকালীন যদি কেউ পিপিএফে বিনিয়োগ করেন এবং পরে অনাবাসী হয়ে যান, তাহলে অ্যাকাউন্ট চালু থাকবে। কিন্তু এনআরআই হিসাবে কেউ পিপিএফে বিনিয়োগ করতে পারবেন না।
পিপিএফে বিনিয়োগের সর্বোচ্চ সীমা আছে। একটি আর্থিক বছরে কেউ দেড় লক্ষ টাকার বেশি বিনিয়োগ করতে পারেন না। এমন উর্দ্ধসীমা অন্যান্য সঞ্চয় প্রকল্পে নেই।
কোনও ব্যক্তি যদি চাকরি করেন এবং নির্দিষ্ট বিধি অনুযায়ী এমপ্লয়িজ প্রভিডেন্ড ফান্ডে টাকা দেন, তাহলে পিপিএফে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে আর আগের মতো আয়কর ছাড়ের সুবিধা পাবেন না।
Be the first to comment