একের পর এক শিশু মৃত্যু। সংক্রামক ডিপথেরিয়ায় আক্রান্ত হয়ে ফের তিনটি শিশুর মৃত্যু হল দিল্লির মহাঋষি বাল্মিকী হাসপাতালে। গত কয়েক মাসের মধ্যে এই রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে মোট ২৯ জনের।
গত মাসেই ডিপথেরিয়ার শিকার আট জন রোগী ভর্তি হয়েছিলেন মহাঋষি বাল্মিকীতে। হাসপাতাল সূত্রে খবর, এই রোগীদের মধ্যে সাত জন ছিলেন দিল্লির বাইরের বাসিন্দা। বর্তমানে মোট ২১৬ জন ভর্তি রয়েছেন হাসপাতালে। প্রত্যেকেই এই সংক্রামক রোগের শিকার।
দিল্লি পুরসভার (উত্তর) এক আধিকারিকের কথায়, রোগ যে শুধু দিল্লিতেই ছড়িয়েছে এমনটা নয়। গোটা দেশের বিভিন্ন জায়গাতেই এই রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন মানুষ। পুরসভার সাম্প্রতিক রিপোর্ট বলছে, হাসপাতালে যে ২১৬ জন ভর্তি রয়েছেন তাঁদের মধ্যে ২২ জন দিল্লির বাসিন্দা। বাকি ১৯৪ জন ভিন রাজ্যের। মৃত ২৯ জনের মধ্যে ২২ জন উত্তরপ্রদেশের ও ৬ জন দিল্লির।
ঘটনায় হাসপাতালের পরিষেবার দিকে আঙুল তুলেছেন স্থানীয় ও রোগীর পরিজনেরা। তাঁদের অভিযোগ, বর্তমানে ওই হাসপাতালে পাঁচটি চিকিৎসকের পদ খালি রয়েছে। পাশাপাশি, ডিপথেরিয়ার মোকাবিলায় উপযুক্ত সিরামের অভাবও রয়েছে হাসপাতালে। যদিও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তাঁদের দাবি, সংক্রামক রোগের চিকিৎসার জন্য ১৯৪টি সিরাম মজুত রয়েছে হাসপাতালে।
সরকারি সূত্রে খবর, মেডিক্যাল সুপারিন্টেডেন্ট ডঃ সুশীল গুপ্তকে বরখাস্ত করা হয়েছে। পুলিশ ও পুরসভার আধিকারিকদের দাবি, অন্যান্য বছরের তুলনায় এ বছর বরং মৃত্যুর হার অনেক কম। রোগের জন্য উপযুক্ত টিকাদান প্রক্রিয়ার অভাবই যে দায়ী, সেই প্রসঙ্গ তুলে কাঠগড়ায় তোলা হয়েছে উত্তরপ্রদেশ সরকারকে।
কী এই ডিপথেরিয়া?
ডিপথেরিয়া মানুষের শ্বসনতন্ত্রের একটি ব্যাকটেরিয়া ঘটিত রোগ। শিশুরাই সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হয় এই রোগে। করনিব্যাকটেরিয়াম ডিপথেরি (Corynebacterium diphtheriae) নামক ব্যাকটেরিয়া এই রোগের জন্য দায়ি। এই জীবাণু সাধারণত গলা এবং শ্বাসনালীকেই আক্রমণ করে। সংক্রমণ ক্রমশ ছড়িয়ে পড়ে চোখের কনজাংটিভা এবং জননাঙ্গও আক্রান্ত হয়।
ডিপথেরিয়ায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় টনসিল। সংক্রমণ ছড়ালে এর রঙ কালচে বা ধূসর রঙের হয়ে যায়। এই রোগ প্রতিরোধের জন্য চিকিৎসকরা টিকা নেওয়া বাধ্যতামূলক করেন।
Be the first to comment