উনিশের ভোট আসছে। তার আগে আপাত বিস্মৃতির অতল থেকে জাতীয় রাজনীতিতে একটু একটু করে মাথা তুলতে শুরু করে দিল রাম মন্দির বিতর্ক।
বুধবার সেই বিষয়ে অক্সিজেন যোগালেন খোদ আরএসএস প্রধান মোহন ভাগবত। এ দিন হরিদ্বারে গিয়েছিলেন তিনি। সেখানে তিনি পতঞ্জলি যোগপীঠের এক অনুষ্ঠানে অংশ নেন ভাগবত। তার পর তাঁর দীর্ঘ বক্তৃতায় তুলে আনেন অযোধ্যায় রাম মন্দির নির্মাণ প্রসঙ্গ। আরএসএস প্রধান বলেন, “রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ ও বিজেপি রামমন্দির নির্মাণে দায়বদ্ধ। কিন্তু কোনও কোনও কাজে একটু সময় লাগে।”
কেন এতদিনে রামমন্দির নির্মাণ হল না তা ব্যাখ্যা করে মোহন ভাগবত বলেন, “প্রত্যেক সরকারের কিছু সীমাবদ্ধতা থাকে। সীমাবদ্ধতার মধ্যেই তাকে কাজ করতে হয়। কিন্তু সাধুসন্তদের সেই সীমাবদ্ধতা নেই। তাঁরা ধর্ম, সমাজ ও দেশের স্বার্থে কাজ করেন।”
তাঁর কথায়, বিরোধীরাও অযোধ্যায় রামমন্দির নির্মাণে বাধা দেবে না। কারণ তারা জানে, দেশের বিপুল সংখ্যক মানুষ রামচন্দ্রের ভক্ত।
প্রসঙ্গত, মসজিদে নমাজ পড়া নিয়ে সম্প্রতি সুপ্রিম কোর্ট একটি মাইলফলক রায় ঘোষণা করেছে। সর্বোচ্চ আদালতের বিচারপতিরা জানিয়েছেন, নমাজ পড়ার জন্য মসজিদ অপরিহার্য নয়। মসজিদেই নমাজ পড়তে হবে এমন কথা ইসলাম ধর্মে কোথাও বলা নেই। সর্বোচ্চ আদালতের ওই রায়ের সঙ্গে অযোধ্যায় রাম মন্দির বিতর্কের সরাসরি কোনও সম্পর্ক নেই। কিন্তু এও ঠিক যে, ওই মামলার রায় ঘোষণার ফলে এ বার সুপ্রিম কোর্টে অযোধ্যায় রাম জন্মভূমি মামলার শুনানিতে আর কোনও বাধা রইল না। সম্ভবত অক্টোবর মাসের ২৯ তারিখ থেকে সুপ্রিম কোর্টে শুনানি শুরু হয়ে যাবে।
এই পরিস্থিতিতেই অযোধ্যায় রাম মন্দির নির্মাণের দাবি নিয়ে গেরুয়া শিবির নতুন উদ্যমে ঝাঁপিয়ে পড়েছে। এমনকি এই দাবিও কেউ কেউ করতে শুরু করেছে যে, যেহেতু নমাজ পড়ার জন্য মসজিদ অপরিহার্য নয়, তাই অযোধ্যায় মসজিদ নির্মাণের কোনও দরকার নেই। তার জন্য কাছে পিঠে কোথাও জমি দেওয়া যেতেই পারে।
পর্যবেক্ষকদের মতে, মোহন ভাগবত ভুল কথা বলেননি। কেন না কংগ্রেস বা অন্য রাজনৈতিক দলের পক্ষেও রাম মন্দির নির্মাণের বিরুদ্ধে কোনও মত প্রকাশ করা ঝুঁকিপূর্ণ। এমনিতেই সংখ্যাগুরুর ভাবাবেগকে গুরুত্ব দিতে রাহুল গান্ধী ইদানিং মন্দিরে মন্দিরে ঘোরা শুরু করেছেন। তার পর কংগ্রেস রাম মন্দির নির্মাণের বিরোধিতা করবে বলে মনে করা হচ্ছে না।
রাম মন্দির নির্মাণের দাবিতে এ দিন হাওয়া দেন রামদেবও। তিনি বলেন, মন্ত্রী ও ধনী ব্যক্তিদের মনে রাখা উচিত, সাধুরা তাঁদের চেয়ে অনেক বেশি কাজ করতে পারেন। তাঁরা যেখানে ব্যর্থ, সেখানে সাধুরা সফল হন।
Be the first to comment