এ বার জেলের ভিতর গাঁজা পাচারের অভিযোগ উঠল এক ওয়ার্ডেনের বিরুদ্ধে। এই ঘটনায় চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে জলপাইগুড়ি কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারে। ৭২ পুরিয়া গাঁজা সমেত গ্রেফতার করা হয়েছে ওই ওয়ার্ডেন নিমাই দেবকে।
কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারের সুপার ইনচার্জ রাজীবরঞ্জন জানান, তাঁর কাছে গোপন খবর ছিল, এ দিন বিকেলে কড়া ডোজের ঘুমের ওষুধ পাচার করবে ওই ওয়ার্ডেন। সেই মতো নজর রাখা হচ্ছিল তাঁর উপর। তাঁকে তল্লাশি করার আগে জেলের অন্য কয়েকজন কর্মীকে তল্লাশি করেন নিরাপত্তা রক্ষীরা। রাজীবরঞ্জন বলেন, “অন্যদের যখন তল্লাশি করা হচ্ছে তখনই নিমাই অন্য একটি ঘরে সরে যান। আমি তাঁর পিছন পিছন গিয়ে দেখি তিনি একটি মোবাইল ফোন রাখছেন। সেটা কোথা থেকে এল জানতে চাইলে তিনি কোনও সদুত্তর দিতে পারেননি। এরপরেই তাঁকে তল্লাশি করে তাঁর জুতোর মধ্যে থেকে ৭২ পুরিয়া গাঁজার প্যাকেট উদ্ধার হয়।”
এরপরেই ওই ওয়ার্ডেনের বিরুদ্ধে জলপাইগুড়ি কোতোয়ালি থানায় অভিযোগ দায়ের হয়।
রাজ্যের বিভিন্ন জেলে বন্দিদের কাছে মোবাইল ফোন, নেশার জিনিস এ সব পৌঁছে যাওয়া এখন জলভাত হয়ে গেছে। প্রায় প্রতিদিনই কোনও না কোনও জেলে তল্লাশি চালিয়ে বন্দিদের কাছ থেকে উদ্ধার হচ্ছে মোবাইল ফোন। এর মাধ্যমে জেলে বসেই যে তারা অপরাধ সাম্রাজ্যে নিজেদের নিয়ন্ত্রণ কায়েম রাখছে, উঠে এসেছে সে তথ্যও। তাই বিষয়টি নিয়ে রীতিমতো চিন্তিত কারা দফতর। অনেক ক্ষেত্রেই যে জেলের এক শ্রেণির কর্মচারির অসাধু মনোভাবের জন্যই তা সম্ভব হচ্ছে, সেপ্টেম্বর মাসের মাঝামাঝি এই জলপাইগুড়ি কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারে পরিদর্শনে এসে তা স্বীকার করে নিয়েছিলেন ডিজি(কারা) অরুণকুমার গুপ্তা। এই প্রবনতা রুখতে রাজ্য নতুন আইন আনছে বলেও জানিয়েছিলেন তিনি। এই আইনে কোনও বন্দির কাছে মোবাইল মিললে অতিরিক্ত আরও তিনবছর সাজা খাটতে হবে। রাজ্য বিধানসভায় পাশ হওয়ার পরে সেই আইন এখন রাজ্যপালের সম্মতির অপেক্ষায় বলে জানিয়েছিলেন ডিজি।
আজ জুতোয় করে জেলের ভিতর ওয়ার্ডেনের গাঁজার পুরিয়া পাচারের চেষ্টায় তাই নতুন করে কপালে ভাঁজ কারাকর্তাদের।
Be the first to comment