অনুপ্রবেশকারীদের নিজভূমে পাঠানো হবেই, কেউ আটকাতে পারবে না; হুঁশিয়ারি অমিত শাহের

Spread the love
দেশের যে প্রান্তেই অবৈধ অনুপ্রবেশকারীরা ঘাঁটি গেড়ে থাকুক না কেন, নিজভূমে তাদের ফেরৎ পাঠানো হবেই। কেউ আটকাতে পারবে না। মোদী সরকার তার প্রক্রিয়াও শুরু করে দিয়েছে। রাজস্থানের সিকারে একটি সমাবেশ থেকে এমনই হুঁশিয়ারি দিলেন বিজেপি সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ।
অসমের শিলচরের কাছাড় কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারে গত ৬  বছর ধরে বন্দি ছিলেন ৭ জন রোহিঙ্গা। বৃহস্পতিবার সুপ্রিমকোর্ট জানিয়ে দেয়, তাদের মায়ানমারে ফিরে যেতে হবে। সন্ধে বেলা অসম পুলিশ মায়ানমার প্রশাসনের কাছে ওই ৭ জনকে হস্তান্তরও করে। রাজনৈতিক মহলের মতে, সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পর অনুপ্রবেশকারীদের ফেরানো ইস্যুতে বিজেপি খানিকটা অক্সিজেন পেয়েছে।
প্রসঙ্গত, অসমের জাতীয় নাগরিক পঞ্জিকরণ (এনআরসি) নিয়ে তোলপাড় হয়েছে জাতীয় রাজনীতি। বাংলার শাসক দল এনআরসি ইস্যুতে তোলপাড় করেছে সংসদের অধিবেশন। এমনকী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় টিমও পাঠিয়েছিলেন শিলচরে। কিন্তু অসম প্রশাসন ঢুকতে না দেওয়ায় ফিরহাদ হাকিম, সুখেন্দুশেখর রায়, কাকলি ঘোষ দস্তিদার, মহুয়া মৈত্র-সহ তৃণমূলের প্রতিনিধি দলকে সারারাত বিমানবন্দরে কাটিয়ে পরের দিন সকালের বিমান ধরেই কলকাতা ফিরে আসতে হয়। ওই সময় দিল্লিতে গিয়ে গৃহমন্ত্রী রাজনাথ সিং-এর সঙ্গে দেখাও করেন মমতা। কিন্তু এত কিছুর পরেও, বিরোধীদের শত সমালোচনা সত্ত্বেও বিজেপি যে অনুপ্রবেশ ইস্যুতে কড়া তা বৃহস্পতিবার স্পষ্ট করে দেন শাহ।
শহীদ সেনা জওয়ানদের স্ত্রীদের নিয়ে একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিতে মরু রাজ্যে গেছিলেন অমিত শাহ। সেই সভা থেকে কংগ্রেসের বিরুদ্ধেও তোপ দাগেন বিজেপি সভাপতি। তাঁর কথায়, “মনমোহন সিং-এর সরকার পাকিস্তানকে কোনও জবাবই দিতে পারেনি। শুধু অনুনয়-বিনয় চালিয়েছে। আর সীমান্তে দাঁড়ানো সেনাদের মোদী সরকারের খোলাখুলি নির্দেশ, পাকিস্তান বুলেট ছুড়লে জবাবে যেন ভারতীয় সেনারা বোমা ছোড়ে।” তাঁর দাবি, “বিজেপি সরকারে থাকুক আর না থাকুক, আমরা সেনা-জওয়ানসের পক্ষে।”
অবৈধ অনুপ্রবেশকারী ইস্যুতে শাহের আরও বক্তব্য, “বেআইনি ভাবে যারা ভারতে ঢুকে পড়েছে, ভোটার তালিকা থেকে তাদের সবার নাম বাদ যাবে। কাউকে রেয়াত করা হবে না।”
ভারতে বসবাসকারী ৪০,০০০ রোহিঙ্গাকে দেশে ফেরানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে মোদী সরকার। সেই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে সুপ্রিম কোর্টে দায়ের হয়েছে জনস্বার্থ মামলা। ওই মামলার শুনানিতে শীর্ষ আদালতে কেন্দ্রীয় সরকার জানিয়েছে, দেশের নিরাপত্তার স্বার্থেই রোহিঙ্গাদের মায়ানমারে পাঠানোর সিদ্ধান্ত। এর মধ্যে সাত রোহিঙ্গাকে বিতারণ আটকাতে শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হন আইনজীবী প্রশান্ত ভূষণ। তাঁর বক্তব্য, মায়ানমারে ১০,০০০ মানুষেকে গণহত্যা করা হয়েছে। ক্ষতি হয়েছে প্রচুর সম্পত্তির। ভারত ও বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছেন রোহিঙ্গারা। তাঁরা বেআইনি অনুপ্রবেশকারী নন, বরং শরণার্থী। তিনি আরও বলেন,”ওই সাত রোহিঙ্গার সঙ্গে কথা বলার জন্য রাষ্ট্রসঙ্ঘের প্রতিনিধিকে নির্দেশ দিক আদালত। বিষয়টি সাতটি জীবনের। বিষিয়টি মানবাধিকারের। রোহিঙ্গাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করুক আদালত”। কিন্তু বৃহস্পতিবার শীর্ষ আদালতের প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈয়ের নেতৃত্বাধীন তিন বিচারপতির বেঞ্চে পর্যালোচনা করে জানিয়ে দেয়, ওই সাতজন বেআইনিভাবে অনুপ্রবেশ করেছে। এর মধ্যে ভারত-মায়ানমার দুই দেশের বিদেশমন্ত্রক পারস্পরিক আলোচনা করে। মায়ানমার সরকার ওই সাতজনকে নিজেদের দেশে ফিরিয়ে নিতে সম্মত হয়। সন্ধের মধ্যেই মণিপুরে ভারত-মায়ানমার সীমান্তে হস্তান্তরের কাজ সেরে ফেলে অসম পুলিশ।

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*