মাঝেরহাট সেতু বিপর্যয়ে আরও একটি মৃত্যু! গত এক মাসেরও বেশি শয্যাশায়ী থেকে বৃহস্পতিবার বিকেলে মৃত্যু হল প্রৌঢ়ের।
নাম জামাল হানিফ। বয়স বছর পঞ্চান্ন। মাঝেরহাটের সেতু বিপর্যয়ের দিন ইনিও ছিলেন ঘটনাস্থলে। হুড়মুড়িয়ে যখন আস্ত সেতুটা ভেঙে পড়ে পাহারের মতো, রাস্তায় পড়ে গিয়ে হাড় ভেঙে যায় বছর জামালের। গুরুতর জখম অবস্থায় তাঁকে ভর্তি করা হয় সিএমআরআই হাসপাতালে। কিছুদিন পরেই ছেড়ে দেওয়া তাঁকে। তবে, জামালের পরিবার জানিয়েছেন, হাসপাতাল থেকে ফেরার সময় ফের সংক্রমণ হয় জামালের। বাড়িতেই চিকিৎসা চলছিল তাঁর। গতকাল বিকেলের দিকে মারা যান তিনি।
মৃত্যুর আগের দিন পর্যন্ত সেতু ভাঙার আতঙ্ক তাড়া করে বেরিয়েছে তাঁকে। নিজের মুখেই পরিবারকে জানিয়েছেন, তাঁর সেদিনের ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতার কথা। নিজের বাইকে চেপে মাঝেরহাট পেরিয়ে বজবজ যাচ্ছিলেন জামাল। আচমকাই দুলুনি। জামাল দেখেন ধীরে ধীরে খসে পড়ছে কংক্রিটের চাঙড়। ভেঙে পড়ছে সেতুর একাংশ। সেই সঙ্গে মানুষজনের পরিত্রাহী চিৎকার। ব্রিজের মাঝ বরাবর যাঁরা চলে গেছেন, তাঁরা যেন পুতুলের মতো ভিতরে ঢুকে গেলেন। আতঙ্ক, চেঁচামেচি, আর্তনাদে ভরে উঠেছে চারদিকের আকাশ-বাতাস।
সেতুর উপর তখন সবে উঠেছিলেন জামাল। দুলুনিতেই বাইক থেকে ছিটকে পড়ে গেছিলেন তিনি। কয়েকটা হাড় ভেঙেছিল। তবে, আল্লাকে ধন্যবাদ জানিয়েছিলেন যে প্রাণে বেঁচে গেছেন। আবার বাড়ি ফিরে পরিবারের মুখ দেখতে পাবেন। হাসপাতালে চিকিৎসার পর বাড়িও ফিরেছিলেন জামাল। কিন্তু, শেষ পর্যন্ত সংক্রমণে বাড়িতেই মৃত্যু হয় তাঁর।
একের পর এক মৃত্যু। কোনওটা ঘটনার দিন, আবার কোনওটা ঘটনার পরে। কলেজ স্ট্রিট থেকে বই কিনে ফেরার পথে মাঝেরহাট সেতু ভেঙে মৃত্যু হয়েছিল বেহালার শীলপাড়ার সৌমেন বাগের। সেতুর একাংশ হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ে মাথায় চোট পেয়েছিলেন সৌমেন। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয়েছিল তাঁর। আরও মানুষ আটকে থাকার আশঙ্কায় তার পরেই চলেছিল তল্লাশি অভিযান। নামানো হয়েছিল স্নিফার ডগ। উদ্ধার হয়েছিল ঠিকা কর্মী প্রণব দে ও গৌতম মণ্ডলের দেহ।
Be the first to comment