আদালত চত্বরে পুলিশকে বোমা মেরে আসামি পালানোর ঘটনায় বৃহস্পতিবার দিনভর সরগরম ছিল কাঁথি। মোটরবাইক বিভ্রাটে পালানোর একঘণ্টার মধ্যে ধরা পড়ে যায়, কুখ্যাত অপরাধী কর্ণ বেরা। কিন্তু এখনও বেপাত্তা দলের পান্ডা শেখ মুন্না ও তারই অপর সহযোগী সুরজিৎ গুড়িয়া। পুলিশের অভিযোগ, গতকাল রাত থেকেই বিভিন্ন নম্বর থেকে ফোন করে তাদের হুমকি দিচ্ছে শেখ মুন্না। কর্ণকে না ছাড়া হলে তার পরিনাম হবে ভয়ঙ্কর।
তবে এতে খুব একটা বিস্মিত নয় পুলিশ। কারণ ২৪ ঘণ্টায় কর্ণের পাশাপাশি শেখ মুন্নার ট্র্যাক রেকর্ডও ঘেঁটে ফেলেছেন তাঁরা। এবং সেই রেকর্ড অনুযায়ী অপরাধের গ্রাফে কর্ণর থেকে অনেকটাই এগিয়ে শেখ মুন্না। ইতিমধ্যেই লঙ্কার গুঁড়ো ছিটিয়ে, সেলের জানালার রড কেটে বেশ কয়েকবার জেল ভাঙা হয়ে গিয়েছে তার। আরেকটু পিছনে হেঁটে তার সম্পর্কে যে তথ্য পুলিশ পেয়েছে, তাতে দেখা যাচ্ছে, ২০০০ সালে কাঁথিতে গৃহস্থদের চিঠি লিখে ডাকাতি করতে যেত এই শেখ মুন্না। তার কথামতো বাড়িতে টাকা ও গয়না না রাখায় একবার এক ব্যক্তিকে গুলি করে খুন করেছিল সে। এছাড়াও একাধিক খুন ও ডাকাতির মামলা রয়েছে শেখ মুন্নার বিরুদ্ধে।
বহু চেষ্টার পরে কলকাতার এক ডেরা থেকে বছর দুয়েক আগে গ্রেফতার করা হয়েছিল শেখ মুন্নাকে। তারপর থেকেই মেদিনীপুর সেন্ট্রাল জেলে ছিল সে। এমন এক আসামিকে আদালতে তোলার সময় কেন পর্যাপ্ত নিরাপত্তা নেওয়া হল না তা ভাবাচ্ছে পুলিশকে। প্রশ্ন উঠছে, ওই দুষ্কৃতীদের কবে কখন কোথায় নেওয়া হচ্ছে, তার খবর আগাম বাইরে থাকা মুন্না কর্ণদের সাগরেদদের কাছে পৌঁছচ্ছে কি করে? শেখ মুন্না ও তার সহযোগী সুরজিতের খোঁজে জোরদার তল্লাশির পাশাপাশি এই প্রশ্নেরও জবাব হাতরাচ্ছে পুলিশ।
গতকাল কাঁথি মহকুমা আদালত চত্বর থেকে পোস্ট অফিস মোড় হয়ে তাদের পালানোর রূদ্ধশ্বাস ভিডিও ধরা পড়েছিল পোস্ট অফিস মোড়ে থাকা জেলা পুলিশের সিসিটিভি ক্যামেরায়। তাতেই দেখা গিয়েছিল প্রকাশ্য রাস্তায় ভরদুপুরে বোমা বন্দুক নিয়ে শেখ মুন্না, কর্ণ বেরা ও সুরজিৎ বেরার দাপাদাপি।
কর্ণ ধরা পড়লেও এখনও অধরা শেখ মুন্না ও সুরজিৎ। তাই আতঙ্ক কাটছে না কাঁথির বাসিন্দাদের। আজ কড়া নিরাপত্তায় কাঁথি আদালতে তোলা হয় কর্ণকে। এসিজেম জগৎজ্যোতি ভট্টাচার্য কর্ণকে টিআই প্যারেডে হাজির করানোর নির্দেশ দেন।
Be the first to comment