আন্তর্জাতিক সফরে গিয়ে রহস্যজনক ভাবে নিখোঁজ হলেন আন্তর্জাতিক তদন্তকারী সংস্থা ইন্টারপোলের প্রেসিডেন্ট মেং হংওয়েই। সেপ্টেম্বরের শেষে ফ্রান্সে সংস্থার সদর দফতর থেকে চিন সফরের জন্য রওনা দিয়েছিলেন তিনি। ফ্রান্সের স্বরাষ্ট্র দফতর জানিয়েছে, মেং চিনে পৌঁছেছিলেন কিনা জানা নেই, তবে গত এক সপ্তাহ ধরে তাঁর কোনও খোঁজ মিলছে না।
ফ্রান্সের লিঁও শহরে রয়েছে ইন্টারপোলের সদর দফতর। আন্তর্জাতিক এই তদন্তকারী সংস্থার এক শীর্ষ আধিকারিক জানিয়েছেন, গত ২৫ সেপ্টেম্বর চিনের উদ্দেশ্যে রওনা দেন মেং। তার পর থেকেই কার্যত তাঁর কোনও হদিশ মিলছিল না। যোগাযোগও বন্ধ করে দিয়েছিলেন তিনি। সম্প্রতি প্রেসিডেন্টের স্ত্রী অভিযোগ করেন, সফরে যাওয়ার পর থেকেই তিনি তাঁর স্বামীর সঙ্গে কোনও যোগাযোগ করতে পারছেন না। এমনকি গত দশ দিন ধরে তাঁর কাছে নানা রকম হুমকি আসছে। কখনও ফোনে আবার কখনও সোশ্যাল মিডিয়া মারফৎ তাঁকে হুমকি দেওয়া হচ্ছে।
২০১৬ সালের ১০ নভেম্বর ইন্টারপোলের প্রেসিডেন্ডের পদ পান মেং হংওয়েই। এর আগে চিনের স্টেট ওসিয়ানিক অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের ডেপুটি ডিরেক্টর ছিলেন তিনি। সংস্থার প্রধানের নিখোঁজ হওয়ার ঘটনার তদন্তের সঙ্গে যুক্ত একটি সূত্র জানিয়েছে, চিনা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে নানা বিষয়ে মতবিরোধ ছিল প্রেসিডেন্টের। সেই কারণে তাঁকে আটক করা হয়ে থাকতে পারে। ওই সূত্রের মতে, সাম্প্রতিক কালে চিনের অনেক উচ্চপদস্থ কর্তাব্যক্তিরা নিখোঁজ হয়েছেন যার কোনও কারণ খুঁজে পাওয়া যায়নি। সেরকম কিছু হওয়ার সম্ভাবনা একেবারে উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না।
হংকংয়ের দৈনিক সাউথ মর্নিং পোস্ট জানিয়েছে, ইন্টারপোল কর্তাকে চিনে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। সাউথ মর্নিং পোস্টকে একদিন দিয়ে চিনের সরকারি সংবাদপত্রও বলা চলে। তাই এই খবরে চিন্তা বেড়েছে ইন্টারপোলের তদন্তকারীদের। মেং শুধু মাত্র ইন্টারপোলের প্রধানই নন, এর আগে তিনি চিনের নিরাপত্তা বিষয়ক দফতরের ভাইস প্রেসিডেন্টও ছিলেন। হঠাৎ কী কারণে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটকে রাখা হয়েছে সেই বিষয়ে যথেষ্ট ধোঁয়াশা রয়েছে।
ফ্রান্সের তদন্তকারী সংস্থা সূত্রে খবর, সব রকম ভাবে মেং-কে খোঁজার চেষ্টা চলছে। তাঁর স্ত্রীকেও নিরাপত্তা দেওয়া হয়েছে। এই বিষয়ে চিনের সঙ্গেও কথাবার্তা চালানো হচ্ছে। তবে, চিনের তরফ থেকে ইন্টারপোলের প্রেসিডেন্টের নিখোঁজ হওয়ার ব্যাপারে এখনও কোনও সদুত্তর পাওয়া যায়নি। এমনকি তিনি চিনে পৌঁছেছিলেন কিনা সে ব্যাপারেও মুখে কুলুপ এঁটেছে চিন।
Be the first to comment