বীরভূমের খয়রাশোলের তৃণমূল ব্লক সভাপতি দীপক ঘোষের মৃত্যু হলো সোমবার দুপুরে। দুর্গাপুর মিশন হাসপাতালের তরফে জানানো হয়েছে, এ দিন দুপুর ১টা ৯মিনিটে মৃত্যু হয় তাঁর।
আগেরবার গুলি লেগেছিল চোয়ালে। সে বার বেঁচে গিয়েছিলেন। কিন্তু এ বার মৃত্যুর কোলে ঢোলে পড়লেন খয়রাশোলের দাপুটে তৃণমূল নেতা দীপক ঘোষ। রবিবার দুপুরে মোটর সাইকেল নিয়ে বাড়ি ফেরার সময় তাঁর পথ আটকায় দুষ্কৃতীরা। পয়েন্ট ব্ল্যাঙ্ক রেঞ্জ থেকে চালানো হয় তিন রাউন্ড গুলি। রক্তাক্ত অবস্থায় মাটিতে লুটিয়ে পড়লে মৃত্যু নিশ্চিত করতে মারা হয় ধারালো অস্ত্রের কোপও। আশঙ্কাজনক অবস্থায় এলাকার বাসিন্দারা তাঁকে উদ্ধার করে নিয়ে যায় স্থানীয় নাকড়াকোন্দা প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে। সেখান থেকে অত্যন্ত সঙ্কটজনক অবস্থায় দীপক ঘোষকে নিয়ে আসা হয় দুর্গাপুর মিশন হাসপাতালে। চিকিৎসকরা জানান তিনটি গুলি লাগে তাঁর। অস্ত্রোপচার করে বের করা হয় গুলি। কিন্তু শেষ রক্ষা হলো না।
গতকাল দুপুরে দীপক ঘোষের উপর হামলার পরই তাঁকে নিজের ‘ডান হাত’ আখ্যা দিয়ে তৃণমূলের বীরভূম জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল বলেছিলেন, ‘দীপক ভাল সংগঠক। তাই ওকে বারবার টার্গেট করা হচ্ছে।’ বছরখানেক আগেও দীপক ঘোষের উপর হামলা হয়েছিল। সে বারও গুলি করা হয় তাঁকে। কিন্তু কোনও রকমে প্রাণ ফিরে পান তিনি।
ব্লক সভাপতির উপর হামলার ঘটনায় রবিবার রাতভর খয়রাশোলে তল্লাশি চালায় পুলিশ। আটক করা হয় চারজনকে। তৃণমূলের অভিযোগ বিজেপি আশ্রিত দুষ্কৃতীরাই দীপক ঘোষের উপর হামলার মূলে। পাল্টা বিজেপি-র দাবি, বেআইনি কয়লা খাদানের কাঁচা টাকার হিস্সা নিয়েই শাসক দলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের ফল এই হামলা। বিজেপি নেতারা বলেন, খয়রাশোলে শাসক দলের গোষ্ঠী সংঘর্ষ নতুন ঘটনা নয়। ২০১৩ সালে এই ব্লকেই খুন হয়েছিলেন দীপক ঘোষের দাদা অশোক ঘোষ। ঠিক তার পরের বছরই অশোক ঘোষের বিরুদ্ধ গোষ্ঠীর নেতা হিসেবে পরিচিত অশোক মুখোপাধ্যায় খুন হন। ফের খয়রাশোলে খুন হলেন শাসক দলের নেতা।
এমনিতেই রাজনৈতিক সংঘর্ষ সারা বছর লেগে থাকে এই জেলায়। এর মধ্যেই একই দিনে জেলার দুটি ব্লকে দুটি ঘটনা ঘটে যায়। প্রথমে খয়রাশোলে, দীপক ঘোষের উপর হামলা, এবং সন্ধেবেলা লাভপুরে বিজেপিকর্মীর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার। পর্যবেক্ষকদের মতে, এ দিন দীপকবাবুর মৃত্যু রাজনৈতিক উত্তেজনার পারদকে আরও কয়েক গুণ বাড়বে।
Be the first to comment