অমৃতসরের ট্রেন দুর্ঘটনায় পঞ্জাব সরকার ও রেলের উপরই যাবতীয় দায় চাপিয়েছে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন। অন্য়দিকে, রাবণ দহন অনুষ্ঠানের অন্যতম আয়েজন হিসেবে নাম জড়িয়েছে পূর্ব অমৃতসরের বিধায়ক ও রাজ্যের মন্ত্রী নভজ্যোৎ সিং সিধুর স্ত্রী নভজ্যোৎ কৌরেরও। ঘটনা সম্পর্কে এতদিন মুখে কুলুপ আঁটলেও এ বার মিডিয়ার সামনে মুখ খুলেছেন সিধু। জানিয়েছেন, মর্মান্তিক এই দুর্ঘটনায় নিহতদের সন্তানদের দত্তক নিতে চান তিনি। পাশাপাশি, আহতদের পরিবারের পাশেও দাঁড়াবেন তিনি।
দশেরা অনুষ্ঠানের দিন রাজ্য়ে ছিলেন না সিধু। ফলে এলাকার দশেরা অনুষ্ঠানগুলিতে জনসংযোগ রক্ষার দায় এসে পড়ে স্ত্রী নভজ্যোৎ কৌরের উপরে। অমৃতসরে জোড়া ফটকের কাছে ধোবিঘাট মাঠে রাবণ দহনের আয়োজন করেছিলেন স্থানীয় কংগ্রেস কাউন্সিলর সৌরভ মিঠু মদন। নভজ্যোৎ পরিবারের ঘনিষ্ঠ হওয়ার সুবাদে রাবণের মূর্তি পোড়ানোর অনুমতি অনায়াসে পুলিশের কাছ থেকে জোগাড় করে নেন। যদিও প্রশাসনের একাংশের দাবি, অত ছোট মাঠে রাবণ পোড়ানোর অনুমতি দেওয়া হয় না।
অভিযোগ ওঠে, ট্রেন দুর্ঘটনার সময়ে দশেরা মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন সিধুর স্ত্রী নভজ্যোৎ। স্থানীয়দের দাবি, দুর্ঘটনার কথা জানতে পেরেই তিনি মঞ্চ ছেড়ে চলে যান। যদিও কৌরের দাবি ছিল, তিনি ঘটনাস্থল ছেড়ে চলে আসার পরে মোবাইলে দুর্ঘটনার খবর পান এবং সঙ্গে সঙ্গেই আহতদের দেখতে স্থানীয় হাসপাতালে ছুটে যান। এই ঘটনার পর স্বভাবতই সিধু তথা শাসক কংগ্রেস শিবিরের বিরুদ্ধে মাঠে নেমে পড়ে শিরোমণি অকালি দল এবং বিজেপি নেতৃত্ব।
পাশাপাশি, রাজ্য় সরকারকেও কাঠগড়ায় তোলে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন। তাদের তরফে জানানো হয়, ‘‘দশেরার অনুষ্ঠানের আয়োজন সঠিক ভাবে করতে পারেননি আয়োজক ও স্থানীয়রা। ভিড় সামলাতে হিমশিম খেয়েছেন তাঁরা। বোঝাই যাচ্ছে নিরাপত্তার বিষয়টা গুরুত্ব দিয়ে দেখা হয় নি।’’ আগামী চার সপ্তাহের মধ্যে রাজ্য়ের মুখ্য় সচিব ও রেল বোর্ডের চেয়ারম্যানের থেকে রিপোর্ট চেয়েছে কমিশন।
সোমবার পঞ্জাব কংগ্রেসের সভাপতি সুনীল জাখারার সঙ্গে একটি সাংবাদিক বৈঠকে এসে সিধু বলেছেন, ‘‘দুর্ঘটনায় মৃতদের সন্তানদের সব দায়িত্ব নিচ্ছি। তাদের পড়াশোনা শেখানো ও জীবনে প্রতিষ্ঠিত করার সব দায়দায়িত্ব আমার। তা ছাড়াও দুর্ঘটনার কারণে যাঁরা শারীরিকভাবে অক্ষম হয়ে পড়েছেন তাঁদের পরিবারের দায়িত্বও আমি নেব।’’
আহতদের দেখতে গতকাল স্থানীয় হাসপাতাল ও গুরু নানক দেব হাসপাতালেও গিয়েছিলেন সিধু। প্রথম পর্যায়ে আহত ২১টি পরিবারকে মাথা পিছু পাঁচ লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথা ঘোষণাও করেছে পঞ্জাব সরকার।
Be the first to comment