কোজাগরী লক্ষীপুজোর দিন বৃদ্ধাশ্রমই নতুন ঠিকানা হলো প্রাক্তন শিক্ষিকা শেফালী মজুমদারের

Spread the love
মারা গিয়েছেন স্বামী। থেকেও নেই ছেলে। আন্দুল স্টেশনে গত কয়েক দিন ধরে পড়ে ছিলেন সহায় সম্বলহীন অসুস্থ বৃদ্ধা। সাঁকরাইল থানার সাহায্য নিয়ে কালনাৱ একটি বৃদ্ধাশ্রমের আবাসিকরা উদ্ধার করলেন তাঁকে। বুধবার কোজাগরী লক্ষীপুজোর দিন সেই বৃদ্ধাশ্রমেই নতুন ঠিকানা হল হাওড়ার পানিয়ারা গার্লস হাইস্কুলের প্রাক্তন শিক্ষিকা শেফালী মজুমদারের।
বৃদ্ধা জানান, এক সময় স্বামী ও ছেলের সঙ্গে হাওড়ার শিবপুরে নিজের বাড়িতেই থাকতেন পেশায় হাইস্কুলের শিক্ষিকা শেফালীদেবী। ছোট পরিবার নিয়ে সুখেই ছিলেন। দুর্ঘটনায় জখম একমাত্র ছেলে সুবীর মজুমদারকে বাঁচাতে অবসরের পর পাওয়া এককালীন টাকার পুরোটাই খরচ হয়ে যায়। পরে শিবপুরে নিজের বাড়িও বিক্রি করতে বাধ্য হন। ১৯৯৭ সালে স্বামী বিজয় রতন মজুমদারের মৃত্যুর পর ছেলে বৌমা কে নিয়ে আন্দুলে একটি ভাড়া বাড়িতে বসবাস শুরু করেন। কোনওমতে কাটছিল দিন।
তাঁর অভিযোগ, হঠাৎই তাঁকে ছেড়ে চলে যায় ছেলে বৌমা। একমুঠো ভাতের জন্যে ৬৮ বছর বয়সেও বেরোতে হত কাজের খোঁজে।  কিন্তু কাজ জুটতো না।  এক বন্ধু কিছু দিনের জন্যে পাশে দাঁড়িয়েছিলেন। দিনকয়েক আগে রাস্তায় বেরিয়ে সাইকেলের ধাক্কায় আহত হয়েছিলেন। সেই থেকেই পড়ে ছিলেন আন্দুল স্টেশনে।
কালনার বেলাশেষে হোমে থাকেন তাঁরই মতো সংসারে ব্রাত্য আরও কিছু মানুষ। খবরের কাগজের পাতায় শেফালীদেবীর খবর জানতে পারেন তাঁরা। হোমটি চালান প্রণব রায় নামে এক সহৃদয় ব্যক্তি। আবাসিকরা তাঁর কাছে ওই বৃদ্ধার অসহায়তার কথা জানালে তিনিই স্থানীয় থানার সঙ্গে যোগাযোগ করে হোমে নিয়ে আসেন শেফালিদেবীকে। তার আগে কালনা মহকুমা হাসপাতালে চিকিৎসাও করানো হয় তাঁর।
মাথায় উপর ছাদ পেয়েছেন। দু বেলার অন্নের সংস্থানও হয়েছে। তবুও মন খারাপ। কতদিন দেখা হয়নি ছেলে-বৌমার মুখ। এই উৎসবের দিনে পুরনো কথা মনে আসছে আরও। তবুও ছেলের কোনও দোষ দেখেন না তিনি। দোষ পুরোটাই কপালের। কু মাতা যে কদাপি নয়।

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*