প্রাণে বাঁচলেন না সুন্দরবনের মৎস্যজীবী মধুসূদন মণ্ডল; পড়ুন বিস্তারিত!

Spread the love
তুমুল অসম লড়াইয়ের শেষে বাঘের মুখ থেকে ছাড়িয়ে আনা গিয়েছিল তাঁকে। কিন্তু শেষ রক্ষা হল না। প্রাণে বাঁচলেন না সুন্দরবনের মৎস্যজীবী মধুসূদন মণ্ডল।
বুধবার সকালে সুন্দরবন ব্যাঘ্রপ্রকল্পের  পীরখালীর জঙ্গল সংলগ্ন লেবুখালী নদীর এই দুর্ঘটনায় শোকস্তব্ধ মধুসূদনের দুই সঙ্গী সুপদ বরকন্দাজ ও বিমল মন্ডল। তাঁরা তিন জন একসঙ্গে কাঁকড়া ও মাছ ধরতে গিয়েছিলেন। তখনই বাঘের কবলে পড়েন মধুসূদন। বাকি দুই বন্ধু রীতিমতো প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে বাঘের মুখ থেকে মধুসূদনকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলেও, বাঁচাতে পারলেন না তাঁকে।
বুধবার দুপুর। কোজাগরী লক্ষ্মীপূর্ণিমার দিন। তাই নদীতে জোয়ারের জল ঢুকেছে অনেক বেশি। নদীতে বেড়েছে প্রচুর পার্শে, চিংড়ি, কামড়া। নদীর মোহনা থেকে খাঁড়ির মধ্যে এসে নৌকার বৈঠা নামিয়ে পচা মাছ দিয়ে বানানো চার ফেলতে শুরু করেন মধুসূজন, সুপদ ও বিমল। সোমবারই তিন জন একসঙ্গে গোসাবার সত্যনারায়ণপুর গ্রাম থেকে কাঁকড়া ধরতে বেরিয়েছিলেন।
বুধবার সকালে সুপদ ও বিমল নৌকার মধ্যে বসেই মাছ ধরছিলেন। কিছু ভিতরে, অন্য একটি ছোট ডিঙি নৌকোয় ছিলেন মধুসূদন। হঠাৎই ঝপাত করে শব্দ, দুলে ওঠে নৌকা। মুহূর্তে বিপদ বুঝতে পারেন সুপদ ও বিমল। মধুসূদনের ডিঙিতে আক্রমণ করেছে বাঘ! তাঁরা পৌঁছনোর আগেই ক্ষতবিক্ষত হয়ে যান মধুসূদন। তবুও প্রাণের ভয় তুচ্ছ করে হাতে লাঠির ভরসায় ঝাঁপিয়ে পড়েন দুই সঙ্গী। নিজেরাও আহত হন, কিন্তু অসম লড়াইয়ে হারিয়ে দেন বাঘবাবাজিকে।
গোসাবা হাসপাতালে বসে ঘটনার বর্ণনা দিতে দিতে তখনও শিউরে উঠছেন সুপদ ও বিমল। আতঙ্কের ছাপ স্পষ্ট কণ্ঠস্বরে। বাঘের মুখ থেকে বাঁচিয়ে নৌকায় করে তখনই গোসাবা হাসপাতালে নিয়েও আসেন তাঁরা মধুসূদনকে। কিন্তু পৌঁছনোর পরে তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসকেরা। জানান, আঁচড়-কামড়ে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ হয় মধুসূদনের। তাতেই মারা গিয়েছেন তিনি। গ্রামে ফিরে এসে মধুসূদনের দুই সঙ্গী ব্যাঘ্রপ্রকল্প অফিসে এসে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*