এতদিন চুপ ছিলাম, এ বার মুখ খুলেছি। দশ বছর আগে আমার অভিযোগকে কেউ গুরুত্ব দেননি, কিন্তু এ বার সোশ্যাল মিডিয়া অনেক শক্তিশালী,’ সম্প্রতি এমনটাই জানিয়েছেন #মি টু আন্দোলনের মুখ তনুশ্রী দত্ত। নায়িকার দাবি, দশ বছর আগে নামী অভিনেতাদের বিরুদ্ধে যৌন হেনস্থার অভিযোগ ছিল কেবলই একটা বিতর্ক মাত্র। তবে এখন সেটা বৃহত্তর আন্দোলন। সমস্ত টানাপড়েনকে পিছনে ফেলে এ বার পরিচালক বিবেক অগ্নিহোত্রীর বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার কথা ভাবছেন তনুশ্রী। তাঁর ঘনিষ্ঠ মহলের মতে, খুব দ্রুতই এফআইআর দায়ের করতে পারেন তিনি।
তনুশ্রীর প্রথম অভিযোগ ছিল নানা পটেকরের বিরুদ্ধে। ২০০৯ সালে ‘হর্ন ওকে প্লিজ’ ছবির শুটিং ফ্লোরে নানা পাটেকর তাঁকে যৌন হেনস্থা করেছিলেন বলে মুখ খুলেছিলেন তনুশ্রী। একটা গানের দৃশ্যের শ্যুটিংয়ের সময় তাঁর সঙ্গে আপত্তিকর ব্যবহার করেন নানা। এমনকি, ঘনিষ্ঠ হওয়ার প্রস্তাবও নাকি দেন। তার পরই নায়িকা আঙুল তোলেন পরিচালক বিবেকের দিকে। অভিযোগ, ২০০৫-এ রিলিজ হওয়া ফিল্ম ‘চকোলেট’-এর সেটে নাকি তনুশ্রীর সঙ্গে অভব্যতা করেছিলেন পরিচালক বিবেক।তনুশ্রীকে পোশাক খুলে নাচের নির্দেশ দিয়েছিলেন।
তনুশ্রীর আইনি পরামর্শদাতা নিতিন সাতপুটে জানিয়েছেন, সাংবাদিক বৈঠকে অভিনেত্রী শুধু যৌন হেনস্থা নিয়ে মুখ খুলেছিলেন, অভিযোগ দায়েরের পথে যাননি। কিন্তু, তনুশ্রীর দাবির পাল্টা হিসেবে ইতিমধ্যেই তাঁর বিরুদ্ধে আইনি প্রক্রিয়া শুরু করেছেন নানা এবং বিবেক। তাই বিবেক অগ্নিহোত্রীর বিরুদ্ধে এ বার লিখিত অভিযোগ দায়ের করাটা একান্ত জরুরি। এ দিকে তনুশ্রী দত্তের পাশে দাঁড়িয়ে যখন #মি টু আন্দোলনে সরব বলিউডের একাংশ, তখন নানা পাটেকরের সমর্থনে দাঁড়িয়ে রীতিমতো সাংবাদিক বৈঠক করে তনুশ্রীকে চ্যালেঞ্জ জানিয়েছেন রাখী সাওয়ান্ত। রাখীর হুঙ্কার, “নানা পটেকর, গণেশ আচার্য এঁরা নিরীহ, ভাল মানুষ। দশ বছর পর এখন ও এসেছে এমন একজন প্রবীণ অভিনেতার বিরুদ্ধে কুৎসা রটাতে। তোকে তো আমি বাড়িতে ঢুকে মেরে আসব।”
#মি টু প্রশ্নে কার্যতই দ্বিধাবিভক্ত বলিউড। তনুশ্রী যেমন পাশে পেয়েছেন সোনম কপূর আহুজা, ফারহান আখতার, প্রিয়াঙ্কা চোপড়ার মতো তারকাদের, তেমনি এই আন্দোলনকে সমর্থন করলেও সে ভাবে মুখ খোলেননি ‘বিগ বি’ অমিতাভ বচ্চন। নাম করেও অভিনেতাকে উদ্দেশ্য করেই তনুশ্রী বলেছেন বড় বড় অভিনেতাদের কাছে এই আন্দোলনটা চরম অস্বস্তির বিষয়। তিনি বলেন, “অনেকেই আমাকে সমর্থন করে এগিয়ে এসেছেন, যাঁদের নামে অভিযোগ তাঁদের সঙ্গে কাজ করতে মানা করে দিযেছেন এমন তারকাও রয়েছেন, আবার এমনও রয়েছেন যাঁরা একবার আমাকে ফোন করারও প্রয়োজন মনে করেননি, অবশ্য আমার ফোন নম্বর তাঁদের কাছে থাকবে কেন!”
Be the first to comment