গত মে মাসে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ঘোষণা করেছিলেন, ইরানের ওপরে নতুন করে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হবে। আগামী ৫ নভেম্বর থেকে কার্যকর হচ্ছে সেই নিষেধাজ্ঞা। শেষ মুহূর্তে নিষেধাজ্ঞা আটকানোর জোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে তিনটি দেশ। ভারত, চিন ও তুরস্ক। ইরান থেকে তারাই সবচেয়ে বেশি তেল কেনে। তাদের বক্তব্য, ইরান থেকে যদি তেল কেনা না যায়, তা হলে বিশ্ব জুড়ে সংকট দেখা দেবে। আমেরিকার প্রশাসনও এই নিষেধাজ্ঞা নিয়ে দ্বিধাবিভক্ত।
আমেরিকার ধারণা, ইরানের ওপরে নিষেধাজ্ঞা জারি হলে তারা পরমাণু প্রকল্প বন্ধ করে দেবে। ক্ষেপণাস্ত্রও তৈরি করবে না। সিরিয়ার ব্যাপারে নাক গলানোও বন্ধ করবে। কিন্তু ভারতের মতো যেসব দেশ ইরান থেকে বিপুল পরিমাণ তেল কেনে তাদের ভয়, এর ফলে আন্তর্জাতিক বাজারে হু হু করে বাড়বে তেলের দাম। আমেরিকা ইরানকে শাস্তি দিতে গিয়ে তার তেলের খদ্দেরদেরও বিপদে ফেলবে।
আমেরিকার প্ৰশাসনের কর্তারাও নিষেধাজ্ঞা নিয়ে একমত নন। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জন বোলটন চান, ইরানের বিরুদ্ধে কঠোরতম ব্যবস্থা নেওয়া হোক। অন্যদিকে বিদেশ দফতরের অফিসাররা বলছেন, নিষেধাজ্ঞার জেরে যদি তেলের দাম বাড়ে, তা হলে বিশ্ব জুড়ে আমেরিকা ও তার মিত্র দেশগুলি সম্পর্কে বিরূপ মনোভাব সৃষ্টি হবে।
চলতি মাসে আন্তর্জাতিক বাজারে অপরিশোধিত তেলের দাম ব্যারেল পিছু ৮৭ ডলারের কিছু কম। গত চার বছরে তেলের দাম আর কখনও এত বাড়েনি। একটি সূত্রে জানা গিয়েছে, ট্রাম্প প্রশাসন চায়, ইরানকে কিছু ছাড় দেওয়া হোক। তাহলে তারা কয়েকটি দেশকে অন্তত তেল বেচতে পারবে। পরের বছর রাশিয়া ও সৌদি আরব বাজারে তেলের সরবরাহ বাড়ালে এই ছাড় বন্ধ করে দেওয়া হবে। অবশ্য তার মধ্যে ইরান যদি আমেরিকার কথা মেনে নেয়, তাহলে নিষেধাজ্ঞার প্রয়োজনই থাকবে না।
Be the first to comment