‘রাখে হরি মারে কে’? পড়ুন!

Spread the love
ভারতীয়রা, বিশেষ করে দিল্লি এবং মুম্বইবাসীরা নিত্যদিন নাকাল হন ট্র্যাফিক জ্যামে। শুধু দিল্লি-মুম্বই নয়, এ চিত্র রয়েছে বেশিরভাগ বড় শহরেই। প্লেন ধরার থাকলে তাই প্রয়োজনের তুলনায় অনেকটা বেশি সময় হাতে নিয়েই বাড়ি থেকে বেরোন লোকজন। তবে এই একই ছবি দেখা যায় সুদূর জাকার্তাতেও। সমীক্ষা বলছে, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সবচেয়ে মারাত্মক ট্র্যাফিক জ্যাম হয় ইন্দোনেশিয়ার রাজধানী জাকার্তায়। নিত্যদিন নাস্তানাবুদ হন যাত্রীরা। তবে এই দীর্ঘক্ষণের ট্র্যাফিক জ্যামই যে কারোও জীবন বাঁচাতে পারে তা বোধহয় ভাবেননি কেউই।
সোমবার সকালে লায়ন এয়ারের বোয়িং ৭৩৭ ম্যাক্স ৮ বিমান ধরার কথা ছিল জাকার্তার বাসিন্দা সোনি সেতিওয়ানের। কিন্তু সময়ে বিমানবন্দরে পৌঁছতে পারেননি ইন্দোনেশিয়ার অর্থমন্ত্রকের এই আধিকারিক। আটকে পড়েছিলেন ট্র্যাফিক জ্যামে। আর এই ট্রাফিক জ্যামই বাঁচিয়ে দিয়েছে সেতিওয়ানের জীবন।
সোনি জানিয়েছেন, তিনি এবং তাঁর সহকর্মীরা মাঝে মাঝেই এই বিমানে যাতায়াত করতেন। অফিসের কাজের সূত্রে, প্রায় প্রতি সপ্তাহেই এই বিমানে চড়তে হয় তাঁকে। কিন্তু সোমবার জাকার্তার রাস্তায় দীর্ঘক্ষণ জ্যামে আটকে পড়েছিলেন সেতিয়ান। আর এই জ্যামের জন্যই বরাত জোরে প্রাণ রক্ষা হয়েছে তাঁর। প্রসঙ্গত, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার অন্যতম ভয়ঙ্কর ট্র্যাফিক জ্যামের জন্য ইন্দোনেশিয়ার রাজধানী জাকার্তা বিখ্যাত।
সেতিয়ান জানিয়েছেন, “বুঝতেই পারছিলাম না রাস্তায় কেন এত জ্যাম ছিল। অন্যান্য বার সময়েই বিমানবন্দরে পৌঁছে যাই। এ বার পৌঁছতেই পারিনি। আর যখন পৌঁছলাম দেখলাম প্লেন উড়ে গেছে।“ তবে সোনি এ যাত্রায় বেঁচে গেলেও রক্ষা পাননি তাঁর ৬ জন সহকর্মী। ওই প্লেনেই ছিলেন তাঁরা। সোনি জানিয়েছেন, “আমি খুবই মর্মাহত। দুর্ভাগ্য যে আমার সহকর্মীরা আর নেই।“ এর পাশাপাশি সেতিয়ান জানিয়েছেন, “আমার পরিবার খুব ভয় পেয়ে গিয়েছিল। মা খুব কান্নাকাটি করছিল। তবে ওদের জানিয়েছি আমি সুস্থ রয়েছি।“
সোমবার সকালে ৬টা ২০ মিনিট নাগাদ ইন্দোনেশিয়ার রাজধানী জাকার্তা থেকে উড়েছিল লায়ন এয়ারের একটি যাত্রিবাহি বিমান। কিন্তু টেক-অফ করার মিনিট তেরো পর থেকেই আর হদিশ পাওয়া যাচ্ছিল না বোয়িং ৭৩৭ ম্যাক্স ৮ বিমানের। শুরু হয় সার্চ অপারেশন। জাকার্তা বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ জানায়, সোমবার সকাল ছ’টা তেত্রিশ মিনিটের পর আর যোগাযোগ করা যায়নি ওই বিমানের পাইলটদের সঙ্গে। এরপরেই খবর পাওয়া যায় সমুদ্রের উপর ১৮৯ জন যাত্রী সমেত ভেঙে পরেছে ওই বিমান। ভেঙে পড়ার আগে বিমানটি সমুদ্র থেকে ৩,৬৫০ ফুট উঁচুতে ছিল বলে জানা গিয়েছে। গুগল ম্যাপের তথ্য অনুযায়ী, বিমানটি  উত্তর ইন্দোনেশিয়া উপকূলের ১৫ কিলোমিটারের মধ্যে ছিল। জানা গিয়েছে, জাকার্তা থেকে সুমাত্রা যাচ্ছিল ওই বিমানটি।
উদ্ধারকাজ শুরু হওয়ার পরে দীর্ঘক্ষণ কোনও খোঁজ পাওয়া যায়নি যাত্রীদের। উদ্ধারকারী দলে অনুমান, আর কেউই সম্ভবত বেঁচে নেই। এ দিকে জানা গিয়েছে, বিমানটি সমুদ্রের ১১৮ ফুট নীচে তলিয়ে গিয়েছে। মৃত্যু হয়েছে দিল্লির পাইলট ভাব্যা সুনেজার। সোমবার দুর্ঘটনাগ্রস্ত প্লেনের ককপিটে ছিলেন তিনি।

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*