শুরুটা হয়েছিল বিতর্ক দিয়ে। শেষটাও হল বিতর্ক দিয়েই। মোদীর ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ স্লোগানে চাপা পড়ে গেল ‘মেড ইন চায়না’ স্লোগানে। আদিবাসী বিক্ষোভ তো রয়েছেই। তবে, সবকিছু পেরিয়েই দেশবাসীকে ঐক্যের বার্তা দিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। বললেন, “এই মুহূর্ত ভারতের কাছে স্মরণীয়। আজ ভারত বর্তমান ইতিহাসকে উজ্জ্বল করল। এটা দেশবাসীকে ভবিষ্যতে চলার পথে প্রেরণা যোগাবে।”
মূর্তি উন্মোচন ঘিরে আজ সাজানো হয়েছিল প্রায় ২০ হাজার বর্গকিলোমিটার এলাকা। তৈরি করা হয়েছে ১২ বর্গ কিলোমিটার কৃত্রিম হ্রদ। মূর্তি তৈরির দায়িত্বে ছিল নির্মাণ সংস্থা লার্সেন অ্যান্ড টার্বো এবং সর্দার সরোবর নর্মদা নিগম লিমিটেড। মূর্তির নকশা তৈরি করেছেন পদ্মভূষণ প্রাপ্ত স্থপতি রাম ভি সূতর। লৌহমানবের মূর্তিও লোহার মতোই মজবুত। রিখটার স্কেলের ৬.৫ কম্পন অনায়াসে সহ্য করতে পারবে এই মূর্তি।
সর্দার সরোবর বাঁধ থেকে ৩.৩২ কিলোমিটার দূরত্বে এই মূর্তিটি রাখা হয়েছে এমন জায়গায় যেখানে মধ্যপ্রদেশ, গুজরাট ও মহারাষ্ট্রের সংযোগস্থল৷ ২০১৩ সালের ৩১ অক্টোবর শুরু হয় মূর্তির নির্মাণ কাজ। প্রায় তিন হাজার শ্রমিকের নিরলস পরিশ্রম জড়িয়ে রয়েছে মূর্তির সঙ্গে। চিন থেকেও উড়িয়ে আনা হয় দক্ষ কারিগর। মূর্তি তৈরির খরচ প্রায় ২,৯৮৯ কোটি টাকা।
মূর্তির উচ্চতা ১৮২ মিটার, বেদী-সহ যা ২৪০ মিটার। দেশের মধ্যে তো বটেই, বিশ্বেরও সবচেয়ে উঁচু মূর্তি এই ‘স্ট্যাচু অব ইউনিটি’। মূর্তি তৈরিতে ১ লক্ষ ৬৯ হাজার গ্রামের প্রায় এক কোটি কৃষক ১২৯ টন লোহা দান করেছেন৷ মূর্তি তৈরিতে লেগেছে ৭০ হাজার টন সিমেন্ট, রিইনফোর্সমেন্ট স্টিল ১৮ হাজার ৫০০ টন, স্ট্রাকচারাল স্টিল ৬ হাজার টন, ব্রোঞ্জ ১ হাজার ৭০০ মেট্রিক টন, ব্রোঞ্জের শিট ২২ হাজার ৫০০ টন।
মূর্তিতে দু’টি উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন লিফট রয়েছে। একসঙ্গে প্রায় ২৬ জনের বেশি পর্যটক চাপতে পারবেন এই লিফটে। রয়েছে সেলফি পয়েন্ট, সেখানে যেতে গেলে মাথাপিছু টিকিটের দাম পড়বে ৩৫০ টাকা। টিকিট বুক করা যাবে অনলাইনে। মূর্তির ১৯৩ মিটার উচ্চতায় পর্যটকদের জন্য তৈরি হয়েছে গ্যালারি। প্রায় ২০০ পর্যটক এক সঙ্গে এই গ্যালারিতে দাঁড়িতে প্রাকৃতিক শোভা দেখতে পাবেন। ১ নভেম্বর থেকে সাধারণ মানুষের জন্য খুলে দেওয়া হবে এই মূর্তি।
Be the first to comment