টানটান উত্তেজনার মধ্যে আসতে শুরু করেছেন নিরাপত্তা রক্ষীরা। এসেছে ২০ জনের দক্ষ কমান্ডো টিম। ডাকা হয়েছে ১০০ মহিলাকেও। সোমবার বিকেল পাঁচটার সময় খুলবে শবরীমালা মন্দির। মঙ্গলবার সেখানে বিশেষ পুজো হওয়ার কথা। কিন্তু অশান্তি এড়িয়ে কি আদৌ খোলা যাবে শবরীমালা মন্দির? যেখানে বহু শতাব্দীর প্রথা অনুযায়ী ১০ থেকে ৫০ বছর বয়সী, অর্থাৎ ঋতুমতী হতে পারেন সেই বয়সের কোনও মহিলাকে আয়াপ্পার মন্দিরে প্রবেশের অধিকার দেওয়া হয় না! সেপ্টেম্বরের শেষে সুপ্রিম কোর্ট রায় দিয়েছে সব বয়সের মহিলাই প্রবেশ করতে পারবেন মন্দিরে।
সোমবার বিরাট অশান্তি হতে পারে এই আশঙ্কায় শনিবার থেকেই শবরীমালায় চার জন বা চার চেয়ে বেশি লোকের একসঙ্গে চলাফেরার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। জারি করা হয়েছে ১৪৪ ধারা। সব পূণ্যার্থীরা যাতে নির্বিঘ্নে মন্দির দর্শন করতে পারেন, তার জন্য এই ব্যবস্থা। এর জন্য ৩০ জন সার্কেল ইনস্পেক্টর পদের মহিলা পুলিশকর্মী সেখানে পাহারায় থাকবেন। এই মহিলা পুলিশকর্মীদের বয়স হবে পঞ্চাশের বেশি। শবরীমালা কর্মসমিতি নামে একটি রক্ষণশীল মঞ্চ (যার মধ্যে বিশ্ব হিন্দু পরিষদও আছে) বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমকে বলেছে, তারা যেন ৫০-এর নীচে বয়স এমন মহিলা সাংবাদিককে শবরীমালায় না পাঠায়।
গত মাসেই শবরীমালা মন্দিরে প্রবেশ করার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়েছেন জনা বারো মহিলা। সুপ্রিম কোর্টের আদেশের পর কেরল সরকার চেষ্টা করেছিল যাতে সব বয়সের মহিলা মন্দিরে যেতে পারেন। কিন্তু প্রবল বিরোধিতার চাপে তা হয়ে ওঠেনি। বিভিন্ন ধর্মীয় গোষ্ঠী, এমনকী সাধারণ মানুষের একটা বড় অংশই সুপ্রিম কোর্টের এই রায়ের বিরোধিতা করেছেন। তাঁদের মতে, বহু শতাব্দীর পুরনো এই প্রথা ভাঙলে আয়াপ্পা ক্রুদ্ধ হবেন।
ইতিমধ্যে অন্ধ্রপ্রদেশ ও তামিলনাড়ু থেকে আয়াপ্পার ভক্তরা শবরীমালায় আসতে শুরু করেছেন। তবে এখনও পর্যন্ত ১০ থেকে ৫০ বছরের কোনও মহিলা মন্দিরে ঢুকতে চেয়ে পুলিশি নিরাপত্তা চেয়েছেন এমন শোনা যায়নি। শবরীমালা কর্মসমিতির অভিযোগ, সুপ্রিম কোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে জোরালো জনমত রয়েছে। সেই কারণে সর্বোচ্চ আদালত ১৩ নভেম্বর রিট পিটিশনের শুনানি করবে। তা সত্ত্বেও কেরলের কমিউনিস্ট সরকার জোর করে পুলিশ লাগিয়ে প্রাচীন প্রথা ভাঙতে উঠেপড়ে লেগেছে। আয়াপ্পা ধর্মসেনা নামে একটি উগ্র হিন্দু সংগঠনের নেতা রাহুল ঈশ্বর একটি ভিডিও বার্তায় বলেছেন, পুলিশের মতো তাঁরাও পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রস্তুত।
গত মাসে শবরীমালায় প্রবেশ করা নিয়ে বিরাট গন্ডগোল হয়। একাধিক ঘটনায় এখনও পর্যন্ত ৩৭০০ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। মামলার সংখ্যাও নেহাত কম নয়। মোট ৫৪৫টি মামলা চলছে। সোমবার বিকেল পাঁচটায় মন্দির খুলবে, বন্ধ হওয়ার কথা রাত দশটায়। মঙ্গলবার একটি বিশেষ পুজো হওয়ার কথা ওই মন্দিরে।
Be the first to comment