দীপাবলির দিন কয়েক আগে বাজির বাজার মাতিয়ে দিল, ফেসবুক হোয়াটসঅ্যাপ, গুগল, স্কাইপ; পড়ুন!

Spread the love
আমায় পাঁচটা ফেসবুক দিন তো? হোয়াটসঅ্যাপগুলো ভাল হবে তো দাদা? গুগল প্যাক করে দিন খান পঞ্চাশ। বাজিবাজারে ঘুরলে এগুলোই শুনবেন এখন। তা হলে কি বাজি বাজার বদলে গেল কোনও রকম আইটি বাজারে? নাকি গোপন কোনও বাজি বিক্রি হচ্ছে কোড ল্যাঙ্গুয়েজে! ঠিক কী হচ্ছে, তা জানতে হলে আপনাকে বুঝতে হবে ব্যবসার স্ট্র্যাটেজি।
শব্দ বন্ধ। আলো চলবে, তা-ও মোটে দু’ঘণ্টা! আসন্ন দীপাবলিতে বাজির উপর সুপ্রিম কোর্টের এমন কড়া নিষেধাজ্ঞা আরোপের পরে কার্যত মাথায় হাত বাজি-ব্যবসায়ীদের। কিন্তু বাজার তো চাঙ্গা রাখতেই হবে, কয়েক হাজার মানুষের পেটের প্রশ্ন বলে কথা। তাই দীপাবলির দিন কয়েক আগে বাজির বাজার মাতিয়ে দিল, ফেসবুক হোয়াটসঅ্যাপ, গুগল, স্কাইপ!
না, এই অ্যাপগুলির কোনও ভূমিকা নেই এতে। এগুলি সবই বাজির নাম। মহেশতলার চিংড়িপোতা বাজি বাজারে গিয়ে দেখা গেল, পসরা ভরেছে এই ফেসবুকেই। বিক্রেতারা জানাচ্ছেন, সাধারণত বসনতুবড়ি বলে পরিচিত বাজিটিই নতুন নামে বাজারে এনেছেন তাঁরা। পরিচিত বলেও, নামেই বিকোচ্ছে বাজি। পাঁচ পিসের প্যাকেটের দাম ২৮০ টাকা। এক একটা ‘ফেসবুক’ প্রায় ৩০-৪০ সেকেন্ড ধরে ঝলমলিয়ে জ্বলবে বলে দাবি করছেন তাঁরা।
সে রকমই হোয়াটসঅ্যাপ বাজির প্যাকেট খুললেই বেরোবে ছোট ছোট লম্বা আকৃতির এক রকমের বাজি। তুবড়ির মতোই প্রায়, তবে এর জ্বলার ধরনটা হুউউউশ করে নয়, চড়বড় করে। অল্প শব্দের সঙ্গে ছিটকে বেরোবে অসংখ্য আলোর ছোট-বড় ফুলকি। মাত্র ৮০ টাকায় মিলবে পাঁচ পিসের একটি প্যাকেট।
রকেটের মতোই নতুন এক ধরনের বাজি আবার বাজার মাতাচ্ছে গুগল নামে। পাঁচ পিস গুগল ১২০ টাকা দিয়ে কিনে ছাদের আকাশ আলোয় ভরাতেই পারেন এই দীপাবলিতে। একই কাজ করবে ‘স্কাইপ’-ও।
বজবজ ও মহেশতলা বাজিবাজারের সম্পাদক শুকদেব নস্কর জানাচ্ছেন, এই বছর কোনও রকম শব্দবাজি বানানো কড়া ভাবে বন্ধ রাখা হয়েছে। এ ছাড়াও বাজিবাজারে বাড়তি নিরাপত্তার দিকে খেয়াল রাখছেন তাঁরা। জল মজুত থাকছে জায়গায় জায়গায়, বেরোনোর চওড়া পথ নির্দিষ্টি করা থাকছে।
শুধু দক্ষিণ ২৪ পরগনা নয়, সারা পশ্চিমবঙ্গের অন্যতম সেরা ও বড় বাজিবাজারগুলির মধ্যে একটি হলো মহেশতলার চিংড়ি পোতা বাজি বাজার। কয়েক হাজার দোকান রয়েছে এই বাজি বাজারে। অন্তত পাঁচ হাজার পরিবার এই বাজি ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত। এই বছর প্রথম বাজি বাজারে ক্রেতাদের আসার সুবিধার জন্য শিয়ালদহ-বজবজ শাখার নুঙ্গি স্টেশন থেকে এবং নুঙ্গি মোড় থেকে বিশেষ অটো এবং টোটোর ব্যবস্থা করা হয়েছে। পাশাপাশি যাতে কোনও রকম ভাবেই অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে, তার জন্য ২৫০ জন স্বেচ্ছাসেবক নিযুক্ত করা হয়েছে। রাস্তার দু’ধারে ফুটপাথে অস্থায়ী যে সমস্ত দোকান বসত, এই বছর যাতায়াতের সুবিধার কথা ভেবে তাদের বসতে দেওয়া হচ্ছে না।
বিক্রেতাদের আশা ছিল, যদি বৃষ্টি না হয়, তা হলে এ বছর বাজির ব্যবসা অন্যান্য বারের তুলনায় ভালো হবে। তবে শব্দবাজি পুরোপুরি বাতিল হওয়ার পরে এবং আতসবাজিতেও নিষেধাজ্ঞা আরোপের পরে সে আশায় খানিক জল পড়েছিল। ফের ‘ফেসবুক’-‘হোয়াটসঅ্যাপ’-‘গুগল’-এর হাত ধরে সে আশা ফিরতে পারে কি না, সেটাই দেখার।

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*