আমাদের ক্ষমা করো। ওকে ফিরে আসতে দাও। আল্লাহ্ তোমাদের ক্ষমা করবেন।“ ছেলেকে ফিরিয়ে আনার জন্য এ বার সরাসরি জঙ্গি সংগঠনের কাছেই আবেদন জানালেন তাঁর বাবা।
দিল্লিতে পড়াশোনা করতে এসেছিলেন কাশ্মীরি যুবক এহ্তিসাম বিলাল। আচমকাই উধাও গিয়েছিলেন গ্রেটার নয়ডার ইউনিভার্সিটি ক্যাম্পাস থেকে। নিখোঁজ ছেলেকে ফিরে পেতে হন্যে হয়ে সন্ধান করছিলেন তাঁর বাবা-মা। এরই মাঝে সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রকাশ হয় একটি ভিডিও। যেখানে বিলাল জানিয়েছেন জঙ্গি সংগঠন আইএস-এ যোগ দিয়েছেন তিনি। কালো পোশাক, হাতে অস্ত্র সঙ্গে আইএস-এর পতাকা নিয়ে ৬ মিনিটের ওই ভিডিওতে হাজির ছিলেন এহ্তিসাম। জানিয়েছিলেন, কাশ্মীরের জঙ্গি সংগঠন ইসলামিক স্টেট জম্মু ও কাশ্মীরে যোগ দিয়েছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ে তাঁকে হেনস্থা করা হয়েছিল বলে অভিযোগ করেন বিলাল। এই হেনস্থার পরেই তিনি এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে জানিয়েছেন।
এরপর গত শনিবার সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি ভিডিও প্রকাশ করেন এহ্তিসামের বাবা বিলাল আহমেদ সফি। ছেলেকে ঘরে ফিরে আসার অনুরোধ করেন তিনি। বলেন, ”আমরা তোর কথা শুনেছি। আমাদের খুব খারাপ লেগেছে। আমরা দুঃখিত। বিলাল, তুই ইসলাম ও কোরানের কথা বলেছিস। কিন্তু তুই ভুলে গেছিস, ইসলাম বলে মায়ের পায়ের নীচেই স্বর্গ আর বাবা হলো সেই স্বর্গে যাওয়ার দরজা। তুই যেখানেই আছিস, আমি অনুরোধ করছি ও নির্দেশ দিচ্ছি, দয়া করে বাড়ি ফিরে আয়।” কিন্তু কোনও কাজ হয়নি। তাই এ বার জঙ্গি সংগঠন আইএস-এর কাছেই ছেলেকে ফেরানোর আর্জি পেশ করেছেন এহ্তিসামের বাবা। তিনি জানিয়েছেন, এহ্তিসাম তাঁর পরিবারের একমাত্র পুরুষ উত্তরসূরী।
আর একটি ভিডিও বার্তায় দেখা গেছে বিলালের মাকে। তিনি অনুরোধ করে বলেছেন, বিলালের তিন বোন আছে। কে তাদের দেখাশোনা করবে। বিলাল না থাকলে তাদের কী হবে? অসুস্থ মায়ের কথা একবারও চিন্তা করল না তাঁর ছেলে। এমনকী জঙ্গি প্রধান জাকির মুসা’র কাছে তিনি অনুরোধ করেছেন যাতে তাঁর ছেলেকে বাড়িতে ফিরিয়ে দেওয়া হয়।
নতুন ভিডিওতে বাঁধ মানেনি বিলাল আহমেদ সফির চোখের জল। ভিডিওতে তাঁকে বলতে শোনা গিয়েছে, “তোমার স্বর্গ হলো তোমার বাবা-মা। ১২ জন সদস্যের পরিবারে তুমিই একমাত্র আশা। তুমি কি ভুলে গেছ যে এই পরিবার গত দু’বছরে চার-চারটে মৃত্যু দেখেছে?” কেবল বাবা নয় ভেঙে পড়েছেন এহ্তিসামের মা-ও। তিনিও আর্জি জানিয়েছেন যাতে তাঁর ছেলেকে বাড়িতে ফিরতে দেয় জঙ্গিরা। বিলালের এক বোন বলেছেন, “প্লিজ ওকে ছেড়ে দিন। বাড়ির একমাত্র ছেলে ও। ওকে ছেড়ে দিন।“
Be the first to comment