চিৎকার। “অমর আমার গায়ে কেরোসিন ঢেলে দেশলাই জ্বালিয়েছে।” মেডিক্যাল কলেজের বার্ন ওয়ার্ডে সিংহভাগ পুড়ে যাওয়া বছর বাইশের সঙ্গীতা শত অত্যাচারের পর মুখ না খুললেও, মৃত্যুর আগে ভিডিও বার্তায় জানিয়ে গেলেন সবটা।
ফেসবুক থেকে প্রেম। সেই প্রেম থেকে বিয়ে। তারপরেও স্ত্রীর গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন লাগিয়ে দেওয়ার অভিযোগ স্বামীর বিরুদ্ধে। সপ্তাহখানেক মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ার পর গত শনিবার হাসপাতালে মৃত্যু হয় বাগুইআটি থানার জগৎপুরের বাসিন্দা সঙ্গীতা দাসের। গ্রেফতার করা হয়েছে স্বামী অমরনাথ দাস, শাশুড়ি রীনা দাস এবং তনয়া চট্টোপাধ্যায় নামের এক তরুণীকে।
মৃতার আত্মীয়দের অভিযোগ, পণ নিয়ে দাম্পত্য কলহ চলছিলই অমরনাথ এবং সঙ্গীতার মধ্যে। কিন্তু সঙ্গীতা সে সব কখনও বাপের বাড়িতে জানানি বলে জানিয়েছেন তাঁর আত্মীয়রা। তাঁর কাকা বলেন, “আমরা বুঝতে পারতাম ওঁদের অশান্তি চলছে। কিন্তু কিছু বলিনি।”
জানা গিয়েছে ফেসবুকের সূত্রেই প্রেম হয় অমরনাথ এবং সঙ্গীতার। তারপর বিয়ে। প্রথমে নিজেকে গ্রিল কারখানার মালিক বলে পরিচয় দিয়েছিল অমর। পরে জানা গিয়েছিল, সে গ্রিলের কারখানায় কাজ করে। এরমধ্যেই ফেসবুকে অন্য এক তরুণীর সঙ্গে পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়িয়েছিল অমর। তনয়া নামের গ্রেফতার হওয়া তরুণীর সঙ্গেই অমর বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কে জড়িয়ে পড়িয়েছিল বলে জানিয়েছে বাগুইআটি।
জগৎপুরে যে বাড়িতে ভাড়া থাকত এই দম্পতি সেই বাড়ির ভাড়াও বেশ কয়েক মাস বাকি। পুলিশ বাড়িওয়ালাকে জেরা করে জানতে পেরেছে, গত ২৬ অক্টোবর তিনি ভাড়া চাইতে গিয়েছিলেন। তখন তাঁকে সঙ্গীতা বলেছিলেন, দু’একদিনের মধ্যে ভাড়া মিটিয়ে দেবেন। তিনি জানিয়েছেন, ওই দিনই একটু বেশি রাতে অমর এসে তাঁকে বলেন, সঙ্গীতা গায়ে আগুন দিয়েছে।
লোয়ার অ্যাবডোমেন-সহ সঙ্গেএতার দেহের ৮০ শতাংশ পুড়ে গিয়েছিল বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। মৃত্যুর আগে একটি ভিডিওতে তিনি বলেছেন, অমরই তাঁর গায়ে আগুন দিয়েছিল। আপাতত অমর, তাঁর মা এবং নতুন প্রেমিকার জায়গা শ্রীঘরে।
Be the first to comment