প্রায় ৬০ কোটি টাকা খরচ করে দক্ষিণেশ্বরে স্কাই ওয়াক হয়েছে। ভক্তরা চাইলে এবার কালীঘাটেও তেমনই স্কাই ওয়াক তৈরি করে দিতে তিনি প্রস্তুত এবং এক্ষেত্রে টাকার কোনও অভাব হবে না বলেই সোমবার স্পষ্ট জানিয়ে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মঙ্গলবার কালীপুজো। তার আগে সোমবার দক্ষিণেশ্বরে স্কাই ওয়াকের উদ্বোধন করেন মুখ্যমন্ত্রী। সেখানেই এই ঘোষণা করেন তিনি। বলেন, “আমরা গরিব হতে পারি, কিন্তু দক্ষিণেশ্বর, কালীঘাট সাজানোর কাজ আমরা নিজেরাই করতে পারি। দক্ষিণেশ্বরে ভোগ ঘর তৈরি হচ্ছে। বেলুড় মঠেও তৈরি হচ্ছে। মাঝেমাঝে ওরা (কেন্দ্র) আসে, পাঁচ-ছ’লাখ করে দিতে চায়। আমরা কি ভিখারি নাকি! নিজেরাই পারি এই সব কাজ করতে।”
এই বার্তা দিতে গিয়ে তিনি বলেন, “শুধু কালীঘাট নয়, আমরা সারা রাজ্যে কোথাওই বাদ রাখিনি ভক্তদের সুবিধা দেখতে। তারকেশ্বর থেকে তারাপীঠ দেখে আসুন, একই জিনিস দেখবেন। গঙ্গাসাগরে গিয়ে দেখুন, আলো চকচক করছে। রাস্তা ঝকঝক করছে।” তবে মুখ্যমন্ত্রী এ দিন জানান, সাধারণ মানুষের সুরাহার কথা ভেবেই কালীঘাটেও স্কাইওয়াক করা যেতে পারে। তাতে ভক্তদেরও সুবিধা হয়। আবার ডালাওয়ালা বা হকারদের উচ্ছেদ করারও দরকার হবে না।
তবে স্কাই ওয়াক নির্মাণ করে ভক্তদের সুবিধা করে দেওয়ার পাশাপাশি মুখ্যমন্ত্রী এ দিন হকারদেরও সুশৃঙ্খল হওয়ার কথা বলেন। মন্দির চত্বর অপরিষ্কার থাকা নিয়ে অভিযোগ দীর্ঘদিনের। সেই প্রেক্ষাপটে মুখ্যমন্ত্রী এ দিন বলেন, দক্ষিণেশ্বরের মন্দির চত্বর পরিষ্কার রাখতে কামারহাটি পুরসভাকেও দায়িত্ব নিতে হবে। এ দিনের অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী ছাড়াও মঞ্চে ছিলেন পুর মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। বক্তৃতার মধ্যেই তাঁর দিকে তাকিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “ববি তুমি দেখো, কামারহাটি পুরসভাকে দিয়ে ৫০ জন একশো দিনের শ্রমিক নিয়োগ করার ব্যবস্থা করো। যাঁরা মন্দির চত্বর পরিষ্কার রাখবেন।” তা ছাড়া যে সব হকার তাঁদের দোকানঘর ও তার আশপাশ পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখবে তাঁদের জন্য বছরে একটি পুরস্কারের ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী। দক্ষিণেশ্বরের মন্দির কর্তৃপক্ষকে তিনি বলেন, তাঁরা যেন সেই পুরস্কার দেওয়ার ব্যবস্থা করেন।
পাশাপাশি বিজেপিকে একহাত নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “গেরুয়া মানে আমরা কী জানি! ত্যাগ, তিতিক্ষা। এই যেমন আমাদের রামকৃষ্ণ মিশনের সন্ন্যাসীরা। আর বিজেপি-র গেরুয়াদের দেখুন, খায় দায় ঘুরে বেড়ায়। গেরুয়া পরে, আবার এনজয়ও করে। এরা সাচ্চা গেরুয়া নাকি! সব ঝুটো!” মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, বাংলার পরিবেশ ধ্বংস করছে বিজেপি। বলেন, ওরা ধর্ম-ধর্ম করে। কিন্তু ধর্মের জন্য এক ইঞ্চিও কাজ করে না। কেবল ধর্মকে বিক্রি করে। একথা বলেই মুখ্যমন্ত্রী জানান, গত ৭ বছরে বাংলায় তাঁর জমানায় ধর্মস্থানগুলির কী ধরনের পরিকাঠামো উন্নয়ন হয়েছে।
প্রসঙ্গত, এ দিন দক্ষিণেশ্বরে ভক্তদের সুবিধার জন্য স্কাইওয়াকের উদ্বোধন করেন মুখ্যমন্ত্রী। তার পরে বলেন, শুধু দক্ষিণেশ্বর কেন, তারাপীঠ, তারকেশ্বর, কঙ্কালিতলা, নলহাটেশ্বরী গিয়ে দেখুন সেখানে কেমন উন্নয়ন হয়েছে। গঙ্গা সাগরে সমুদ্র থেকে আশ্রম পর্যন্ত রাস্তা হয়েছে, সেখানে লাইট চকচক করছে, রাস্তা ঝকঝক করছে।
Be the first to comment