মহারাষ্ট্রে দেবেন্দ্র ফড়নবিশ সরকার ক্ষমতায় আসার পরেই খরাপীড়িত অঞ্চলে জলকষ্ট দূর করার জন্য চালু হয়েছিল জলযুক্ত শিবার প্রকল্প। গত কয়েক বছরে ওই প্রকল্পে ব্যাপক দুর্নীতি করে সরকারি কোষাগার থেকে আট কোটি টাকা তুলে নিয়েছেন ঠিকাদারদের একাংশ। তাঁদের সাহায্য করেছেন কয়েকজন সরকারি অফিসার। ১৩৮ জন ঠিকাদার ও ২৪ জন অফিসারের নামে দুর্নীতির দায়ে এফআইআর হয়েছে। কিন্তু তার পরে কয়েকমাস কেটে গেলেও গ্রেফতার হয়নি কেউ।
জলযুক্ত শিবার প্রকল্পের উদ্দেশ্য ছিল বৃষ্টির জল সংরক্ষণ ও মাটির নীচের জলের পরিমাণ বৃদ্ধি করা। তাতে প্রতি বছরে পাঁচ হাজার গ্রামে জলসংকট দূর হত। অভিযোগ, বিদ জেলার পারলি তালুকের ১০-১২টি গ্রামে ওই প্রকল্পে ব্যাপক দুর্নীতি হয়েছে। কাজ শেষ হওয়ার আগেই ভুয়ো বিল দাখিল করেছেন কোনও কোনও ঠিকাদার। তাঁদের টাকাও দেওয়া হয়ে গিয়েছে।
রাজ্যের কৃষি কমিশনার ভিজিলেন্স স্কোয়াডকে এই দুর্নীতির তদন্তে নিয়োগ করেন। তাতে জানা যায়, ২০১৫ থেকে ‘১৭-র মধ্যে মোট ৮৮৩ টি কাজের অনুমোদন দেওয়া হয়েছিল। খরচ ধরা হয়েছিল ৩৪ কোটি টাকা। ৩০৭ টি কাজে অনিয়ম ধরা পড়েছে। সেই সব কাজের ৩০ থেকে ৫০ শতাংশের বেশি শেষ হয়নি।
পারলি তালুকের কৃষি অফিসার অশোক সোনোয়ানে জানিয়েছেন, গত মার্চ মাসে ঠিকাদার ও অফিসারদের নামে প্রথমবার এফআইআর করা হয়েছিল । পরেরবার এফআইআর করা হয়েছে জুন মাসে। পুলিশ স্বীকার করেছে, প্রথম এফআইআরের পরে আট মাস কেটে গেলেও একজনও গ্রেফতার হয়নি।
যেখানে দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে, সেই অঞ্চলটি মহারাষ্ট্রের গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রী পঙ্কজা মুন্ডের বিধানসভা কেন্দ্রের মধ্যে পড়ে। পঙ্কজা দাবি করেছেন, দোষীদের দ্রুত শাস্তি দিতে হবে । বিদ জেলার পুলিশ সুপার জি শ্রীধরকে প্রশ্ন করা হয়, এখনও কেউ গ্রেফতার হয়নি কেন? তিনি বলেন, আমরা প্রমাণপত্র সংগ্ৰহ করছি। তদন্ত এখনও প্রাথমিক স্তরে রয়েছে। ঠিক কবে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া যাবে এখনই বলা সম্ভব নয়। তবে এফআইআরে যাদের নাম আছে, তারা কেউ আগাম জামিন পায়নি। হাইকোর্ট ও সুপ্রিম কোর্ট তাদের আগাম জামিনের আবেদন নাকচ করেছে।
ওই কেলেঙ্কারিতে অভিযুক্ত হয়ে কৃষি দফতরের যে অফিসাররা সাসপেন্ড হয়েছেন, তাঁদের মধ্যে আছেন এগ্রি অ্যাসিস্ট্যান্ট, এগ্রিকালচারাল সুপারভাইজার, সার্কেল এগ্রিকালচারাল অফিসার ও তালুক এগ্রিকালচারাল অফিসার ।
Be the first to comment