আত্মহত্যাই করেছেন চব্বিশ বছরের ম্যানেজমেন্ট পড়ুয়া হর্ষ বালানি। প্রাথমিক তদন্তে এমনটাই অনুমান করছে পুলিশ। তবে কেউ হর্ষ বালানিকে আত্মহত্যা করার জন্য প্ররোচনা দিয়েছিল কিনা তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। এর পাশাপাশি উঠে এসেছে আরও কিছু তথ্য।
পুলিশ জানিয়েছে, বেশ কিছুদিন ধরেই মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন মৃত যুবক। ফোন ব্যবহার করাও ছেড়ে দিয়েছিলেন। বেশিরভাগ সময়েই বন্ধ থাকত তাঁর ফোন। একসময় সোশ্যাল মিডিয়ায় যথেষ্ট অ্যাকটিভ থাকলেও গত কয়েকদিনে একেবারেই সরে গিয়েছিলেন সোশ্যাল দুনিয়া থেকে। যোগাযোগ কমিয়ে দিয়েছিলেন বন্ধুদের সঙ্গেও। তবে কী কারণে মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন হর্ষ তা জানা যায়নি। প্রেম ঘটিত কোনও সমস্যা নাকি এই অবসাদের পিছনে রয়েছে অন্য কোনও কারণ তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
শুক্রবার রাতে কলকাতার একটি অভিজাত হোটেলের শৌচাগার থেকে উদ্ধার হয়েছিল হর্ষের দেহ। শৌচাগারের মধ্যে ক্ষতবিক্ষত অবস্থায় পড়েছিলেন হর্ষ। গলায় ছিল গভীর কাটা দাগ। মৃতদেহের পাশ থেকেই একটি রক্তমাখা ছুরি উদ্ধার করেছিল পুলিশ।
পুলিশ জানিয়েছিল, গুজরাটের রাজকোটের বাসিন্দা এই যুবক জামশেদপুরের একটি নামী কলেজ থেকে ম্যানেজমেন্ট পাশ করেছেন। বেশ কিছুদিন অ্যাপ ক্যাব সংস্থা উবার-এ চাকরিও করেন তিনি।
গত বৃহস্পতিবার কলকাতার এই অভিজাত হোটেলে এসে ওঠেন হর্ষ। হোটেলের কর্মীরা জানিয়েছেন, তারপর থেকে মাত্র একবারই দেখা গিয়েছিল তাঁকে। শুক্রবারও সারাদিন ঘরের দরজা বন্ধ করেই ছিলেন তিনি। রুম সার্ভিসের জন্য লোক গেলেও সাড়া মেলেনি। এরপরেই সন্দেহ হওয়ায় ডুপ্লিকেট চাবি দিয়ে হোটেলের ঘর খোলেন কর্মীরা। তাঁরা দেখেন শৌচাগারের কাছ থেকে রক্তের ধারা বেরিয়ে ঘরের কার্পেটে এসে মিশেছে। ক্ষতবিক্ষত অবস্থায় পড়ে রয়েছেন হর্ষ। এরপর খবর দেওয়া পুলিশে। দ্রুত ওই যুবককে নিয়ে যাওয়া হয় এসএসকেএম হাসপাতালে। সেখানেই তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসকেরা।
প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান অবসাদের কারণেই আত্মহত্যা করেছেন হর্ষ বালানি। কিন্তু কী কারনে অবসাদে ভুগছিলেন তিনি তা এখনও জানতে পারেনি পুলিশ। আর আত্মহত্যাই যদি করবেন তাহলে হঠাৎ জামশেদপুর থেকে কলকাতাতেই বা কেন এলেন হর্ষ, সে নিয়েও ধন্দে রয়েছে পুলিশ। এর পিছনে অন্য কোনও ষড়যন্ত্র রয়েছে কিনা তাও খতিয়ে দেখছে পুলিশ। খুঁটিয়ে দেখা হচ্ছে হোটেলের সিসিটিভি ফুটেজও। হর্ষের ফোনের কল লিস্ট পরীক্ষা করছেন তদন্তকারী অফিসাররা। শুক্রবার হর্ষের সঙ্গে কেউ দেখা করতে এসেছিলেন কিনা, বা হর্ষ নিজে কলকাতায় কারোও সঙ্গে দেখা করতে এসেছিলেন কিনা সেই বিষয়েও খোঁজ চালাচ্ছে পুলিশ।
Be the first to comment