পুরুলিয়ার প্রশাসনিক বৈঠকে তোলাবাজি নিয়ে ফের ক্ষোভ উগরে দিলেন মমতা, পড়ুন

Spread the love

সোমবার ঝাড়গ্রামের প্রশাসনিক বৈঠকে বেআইনি বালি খাদান নিয়ে কড়া বার্তা দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মঙ্গলবার পুরুলিয়ার প্রশাসনিক বৈঠকে তোলাবাজি নিয়ে ফের ক্ষোভ উগরে দিলেন মমতা।

এ দিন পুরুলিয়ার জেলা প্রশাসনের শীর্ষ আধিকারিকদের মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “আমি জানি এই জেলায় তোলাবাজি হয়। এবং প্রশাসনের একটা অংশ তাতে মদত দেয়। আমি স্ট্রিক্টলি বলে দিচ্ছি এ সব বন্ধ করুন। তোলাবাজি কোনওভাবেই বরদাস্ত করা হবে না।” সেই সঙ্গে দলীয় কর্মীদের বার্তা দিয়ে বলেন, “যদি কোনো রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মীও এতে জড়িত থাকে, আমি প্রশাসনকে বলব কঠোর ব্যবস্থা নিতে। সে যে দলই হোক।”
সোমবারের ঝাড়গ্রামের সভায় বালি খাদান নিয়ে জেলা প্রশাসনের শীর্ষ  আধিকারিকরা ধমক খেয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রীর। এ দিন ফের কড়া বার্তা দিলেন মুখ্যমন্ত্রী। ঝাড়্গ্রামের সভায় বলেছিলেন, “আমি সব খবর রাখি। গাড়ির পর গাড়ি লুঠ হচ্ছে। ইমিডিয়েট বন্ধ করুন। এতে সরকারের ভাবমূর্তি ভাল হয় না।”

প্রসঙ্গত, বিরোধীরা প্রায়ই অভিযোগ করেন, নদী থেকে বালি তোলা, বেআইনি পাথর খাদান, পশ্চিম বর্ধমান, বীরভূমের মতো জেলায় বেআইনি কয়লা খাদানের কাঁচা পয়সায় ফেঁপে উঠেছেন শাসক দলের নেতাকর্মীদের একাংশ। একাধিক জেলায় সীমান্ত দিয়ে গরু পাচারের সঙ্গে যুক্ত থাকারও অভিযোগ ওঠে শাসক দলের কিছু নেতার বিরুদ্ধে। দলীয় বৈঠকেও দলের নেতাদের এ ব্যাপারে একাধিকবার সমঝে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। এ বার দুই জেলা সফরে গিয়ে প্রশাসনকেও কড়া বার্তা দিয়ে দিলেন।
মাস দেড়েক আগেই বীরভূমের খয়রাশোলের তৃণমূল ব্লক সভাপতি খুন হয়েছেন। শাসক দলের তরফে বিরোধীদের দিকে আঙুল তুললেও অনেকেই বলছেন, বেআইনি কয়লা খাদানের কাঁচা পয়সার বাঁটোয়ারা নিয়েই খুন। শুধু তো একজন নন। ২০১২ সাল থেকে যিনিই খয়রাশোলের শাসক দলের ব্লক সভাপতির দায়িত্ব নিয়েছেন তিনিই খুন হয়ে গিয়েছেন।

একদা তৃণমূলের সেকেন্ড ম্যান তথা অধুনা বিজেপি নেতা মুকুল রায় অভিযোগ তুলেছিলেন, পাথর, বালির পয়সা সব পৌঁছে যাচ্ছে তৃণমূলের একেবারে উপরের সারির নেতাদের কাছে। পার্টি ফান্ডেও ঢুকছে ওই টাকা। পর্যবেক্ষকদের মতে, নিচুস্তরে যে এ নিয়ে মানুষের মধ্যে ক্ষোভ রয়েছে তা ভাল মতোই জানেন পোড় খাওয়া মমতা। তাই উনিশের ভোটের আগে দলীয় কর্মী, প্রশাসনের আধিকারিকদের তো কড়া দাওয়াই দিলেনই, সেই সঙ্গে মানুষকেও বার্তা দিয়ে দিলেন, দলনেত্রী হিসেবে তিনি নিজে কোনওভাবেই এই কাজকে বরদাস্ত করতে চান না। যদিও বিরোধীরা এ সব কথায় ভুলতে চান না। রাজ্য বিজেপি-র এক মুখপাত্রের কথায়, “উনি দল চালান, উনি সরকার চালান। দায়িত্ব তো ওনাকেই নিতে হবে!”

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*