বিহারের সরন জেলায় ছাপরা রেলস্টেশনে একটি ট্রেন থেকে উদ্ধার হল ৫০ টি কঙ্কাল। মঙ্গলবার কঙ্কাল পাচারের অভিযোগে জিআরপি গ্রেফতার করেছে এক ব্যক্তিকে। তার কাছে পাওয়া গিয়েছে প্রতিবেশী দেশের কয়েকটি সিম কার্ড।
ধৃত ব্যক্তির নাম সঞ্জয় প্রসাদ। সে বালিয়া-শিয়ালদহ এক্সপ্রেসে উঠেছিল। জিআরপি-র ধারণা, উত্তরপ্রদেশের বালিয়া থেকে কঙ্কালগুলি কেনা হয়। সম্ভবত চিনে কঙ্কালগুলো পাচার করা হচ্ছিল। সেখানে ডাক্তারি ছাত্রদের জন্য কঙ্কালের চাহিদা খুব বেশি। সেজন্য বেআইনি পথে কঙ্কাল পাচারের চেষ্টা হচ্ছিল
সম্ভবত ভুটানের মধ্যে দিয়ে চিনে কঙ্কালগুলি পাঠিয়ে দেওয়া হত। সঞ্জয় প্রসাদের কাছে বেশ কয়েকটি এটিএম কার্ড, দু’টি আইডেন্টিটি কার্ড, নেপাল ও ভুটানের সিম কার্ড পাওয়া গিয়েছে। তাকে জেরা করা হচ্ছে। সে কাদের সঙ্গে মোবাইলে যোগাযোগ রাখত, খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
সোনেপুরের ডেপুটি সুপারিন্টেন্ডেন্ট অব পুলিশ মহম্মদ তনভির বলেন, ধৃতের কাছে নেপাল ও ভুটানের টাকাও পাওয়া গিয়েছে। তার কাছে যে দু’টি আইডেন্টিটি কার্ড পাওয়া গিয়েছে, তার একটির ঠিকানা পশ্চিম চম্পারণ জেলায়, অপরটির ঠিকানা জলপাইগুড়িতে। সঞ্জয় প্রসাদকে বুধবার আদালতে তোলা হয়েছে।
জিআরপি-র ধারণা, ধৃতের কাছে বিদেশী মুদ্রা পাওয়ায় বোঝা যাচ্ছে, কঙ্কাল পাচারের পিছনে আন্তর্জাতিক চক্র সক্রিয়। ২০০৯ সালে সরন পুলিশ একটি বাস থেকে ৬৭ টি কঙ্কাল উদ্ধার করে। এক চোরাকারবারি গ্রেফতার হয়। ২০০৪ সালের এপ্রিলে গয়ায় ফল্গু নদীর কাছে উদ্ধার হয় ১ হাজার কঙ্কাল ও মানব দেহের অন্যান্য অংশ।
একসময় ভারতে কঙ্কাল কেনবেচা বৈধ ছিল। ১৯৮৫ সালে মানবদেহের কোনও অংশ কেনাবেচা নিষিদ্ধ করে দেওয়া হয়। বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠন এজন্য সরকারের ওপরে চাপ সৃষ্টি করেছিল। তাদের বক্তব্য মানুষের শরীরের কোনও অংশ বিক্রি অনৈতিক।
নিষিদ্ধ হওয়ার আগে ভারত কঙ্কাল কেনাবেচার বড় কেন্দ্র ছিল। আমেরিকার কিলগোর ইন্টারন্যাশনাল নামে এক কোম্পানি এই দেশ থেকে কঙ্কাল কিনে নানা দেশে বিক্রি করত। কিন্তু সরকার নিষিদ্ধ করে দেওয়ার পরে তারা প্ল্যাস্টিকের কঙ্কাল তৈরি করতে থাকে।
এখন ভারতে কঙ্কাল কিনতে পারে কেবল হাসপাতালগুলি। কিন্তু অসাধু ব্যবসায়ীরা অনেক সময় হাসপাতালের নথিপত্র জাল করে কঙ্কাল কেনে। একসময় পশ্চিমবঙ্গ বেআইনি কঙ্কাল কেনাবেচার বড় কেন্দ্র ছিল। ২০০৭ সালে পুলিশ বর্ধমান জেলার নানা অঞ্চলে তল্লাশি চালিয়ে ২০ টি কঙ্কাল উদ্ধার করে। গ্রেফতার হয় ছ’জন।
Be the first to comment