জলপাইগুড়ি গভর্নমেন্ট ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে চাঞ্চল্য

?
Spread the love
ফের বেনিয়মের অভিযোগ উঠল সরকারি কলেজের বিরুদ্ধে। জলপাইগুড়ি গভর্নমেন্ট ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে ডিসেন্ট্রালাইজেশন কাউন্সিলিংয়ের সময় ভুয়ো ওয়েটিং লিস্ট বানানোর দাবি তুললেন এক ছাত্রী ও তাঁর পরিবার। এই ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়ালো জলপাইগুড়িতে।
অভিযোগ এনেছেন জলপাইগুড়ির রায়কত পাড়া নিবাসী সন্তোষ কুমার ঘোষের মেয়ে অণ্বেষা ঘোষ। ২ অগস্ট জলপাইগুড়ি গভর্নমেন্ট কলেজে ছিল জয়েন্ট এন্ট্রান্সের ডিসেন্ট্রালাইজেশন কাউন্সিলিং। সেখানেই অংশ নেন অণ্বেষা। তাঁর জিএমআর র‍্যাঙ্ক ৩৩১৯০।
কাউন্সিলিংয়ের দিন কলেজের অ্যাটেনডেন্স তালিকায় ৯৯ নম্বরে নাম নথিভুক্ত ছিল অণ্বেষার। কাউন্সিলিং শুরু হয় নিয়ম মেনেই। অণ্বেষা অভিযোগ করেন, যখন ৬০-৯২ অবধি ছাত্র-ছাত্রীদের কাউন্সিলিংয়ে ডাকা হয়, তখন বাকিরা কলেজের ডি আর ১ হলে অপেক্ষারত ছিলেন। হঠাৎ করেই কলেজের প্রফেসররা এসে শুরু করে দেন ওয়েটিং লিস্ট তৈরির কাজ। ছাত্র-ছাত্রীদের বলা হয় আসন প্রায় শেষ। আরও বলা হয়, পরের সপ্তাহে আবার কাউন্সিলিংয়ের জন্য ডাকা হবে। তাই সবাই যেন কলেজের ওয়েবসাইটে নজর রাখতে বলা হয়।
তিনদিন পর কলেজ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করেন অণ্বেষার বাড়ির লোক। তাঁরা অভিযোগ করেন, কলেজ কর্তৃপক্ষ তাঁদের জানায়, কলেজে ভিড় সামলানোর জন্য ওয়েটিং লিস্টের তালিকা বানানো হয়েছিল। কিন্তু সরকারি নির্দেশ ছাড়া আগামী কাউন্সিলিং করা সম্ভব নয়।
এরপরেই অণ্বেষার পরিবারের লোকজন কয়েকটা বিষয়ে প্রশ্ন তুলে প্রশাসনের বিভিন্ন দফতরে আবেদন জানিয়ে চিঠি পাঠান। কলেজের বিরুদ্ধেও করা হয় আরটিআই। আরটিআইয়ের উত্তরে কলেজ থেকে জানানো হয়-
১) কলেজে ১৯ টি আসন ফাকা রয়েছে।
২) যে ওয়েটিং লিস্ট নিয়ে এত বিতর্ক সেই লিস্ট তৈরির কোনো সরকারি অনুমোদন ছিল না।
৩) ওয়েটিং লিস্ট এর ফটোকপি সাথে দেওয়া হয়।
অণ্বেষার তরফে চিঠি পেয়ে নড়েচড়ে বসে উচ্চশিক্ষা দফতর। এই বিষয়ে তদন্তের জন্য কমিটি গঠন করা হয়। এই তদন্ত কমিটিরই হিয়ারিং ছিল বৃহস্পতিবার। জলপাইগুড়ি সার্কিট হাউসে হওয়া এই হিয়ারিংয়ে উপস্থিত ছিলেন জয়েন্ট এন্ট্রান্স বোর্ডের চেয়ার ম্যান মলয়েন্দু সাহা, ডিরেক্টর অফ টেকনিক্যাল এডুকেশন অমলেন্দু বসু, জলপাইগুড়ি এডিএম (ডেভেলপমেন্ট) মলয় হালদার, কলেজ প্রিন্সিপাল অমিতাভ রায় ও অ্যাডমিশন কমিটি এবং ছাত্রী ও তাঁর পরিবার। বিকেল ৩ টে থেকে সন্ধ্যা ৬ টা অবধি চলে মিটিং।
কিন্তু মিটিং শেষে সংবাদমাধ্যমের সামনে ছাত্রী ও তাঁর পরিবার জানান, তাঁরা এই বৈঠকে খুশি নন। বৈঠকে জানানো হয়েছে, অণ্বেষাকে আর ভর্তি নেওয়া হবে না। কারণ, অনেক সময় পেরিয়ে গেছে। কিছুদিনের মধ্যেই প্রথম সেমেস্টার। তাই অণ্বেষাকে আগামী বছর ফের জয়েন্ট এন্ট্রান্সে বসার কথা বলা হয়েছে।
অভিযোগ করে অণ্বেষা বলেন, এখনও ১৯ টি আসন ফাঁকা। সেই আসনে ভর্তির ব্যাপারে কোনও কথা বলা হয়নি। অণ্বেষার পিসতুতো দাদা তমোঘ্ন সেনগুপ্ত জানান, কলেজের ভুলের মাশুল তাঁরা কেন দেবেন। অণ্বেষাকে ভর্তি নেওয়ার দাবি মানতে হবে। নইলে তাঁরা অন্য ব্যবস্থা নিতে বাধ্য হবেন বলেও জানিয়েছেন তিনি।
যদিও কলেজ কর্তৃপক্ষের তরফে এ ব্যাপারে কোনও মন্তব্য করা হয়নি। প্রিন্সিপাল অমিতাভ রায় জানান, যা বলার তিনি মিটিংয়েই বলেছেন। তার বেশি কিছু বলতে চান না তিনি।

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*