আমেরিকার ইতিহাসে সবচেয়ে বড় জঙ্গি হামলার অন্যতম প্রধান চক্রী জাম্মারকে চেনেন?

Spread the love
ক্ষুধার্ত, আহত এক মধ্যবয়সী ব্যক্তি কোনওরকমে নিজের শরীরটা টেনে আনছেন মরুভূমির অপর দিয়ে। তাঁর দুই হাঁটুতে আঘাতের চিহ্ন। নাম হায়দর মহম্মদ জাম্মার। দেখে বোঝাই যায় না, তিনি আমেরিকার ইতিহাসে সবচেয়ে বড় জঙ্গি হামলার অন্যতম প্রধান চক্রী। ২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর বিমান ছিনতাই করে ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টার ও পেন্টাগনে আঘাত করেছিল জঙ্গিরা। তাতে ২৯০০ জন নিহত হন। সেই বিমান ছিনতাইকারীদের নিয়োগ করেছিলেন জাম্মার। তিনি আইসিসের হাতে বন্দি ছিলেন। পালিয়ে সিরিয়ায় কুর্দ বিদ্রোহীদের কাছে আত্মসমর্পণ করেছেন।
কুর্দ বিদ্রোহীদের পিছনে মদত আছে আমেরিকার। তাদের কাছে আত্মসমর্পণ করায় জাম্মারের নাগাল পাচ্ছে আমেরিকাও। তিনি এখন আছেন কামিশলি নামে সিরিয়ার এক শহরের কাছে বন্দিশালায়। কুর্দ রক্ষীদের উপস্থিতিতে তাঁকে জেরা করেছে আমেরিকার এক সংবাদ সংস্থা। জাম্মার বলেছেন, আল কায়েদা নামে জঙ্গি সংগঠনটি তৈরি হওয়ার সময় থেকেই তিনি আফগানিস্তানে তাদের শিবিরে ছিলেন। পরে সিরিয়ায় আইসিসের সঙ্গেও যোগ দেন।
এখন তাঁর বয়স ৫৭। জার্মানি ও সিরিয়া, দুই দেশের নাগরিকত্ব আছে তাঁর। একসময় জার্মানির হামবুর্গে অল কুদস মসজিদে তরুণদের বুঝিয়ে বলতেন, কেন জেহাদে যোগ দেওয়া উচিত। তখন তাঁর লম্বা দাড়ি ছিল। কুর্দদের জেলখানায় কাউকে দাড়ি রাখতে দেয় না। তাঁর দাড়ি কামিয়ে দেওয়া হয়েছে। মাথাও ন্যাড়া করে দেওয়া হয়েছে যাতে তিনি উকুনের হাত থেকে মুক্তি পান।
চেহারা আগের চেয়ে অনেক বদলে গেলেও তাঁর একটি স্বভাব আগের মতোই আছে। তিনি কথা বলতে ভালোবাসেন। এক অর্থে তাঁকে বাচাল বলা যায়। অত কথা বলেন বলেই অনেকে তাঁকে গোপন পরিকল্পনার কথা জানাতে সাহস পেত না। কুর্দদের জেলখানাতেও তিনি বিস্তারিত জানিয়েছেন, কীভাবে ৯/১১-র বিমান ছিন্তাইকারীদের জেহাদে যোগ দেওয়ার জন্য বুঝিয়েছিলেন। তাদের কাছে তুলে ধরতেন আমেরিকা বিভিন্ন দেশে কীভাবে অত্যাচার চালাচ্ছে।
জাম্মারের যখন ১০ বছর বয়স তখন তাঁর পরিবার জার্মানিতে চলে যায়। ১৯৮২ সালে তিনি প্রথমবার জঙ্গি দলে যোগ দেওয়ার চেষ্টা করেন। জর্ডনের পথ দিয়ে সিরিয়ায় গিয়ে মুসলিম ব্রাদারহুড নামে একটি সংগঠনে যোগ দিতে যাচ্ছিলেন। কিন্তু জর্ডন সরকার তাঁকে ঢুকতে দেয়নি।
১৯৯১ সালে আফগানিস্তানে অস্ত্রশস্ত্র চালানোর প্রশিক্ষণ নেন। একসময় বসনিয়ায় গিয়েছেন। অল কুদস মসজিদে তাঁকে ঘিরে তরুণদের একটি চক্র গড়ে ওঠে। তিনি নিজেই জানিয়েছেন, মসজিদের ইমাম হওয়ার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়েছিলেন। কারণ কোরান মনে রাখতে পারতেন না। কিন্তু মসজিদে যে যুবকরা প্রার্থনা করতে আসত, তাদের বোঝাতেন, কেন জেহাদে যোগ দেওয়া উচিত।

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*