ঠিক যেন মৃত্যুফাঁদ। সাঁই সাঁই করে বেরিয়ে যাচ্ছে একের পর এক প্রাইভেট গাড়ি, ট্যাক্সি, অটো, বাস। তারমধ্যেই প্রাণ হাতে করে রাস্তা পার হচ্ছেন আট থেকে আশি সবাই। কারও যেন এক মুহূর্ত দাঁড়ানোরও সময় নেই। আর এই তাড়াহুড়োতেই কেড়ে নিচ্ছে একাধিক প্রাণ। স্থান, সল্টলেক সিটি সেন্টার ওয়ানের ঠিক সামনের রাস্তা।
ব্যস্ত চারমাথার ক্রসিং। আর এই ক্রসিংয়েই একবার সিগন্যাল লাল হয়ে গেলে অপেক্ষা করতে হয় প্রায় মিনিট দুয়েক। এই অপেক্ষা করা থেকে বাঁচতেই চালকরা গাড়ির গতি বাড়ায় ক্রসিংয়ের সামনে এসে। একদিকে বিদ্যাসাগর আইল্যান্ডের দিক থেকে করুণাময়ীর দিকে যাওয়া গাড়ি, অন্যদিকে করুণাময়ীর দিক থেকে আসা গাড়ি, দুই লেনই ব্যস্ত থাকে সবসময়।
তারমধ্যে সিটি সেন্টার ওয়ানের মতো শপিং মল। দিন হোক কি রাত, সারাক্ষণ ভিড় লেগেই আছে। যাত্রী নামানো-ওঠানোর জন্য সিটি সেন্টারের সামনেই দাঁড়িয়ে পড়ে বিভিন্ন অ্যাপ ক্যাব। ফলে সৃষ্টি হয় যানজট। কিন্তু গাড়ির গতির যেন বিরাম নেই। সিটি সেন্টারের বাইরেই রাস্তা জুড়ে লাগানো নো পার্কিং বোর্ড। কিন্তু তাতে কুছ পরোয়া নেই ড্রাইভারদের। রাস্তার মাঝখান দিয়ে যাতে লোকজন পারাপার না করে, তার জন্য লাগানো আছে লোহার ব্যারিকেড, দড়ি। তারপরেও দড়ির ফাঁক গলেই চলে পারাপার।
ড্রাইভার ও পথচলতি মানুষের এই অসচেতনতার মাশুল স্বরূপ মাঝেমধ্যেই ঘটে দুর্ঘটনা। যেমনটা হলো শনিবার দুপুরে। পুলিশ সূত্রে খবর, করুণাময়ীর দিক দিয়ে আসছিল কেবি ১৬ রুটের একটি গাড়ি। সিটি সেন্টারের কাছে ক্রসিং পেরানোর পরেই নামার হুড়োহুড়ি পরে যায়। সেই সময় প্রায় চলন্ত বাস থেকেই নামতে যান কাঁচরাপাড়া থেকে আসা এক মাঝবয়সী ভদ্রলোক। নামতে গিয়ে অসাবধানতায় রাস্তার উপর পড়ে যান তিনি।
তখনই তাঁর বাঁ পা ও হাতের উপর দিয়ে চলে যায় বাসটির পেছনের চাকা। বাসের চাকায় তাঁর বাঁ পা থেতলে যায়। হাতও ভয়ঙ্করভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। রাস্তার উপর পড়ে থাকে চাপা রক্ত। সঙ্গে সঙ্গে ঘটনাস্থলে চলে আসে কর্তব্যরত ট্র্যাফিক পুলিশ।জড়ো হয়ে যায় লোক। সঙ্গে সঙ্গে দুর্ঘটনাগ্রস্ত ব্যক্তিকে সেবা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
দুর্ঘটনার পরেই বাসের চালক ও খালাসি বাস রেখে পালিয়ে যায়। বাসের যাত্রীদের নামিয়ে দেন কর্তব্যরত ট্র্যাফিক পুলিশ। বাসটির নম্বর নিয়ে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। খবর দেওয়া হয়েছে বাসের মালিককেও।
Be the first to comment