মোবাইল ফোন হাতছাড়া করেন না এক মিনিটও? বাথরুমেও সঙ্গে নিয়ে যান তো? মোবাইল ঘাঁটতে ঘাঁটতে খাবার খান নিশ্চয়ই। মোবাইলে হাত দিয়েছেন বলে সেই হাত ধুয়ে খাবার খেতে হবে, এমন হাস্যকর প্রস্তাব জীবনেও শোনেননি তো? শুনবেনই বা কী করে? মোবাইল তো আমাদের জীবন। আমাদের বেঁচে থাকার প্রতিটি মুহূর্ত মোবাইলকে ঘিরে। কিন্তু এখন থেকে একটু হলেও সাবধান হোন। কারণ, গবেষণায় জানা গেছে, একটা টয়লেট সিটে যে পরিমাণ জীবাণু থাকে, একটা মোবাইলে থাকে তার সাত গুণ বেশি।
মোবাইলকে বাহারি চামড়া বা ফাইবারের ফ্ল্যাপ কাভার পরিয়ে ভাবলেন যে হাত থেকে পড়ে গেলেও খুব ভাঙার আশঙ্কা নেই। মোবাইল তো বাঁচল, আপনি বাঁচলেন কী? না। কারণ গবেষণা বলছে চামড়ার কেসে থাকা মোবাইলে ব্যাকটেরিয়া থাকে সবচেয়ে বেশি। থিকথিক করে জীবাণুরা। তার মানে এই নয় যে, অন্য রকম খাপ পরানো মোবাইলে ব্যাকটেরিয়া নেই। আছে। উনিশবিশ হলেও আছে তারা। হ্যাঁ, টয়লেট সিটের চেয়ে বেশ কয়েক গুণ বেশিই আছে। কেন জানেন? কারণ, আমরা প্রায় সকলেই মোবাইল নিযে বাথরুমে যাই। বাথরুমের সিট, দরজার হ্যান্ডেল এ সবে যত রকম জীবাণু থাকে তারা সবাই এসে বাসা বাঁধে আমাদের প্রিয় মোবাইলে। আমরা জানতেও পারি না। ইনিশিয়াল ওয়াশরুম হাইজিন নামে একটি সংস্থার গবেষণায উঠে এসেছে ব্যাকটেরিয়াদের এই চপল চলাফেরার খবর।
স্ক্যান করে দেখা গেছে একটা টয়লেট সিটে গড়ে ২২০টা স্পট আছে, যেখানে ব্যাকটেরিয়া থাকে। কিন্তু একটা টয়লেট সিটের চেয়ে অনেক ছোট মোবাইলে গড়ে ১৪৭৯টা স্পট দেখা গেছে যেখানে জীবাণুদের আনাগোণা চলছে। ইউনিভার্সিটি অব অ্যাবারডিনের ব্যাকটেরিওলজির প্রফেসর এমেরিটাস হিউ পেনিংটন জানিয়েছেন, একটা মোবাইল মানে একটা রুমাল। রুমালের মতোই নোংরা মোবাইল। তা হলে মোবাইল ব্যবহারকারীদের অসুখ হয় না কেন? কারণ, যাঁর মোবাইল, ব্যাকটেরিয়াও তাঁর দেহেরই। ফলে সেটা থেকে তাঁর অসুখ হওয়ার আশঙ্কা তুলনামূলক ভাবে কম।
এর আগে লন্ডন স্কুল অব হাইজিন অ্যান্ড ট্রপিক্যাল মেডিসিন একটা এই ধরনের গবেষণা করেছিল। তখন তারা দেখেছিল প্রতি ছয়টির মধ্যে অন্তত একটি মোবাইলে মানুষের মলের কোনও না কোনও অংশ লেগে থাকে। মানে ই কোলাই ব্যাকটেরিয়ার চাষ হয় মোবাইলে। এর থেকে ফুড পয়জ়নিং বা পেট ব্যথা হতেই পারে।
অতএব অন্যের মোবাইল ব্যবহার না করাই শ্রেয়। আর নিজের মোবাইল নিয়েও বাথরুমে না-ই বা গেলেন।
Be the first to comment