চেন্নাইয়ের হোস্টেল মালিক সম্পতকে গ্রেফতার করলো পুলিশ

Spread the love
হোস্টেলের ঘরে, বাথরুমে গোপনে বসানো রয়েছে ক্যামেরা। বাথরুমের দরজা খোলার শব্দেই চালু হবে সেগুলি। ঘরের বাতি জ্বালালেও ফটাফট স্টার্ট নেবে ক্যামেরার লেন্স। সুকৌশলে এমনই আয়োজন করে রেখেছিলেন পেশায় ইঞ্জিনিয়ার সম্পত রাজ। স্নানরতা মহিলার ছবি ও ভিডিও সহজেই মুঠোবন্দি হত তাঁর। ঘরের ভিতর পোশাক বদলের ছবিও হাতে এসে যেত সহজেই। তারপর ঝটপট সেই সব ছবি ও ভিডিও ক্যামেরা থেকে মোবাইল ও ল্যাপটপে ফাইলবন্দি হয়ে যেত।
হোস্টেলের ঘরের এমন অন্দরসজ্জার কথা ঘুণাক্ষরেও টের পাননি মহিলারা। বিষয়টা প্রথম নজরে আসে এক কলেজ শিক্ষিকার। গত মাসেই হোস্টেলের ঘর ভাড়া করেছেন তিনি। স্নান সেরে, ভিজে চুল শুকনোর জন্য ড্রায়ারের পিন প্লাগে ঢোকানো মাত্রই সকেট সমেত ক্যামেরা একেবারে হুড়মুড়িয়ে মাটিতে। এ কী কাণ্ড! মহিলার তো মাথায় হাত। তার মানেই দীর্ঘদিন ধরেই তাঁদের সবার স্নানরত ছবি ও ভিডিও ক্যামেরায় বন্দি হয়ে চলেছে। হোস্টেলের মালিককে এ বিষয়ে জিজ্ঞাসা করলে তিনিও হুমকি দিচ্ছেন। ভিডিও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য ব্ল্যাকমেলও করছেন। শেষে পুলিশের দ্বারস্থ হন মহিলারা।
চেন্নাইয়ের আদাবাক্কামের ওই হোস্টেল মালিক সম্পতকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তাঁকে জেরা করে হোস্টেলের ঘরগুলি থেকে ন’টি ক্যামেরা উদ্ধার হয়েছে। খুবই দক্ষতার সঙ্গে ঘরের বিভিন্ন দিকে সেগুলি ফিট করে রেখেছিলেন সম্পত। তিনটি ছিল ইলেকট্রিক সকেটের মধ্যে, দু’টো বাল্বে, একটা জামাকাপড় ঝোলানোর হ্যাঙ্গারে, তিনটি হাতঘড়ির মধ্যে। গোপন ক্যামেরায় তোলা ভিডিও সম্পত স্টোর করে রাখতেন তার মোবাইল, ট্যাব ও ল্যাপটপে। তিনটি ল্যাপটপ, দু’টো ট্যাব ও ১০টি মোবাইল ফোনও তাঁর বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে উদ্ধার করেছে পুলিশ।
বছর আটচল্লিশের সম্পত একজন ইঞ্জিনিয়ার। চাকরিতে সুবিধা করতে না পেরে বর্তমানে রিয়েল এস্টেটের ব্যবসা ফেঁদে বসেছেন। হস্তিনাপুরমে স্ত্রী ও দুই ছেলেমেয়েকে নিয়ে তাঁর বাস। নিজের বাড়ির একাংশকেই বানিয়ে ফেলেছেন হোস্টেল। মাঝে একটা গ্যারাজের ব্যবধান। দোতলা ও তিনতলায় সাকুল্যে তিনটি ঘর। তাতে ভাড়া নিয়ে থাকেন সাতজন মহিলা। তাঁদের মধ্যে ছ’জন আইটি সেক্টরে চাকরি করেন এবং একজন অধ্যাপিকা। অধ্যাপিকা পুলিশকে জানিয়েছেন, মুখ বন্ধ না রাখলে তাঁর সমস্ত ভিডিও ও ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় আপলোড করে দেওয়ার হুমকিও দিয়েছিলেন সম্পত।
পুলিশের কথায়, এক একটি ক্যামেরার দাম ২৫০০ টাকা। হাই কোয়ালিটির ওই ক্যামেরাগুলি  টানা ৫০০ ঘণ্টা পর্যন্ত থাকতে পারে স্ট্যান্ডবাই মোডে। সামান্য শব্দে চালু হয়ে যায় সেগুলি। ক্যামেরাগুলি টানা ৪ ঘণ্টার ফুটেজ তুলে রাখতে পারে। মাঝে মাঝেই সবকিছু তদারকি করা বাহানায় হোস্টেলের ঘরে ঢুকে পড়তেন সম্পত। তারপর ক্যামেরা খুলে, আবার নতুন ডিভাইস লাগিয়ে দিতেন। পুরনো ফুটেজ স্টোর করে নিতেন মোবাইলে। পুলিশের ধারণা, শুধু ন’টি নয়, কনসিলের ভিতর আরও ক্যামেরা ফিট করে রেখেছেন সম্পত। সম্প্রতি হোস্টেলের ঘর মেরামতির কাজ করিয়েছেন তিনি। সে সময় ক্যামেরাগুলি ফিট করা হয়েছে বলে মনে করছে পুলিশ।

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*