অফুরন্ত ব্যস্ততা এবং নানা বিধ সমস্যায় জেরবার মানুষের জীবন। একটা সময়ের পরে যেন অবধারিত ভাবেই সঙ্গী হয় হতাশা, অবসাদ। আর তার প্রভাব যে পাশের মানুষের উপরেও পড়ে, তা বলাই বাহুল্য। কিন্তু গবেষণা বলছে, এই প্রভাবের সব চেয়ে খারাপ শিকার হচ্ছে শিশুরা। আর এর পেছনে বড় ভূমিকা থাকছে মায়েদের।
এখন আর সেই যুগ নেই, যে সন্তান পালনকে সব চেয়ে বেশি গুরুত্ব দিতে গিয়ে বাইরের কাজকর্ম বাদ দেবেন। বরং বেশির ভাগই এখন ওয়ার্কিং মাদার। আর ওয়ার্ক থাকলে, তার সমস্যাও থাকবে। পারিবারিক সমস্যা তো আছেই। সব মিলিয়ে মায়েদের চাপ বেশ বেড়েছে এই যুগে। আর চাপ বাড়লে হতাশা এড়ানো অনেক সময়েই মুশকিল।
লন্ডনে সুস্বাস্থ্য বিষয়ক এখটি গবেষণায় বিশ্বব্যাপী একটি সমীক্ষা চালানো হয় অনলাইনে। তাতে দেখা যায়, যে সব মায়েরা অবসাদে ভুগছেন, তার প্রভাব পড়ছে শিশুর বুদ্ধিমত্তার উপরে। এই মায়েদের অনেকেরই মেজাজ ঘনঘন বদলায়। তাই এই বিষয়টিকে খুব একটা গুরুত্ব দিয়ে দেখা হয় না। কিন্তু সেই মন খারাপ বা অবসাদ দীর্ঘস্থায়ী হলে অবশ্যই তাকে গুরুত্ব দেওয়া উচিত। কারণ, মা অবসাদে ভুগলে তার নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে শিশুর বুদ্ধিমত্তার উপর। তাই কোনও মহিলা যদি দীর্ঘদিন অবসাদে ভোগেন, তার দ্রুত এবং সঠিক চিকিৎসা খুব জরুরি। তাঁর নিজের জন্য এবং তাঁর সন্তানের জন্যও।
৫-১৬ বছর বয়স বাচ্চাদের এবং তাদের মায়েদের নিয়ে সমীক্ষাটি চালানো হয়। শিশুদের বুদ্ধিমত্তার সঙ্গে পরীক্ষা করা হয় মায়েদের মানসিক অবস্থার। দেখা যায়, যে সব মায়েদের মধ্যে হতাশা বা অবসাদ কম আছে, বা প্রায় নেই-ই, তাঁদের সন্তানদের বুদ্ধিমত্তা বেশি। এর কারণ হিসেবে মনে করা হচ্ছে, মা অবসাদগ্রস্ত থাকলে যে বয়সে শিশুর মানসিক বিকাশ হয়, সেই বয়সে তাকে সঠিক শিক্ষা দিতে পারেন না মা।
একটি শিশুর সম্পূর্ণ সুস্থ মানসিক বিকাশের জন্য মায়ের সাহায্য সব চেয়ে বেশি প্রয়োজন। এক জন মা-ই সব থেকে ভাল বুঝতে পারেন, কোন বয়সে শিশুকে কী ভাবে শিক্ষা দেওয়া যাবে এবং সে কতটা শিখতে পারবে। শিশুর বুদ্ধিমত্তা বা সে কতটা সমাজের সঙ্গে মানিয়ে নিতে পারছে, তা-ও অনেকটাই নির্ভর করে মায়ের এই শিক্ষার উপরে। তাই মহিলাদের শরীরের সঙ্গে মানসিক অবস্থার দিকেও বিশেষ ভাবে নজর দেওয়া উচিত বলে জানাচ্ছে ওই গবেষণার রিপোর্ট।
শিশুদের বিকাশের জন্য মায়েদের হাসিখুশি থাকা জরুরি।
Be the first to comment