শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের মধ্যস্থতায় ছাত্র মৃত্যুর ঘটনার প্রায় দেড়মাস পরে খুলেছিল দাড়িভিট স্কুল। কিন্তু স্কুল খোলার পর মাস ঘুরতে পারলো না। ফের অশনি সঙ্কেত। তাপস বর্মন ও রাজেশ সরকারের মৃত্য়ুর সিবিআই তদন্তের দাবিতে শুক্রবার থেকে ফের অনির্দিষ্ট কালের জন্য স্কুলে তালা ঝুলিয়ে দিলেন বাসিন্দারা। এ বার দাবি মুখ্যমন্ত্রীকে এসে কথা বলতে হবে তাঁদের সঙ্গে।
স্কুলে বার্ষিক পরীক্ষা চলছে এখন। শনিবার সকালে পড়ুয়া, শিক্ষক ও কর্মচারিরা নিয়মমতো স্কুলে এলেও আন্দোলনকারীদের বাধায় ফিরে যেতে হল তাঁদের। তারফলে পরীক্ষা দেওয়া হল না। স্কুলের শিক্ষকরা জানান, মাধ্যমিকের ফর্ম ফিলাপেরও কাজ চলছিল। গুরুত্বপূর্ণ সেই কাজও অসমাপ্ত রয়ে গেল। মৃত ছাত্র তাপস বর্মনের মা মঞ্জু বর্মন বলেন, ‘‘এ বার আর প্রশাসনের কোনও কর্তার সঙ্গে কথা নয়, রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলতে চাই আমরা। যতক্ষণ না এই দাবি মেনে নেওয়া হচ্ছে, ততক্ষণ খুলতে দেওয়া হবে না স্কুল। ’’
উর্দু ও সংস্কৃত শিক্ষক নিয়োগের বিরুদ্ধে ছাত্রদের আন্দোলনের জেরে গত ২০ সেপ্টেম্বর তেতে ওঠে দাড়িভিট স্কুল সংলগ্ন এলাকা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে প্রথমে লাঠিচার্জ করে পুলিশ। কাঁদানে গ্যাসের শেল ফাটানো হয়। সে দিনই গুলিতে মৃত্যু হয় এই স্কুলের দুই প্রাক্তন ছাত্র তাপস বর্মন ও রাজেশ সরকারের। পুলিশের গুলিতেই প্রথম বর্ষের ওই দুই ছাত্রের মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ করেন তাঁদের পরিবার। তবে পুলিশ ও প্রশাসন গুলি চালানোর কথা পুরোপুরি অস্বীকার করে। এরপরেই ঘটনার সিবিআই তদন্তের দাবিতে উত্তাল হয়ে ওঠে গোটা এলাকা। বন্ধ করে দেওয়া হয় দাড়িভিট স্কুল।
দীর্ঘ টালবাহানার পর শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের মধ্যস্থতায় গত ১০ নভেম্বর থেকে চালু হয় স্কুল। শুরু হয় স্বাভাবিক পঠনপাঠন। শুরু হয় পরীক্ষা পর্বও। তারই মধ্যে ফের গতকাল থেকে স্কুল বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন বাসিন্দারা। স্বাভাবিক ভাবেই এলাকার পড়ুয়াদের ভবিষ্যৎ নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। মৃত ছাত্র তাপস সরকারের বাবা নীলকমল সরকার অবশ্য এই অবস্থার জন্য স্কুল কর্তৃপক্ষকেই দায়ী করেছেন।
Be the first to comment