গত ফেব্রুয়ারি মাস থেকে জেলে আছেন বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া। জিয়া এতিমখানা ট্রাস্টে দুর্নীতির মামলায় ১৭ বছরের কারাদণ্ড হয়েছে তাঁর। বাংলাদেশের আইনে বলা আছে, কেউ যদি দু’বছরের বেশি সময়ের জন্য কারাদণ্ডিত হন তবে তিনি ভোটে লড়তে পারবেন না। সেই আইনে ভোটে প্রার্থী হওয়া আটকে যাচ্ছে খালেদার। প্রার্থী হতে চেয়ে তিনি নির্বাচন কমিশনে আবেদন করেছিলেন। শনিবার কমিশন তাঁর আবেদন বাতিল করে দিয়েছে।
বাংলাদেশ ন্যাশনাল পার্টির দায়িত্ব নেওয়ার পরে এই প্রথমবার খালেদা ভোটে প্রার্থী হচ্ছেন না। তিনি জেলে যাওয়ার পর থেকেই তাঁর আইনজীবীরা বলে আসছিলেন, কারাদণ্ডের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করলে খালেদার একাদশ সাধারণ নির্বাচনে অংশ নিতে সমস্যা হবে না। কিন্তু সম্প্রতি বিএনপির অপর কয়েকজন দণ্ডিত নেতার নির্বাচনে অংশ নেওয়া আটকে গিয়েছে। এর পরে খালেদার পক্ষেও ভোটে দাঁড়ানো সম্ভব হবে বলে মনে হচ্ছে না।
বাংলাদেশে ভোট হবে ৩০ ডিসেম্বর। ৭২ বছর বয়সী খালেদার জন্য ফেনি-১, বগুড়া ৬ ও ৭ নম্বর আসনে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছিলেন বিএনপির নেতারা। কিন্তু ২ ডিসেম্বর মনোনয়ন বাতিল হয়ে যায়। ২০০৮ সালের ভোটে তিনি ওই তিনটি আসন থেকে বিজয়ী হয়েছিলেন। ১৯৯১ সাল থেকে পরপর তিনটি নির্বাচনে প্রতিবার তিনি পাঁচটি করে আসনে দাঁড়িয়েছেন ও বিজয়ী হয়েছেন। দশম সাধারণ নির্বাচন তাঁর দল বয়কট করেছিল।
শনিবার দুপুরে বিএনপির নেতারা ঘোষণা করেন, খালেদার মনোনয়নপত্র বাতিলের বিরুদ্ধে নির্বাচন কমিশনে আবেদন জানানো হয়েছে। এর ফলে নেত্রী নিশ্চয় ভোটে লড়ার অধিকার ফিরে পাবেন।
এদিন দুপুরে নির্বাচন ভবনে মুখ্য নির্বাচন কমিশনার কে এম নুরুল হুদার নেতৃত্বে আপিল কর্তৃপক্ষ ওই আবেদন শোনে। খালেদার পক্ষে বক্তব্য পেশ করেন প্রাক্তন অ্যাটর্নি জেনারেল এ জে মহম্মদ আলি। শুনানির পরে হুদা জানান, রায় দেওয়া হবে সন্ধ্যায়। এর মধ্যে আওয়ামি লিগের প্রতিনিধিরা নির্বাচন কমিশনে গিয়ে বলে আসেন, কোনও অবস্থাতেই যেন চাপের কাছে নতিস্বীকার না করা হয়। সন্ধ্যায় নির্বাচন কমিশন সিদ্ধান্ত নেয়, খালেদাকে ভোটে লড়তে দেওয়া হবে না।
খালেদার আইনজীবীরা জানিয়েছেন, নির্বাচন কমিশনের রায়ের বিরুদ্ধে আদালতে যাওয়ার রাস্তা খোলা আছে। কিন্তু সেখানে গিয়ে কতদূর সুবিধা হবে তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে অনেকের। কারণ আগেও আদালত দণ্ডিতদের নির্বাচনে লড়তে দিতে রাজি।
Be the first to comment