বিধানসভা ভোট শেষ হলেই যেমন পরের ভোটের প্রস্তুতি শুরু করে দেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, বিজেপি সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহেরও সেই একই অভিধান। দিল্লির অশোকা রোডে বিজেপি সদর দফতরে গুঞ্জন, পাঁচ রাজ্যের ভোট শেষ হওয়ার পর শাহ এখন খোঁচা খাওয়া বাঘ। এ মাসের শেষ থেকেই বাংলা-সহ পূর্ব ভারতের রাজ্যগুলিতে কর্মসূচির কার্পেট বম্বিং শুরু করবে গেরুয়াবাহিনী।
এমনিতেই বাংলায় রথ পথে নামার আগেই বিজেপি-তৃণমূলের টক্কর চলছে আদালতে। অমিত শাহ হুঙ্কার ছেড়ে ঘোষণা করেছেন বাংলায় “রথ হবেই। আমি গিয়েই রথযাত্রা শুরু করব।” বিজেপি সূত্রের মতে, বাংলার প্রান্তে প্রান্তে কর্মসূচির ঝাঁঝ আরও কয়েকগুণ বাড়িয়ে দেবে দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব এসে।
মঙ্গলবার পাঁচ রাজ্যের ফল প্রকাশের পর বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেই দিয়েছেন, “বাংলায় এই ফলের কোনও প্রভাব পড়বে না।” পর্যবেক্ষকদের মতে, শুধু তো রাজনৈতিক কর্মসূচি নয়, বিজেপি অন্য চাপও বাড়াবে বাংলার শাসক দলের উপর। তার ট্রেলর সোমবার দেখা গিয়েছে। সুব্রত বক্সীকে ডেকে ম্যারাথন জেরা করেছেন সিবিআই আধিকারিকরা। ব্যক্তি সুব্রত বক্সী তো বড় কথা নয়। তিনি তৃণমূলের রাজ্য সভাপতি। আর মুখ্যমন্ত্রী আঁকা ছবি নিয়ে যে ভাবে টানাটানি শুরু করেছে সিবিআই, তাতে বোঝা যাচ্ছে দিল্লি কোন দিকে হাত বাড়াতে চাইছে!
তৃণমূলও যে এ ব্যাপারটা জানে না এমন নয়। পাঁচ রাজ্যের ফল প্রকাশের দিন দিদি রয়েছেন দিল্লিতেই। কেন্দ্রের শাসক দলের বিরুদ্ধে ফের একবার আক্রমণ শানিয়েছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। এবং তিনি জানেন বিজেপি আগামী দিনে বাংলার মাটিতে মেরুকরণের রাজনীতিকে তীব্র করবে। তাই এ দিন দীর্ঘক্ষণ দিল্লিতে কংগ্রেস সাংসদ তথা আইনজীবী অভিষেক মনুসিংভির সঙ্গে বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী। সঙ্গে ছিলেন কলকাতার পুলিশ কমিশনার রাজীব কুমার।
সূত্রের খবর আইন-শৃঙ্খলার ব্যাপার নিয়েই আলোচনা হয়েছে তাঁদের মধ্যে। এই ইস্যুতেই রথযাত্রায় আপত্তি জানিয়েছিল রাজ্য। কিন্তু ডিভিশন বেঞ্চের রায়ের ফলে সিঙ্গল বেঞ্চের স্থগিতাদেশ খারিজ হয়ে যায়। ফলে তৃণমূলও যে গেরুয়া চাপ রুখতে ঘুঁটি সাজাচ্ছেন তা একপ্রকার স্পষ্ট।
Be the first to comment