বুধবার রিজার্ভ ব্যাঙ্কের নতুন গভর্নর হিসাবে দায়িত্ব নিলেন শক্তিকান্ত দাস। তিনি টুইট করে বলেছেন, রিজার্ভ ব্যাঙ্কের দায়িত্ব নিলাম। যাঁরা আমাকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন, সকলকে ধন্যবাদ জানাই। পর্যবেক্ষকরা বলছেন, দু’টি বড় ধরনের চ্যালেঞ্জের মোকাবিলা করতে হবে নতুন গভর্নরকে। প্রথমত, ব্যাঙ্কিং সেক্টরে সংকট দূর করা। দ্বিতীয়ত, বিনিয়োগকারীদের বোঝানো, রিজার্ভ ব্যাঙ্কের স্বশাসন বজায় আছে।
শোনা যাচ্ছে, রিজার্ভ ব্যাঙ্কের আগের গভর্নর উর্জিত পটেলের পরে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের আরও কয়েকজন উচ্চপদস্থ অফিসার পদত্যাগ করতে পারেন। যেভাবে আগের গভর্নরকে সরে যেতে হয়েছে, তাতে অনেকেই খুশি নন। রিজার্ভ ব্যাঙ্কের নতুন সহকর্মীদের সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়ে তুলতে হবে শক্তিকান্ত দাসকে।
উর্জিত পটেল ইস্তফা দিয়েছেন দু’দিন আগে। ৬১ বছরের নতুন গভর্নর শক্তিকান্ত দাস আগে ছিলেন অর্থমন্ত্রকের আর্থিক বিষয় সংক্রান্ত সচিব। তিনি কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কের গভর্নর হওয়ায় বিনিয়োগকারীদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গিয়েছে।
অনেকে আশা করছেন, উর্জিত পটেল আর্থিক নীতি নিয়ে যেমন কড়াকড়ি করেছিলেন, শক্তিকান্ত ততদূর করবেন না। সেই আশায় ভর দিয়ে বেড়েছে সভারিন বন্ডের দাম। কিন্তু টাকার দাম আগের মতোই কমছে। বুধবার এক ডলারের মুল্য হয়েছে ৭২.১৭১২ টাকা। আগের চেয়ে টাকার দাম কমেছে ০.৪ শতাংশ।
অর্থনীতিবিদ সোনাল বর্মা বলেছেন, শক্তিকান্ত দাসকে সকলে অর্থমন্ত্রকের লোক বলেই জানে। তিনি রিজার্ভ ব্যাঙ্কের স্বাধিকার কতদূর বজায় রাখতে পারবেন তা সময়ই বলবে। আমাদের মনে হয়, আর্থিক নীতির ব্যাপারে তিনি নরমপন্থী মনোভাব নিয়ে চলবেন। আমরা আশা করব, সরকারের যুক্তিগুলো তিনি বুঝবেন। তাঁর আমলের নিয়মকানুন হবে আগের চেয়ে কম কঠোর।
গভর্নর হিসাবে শক্তিকান্ত দাস প্রথমবার রিজার্ভ ব্যাঙ্কের বোর্ড মিটিং-এ বসবেন আগামী শুক্রবার। অনেকের ধারণা, সরকারের প্রতিনিধিরা বৈঠকে প্রস্তাব দেবেন, রিজার্ভ ব্যাঙ্কের কাজকর্মে আরও কড়া নজর রাখা হোক। সেজন্য গঠিত হোক কমিটি। বিদেশী মুদ্রা নিয়ন্ত্রণ ও আর্থিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখার জন্য ব্যাঙ্ক কী করছে, সেদিকে নজর রাখা হোক সবচেয়ে বেশি।
প্রশ্ন হল, নতুন গভর্নর কি সরকারের সব কথা মেনে নেবেন? নাকি আগের গভর্নরদের মতো কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কের স্বাধিকারের কথা বলবেন? পর্যবেক্ষকরা সকলেই লক্ষ রাখবেন সেদিকে।
শক্তিকান্ত দাস এর আগে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের সঙ্গে কাজ করেছেন। নতুন গভর্নর হওয়ার পরে তাঁর সম্পর্কে যে কথাটি সবচেয়ে বেশি শোনা যাচ্ছে তা হল, তিনি নোটবন্দি প্রকল্প চালুর সময়ে অর্থনীতি বিষয়ক সচিব ছিলেন। ওই বিতর্কিত প্রকল্প চালুর পরে অর্থনীতির ক্ষতি হয়। হাজার হাজার মানুষ কাজ হারান।
জি-২০ শীর্ষ বৈঠকে তিনি সরকারের প্রতিনিধি ছিলেন।
Be the first to comment