অটো চালিয়েইতো বেশ চলছিল সংসার। কেন বিধায়কের গাড়ি চালানোর চাকরি নিতে গেল ?”
টুম্পা মোল্লার এই আর্তনাদই এখন ছাপিয়ে যাচ্ছে হাসানপুরের সমস্ত শব্দকে। টুম্পা, মইনুল হক মোল্লার স্ত্রী। গতকাল জয়নগরের পেট্রোল পাম্পের কাছে দুষ্কৃতীদের ছোঁড়া গুলিতে মৃত্যু হয়েছে মইনুলের। তারপর থেকেই আর সামলে রাখা যাচ্ছে না টুম্পাকে।
মইনুলরা এক ভাই এক বোন। আজ থেকে প্রথমবর্যের ফাইনাল পরীক্ষা শুরু মইনুলের বোন ইয়াসমিনার। দাদার মৃত্যুতে উল্টেপাল্টে গেছে সমস্তটাই। পরীক্ষা দিয়ে যাওয়া হয়নি আর। বাড়িতে অসুস্থ মা। বাবা মারা গিয়েছে দিন কয়েক আগে। সংসারের হাল ধরে রেখেছিল যে, তাঁর এই হঠাৎ চলে যাওয়ায় দিশাহারা মইনুলের মা-বোন আর স্ত্রী।
গতকাল রাতে জয়নগরের পেট্রোল পাম্পের কাছে এলাকার তৃণমূল বিধায়ক বিশ্বনাথ দাসের গাড়িতে দুষ্কৃতী হামলায় মৃত্যু হয় মইনুল সহ তিনজনের। তবে আগেই গাড়ি থেকে নেমে যাওয়ায় বরাতজোরে বেঁচে যান বিধায়ক।
বছর পাঁচেক আগে মইনুলের সঙ্গে বিয়ে হয় টুম্পার। এখনও কোনও সন্তান হয়নি তাঁদের। পরিবার সূত্রেই জানা গেছে কিছুদিন আগেও জয়নগরে অটো চালাতেন মইনুল। গাড়ি চালানো শিখে মাস তিনেক আগে বিধায়কের গাড়ি চালানোর চাকরি নেন। মাসে বেতন ১৫ হাজার টাকা। সারা দিনই প্রায় বিধায়কের সঙ্গে ঘুরতেন মইনুল। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বহরুতে বিধায়কের গাড়িতে দুষ্কৃতীরা হামলা চালালে বোমা ও গুলির আঘাতে ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় তাঁর। খবর শোনার পরেই জ্ঞান হারান স্ত্রী টুম্পা।
আজ সকালেও শোকার্ত টুম্পাকে সামলাতে হিমশিম খেয়েছেন তাঁর স্বজনরা। বুক ফাটা আর্তনাদে একটাই প্রশ্ন ঘুরছিল খালি। “বেশ তো অটো চালাতো, কী দরকার ছিল বিধায়কের গাড়ি চালানোর কাজ নেওয়ার?” বলছিলেন, “আমার স্বামী তো কোনও অন্যায় করেননি। তাহলে ওকে কেন মারা হলো।”
Be the first to comment