সমাজকর্মী নরেন্দ্র দাভোলকর হত্যা মামলা প্রায় গুটিয়ে যাওয়ার পথেই ছিল। তীরে এসে তরী ডোবালো সিবিআই। হত্যাকাণ্ডে অভিযুক্ত তিন জনের বিরুদ্ধে সিবিআই চার্জশিটই পেশ করতে পারলো না । যার জেরে দাভোলকর খুনে অভিযুক্ত তিন জনের জামিন মঞ্জুর করল পুনে আদালত। শুক্রবারই জামিন পেল অমল কালে, রাজেশ বাঙ্গেরা ও অমিত দেগভেকর।
মামলা দায়ের করার ৯০ দিনের মাথায় চার্জশিট পেশ করার নিয়ম। যা করেই উঠতে পারেনি সিবিআই। অথচ, তিন অভিযুক্তকে জেরা করে বেশ কিছু তথ্য সিবিআইয়ের হাতে এসেছিল। নরেন্দ্র দাভোলকরের পরিবারের অভিযোগ, হত্যাকাণ্ডে তিনজনেই যে জড়িত সেই প্রমাণ তাদের জেরা করেই মিলেছিল। তাহলে কেন চার্জশিট পেশ করতে পারল না সিবিআই।
এদিন মুম্বই হাই কোর্টে দাভোলকর ও গোবিন্দ পানসারে হত্যাকাণ্ডের আরও একটি মামলার শুনানি হয়। যা দুই আন্দোলকারীর পরিবারই দায়ের করেছিল। মামলার শুনানিতে বলা হয়েছে, ২টি হত্যা মামলার তদন্তে সিবিআইয়ের ঢিলেমি দেখা যাচ্ছে।যা পরবর্তী শুনানি গুলিতে প্রভাব ফেলবে। এদিন হাই কোর্টের কড়া প্রশ্নের মুখে পড়ে সিবিআই। সূত্রের খবর, তদন্তকারী অফিসারকে হাই কোর্ট প্রশ্ন করে, এই মামলাগুলির তদন্তে কী কী গতি এসেছে।
তদন্তে জানা যাচ্ছে, হত্যায় জড়িত রয়েছে কয়েকজন ডানপন্থী সংগঠনের কর্মী। যাদের এখনও গ্রেফতার করা হয়নি। অথবা গ্রেফতার করার পরও চার্জশিট তৈরি হচ্ছে না। এর কারণ হাইকোর্ট জানতে চাইলে বেশ চাপে পড়েন সিবিআই আফিসার।
আদালতের প্রশ্নের উত্তরে অফিসার জানান, অভিযুক্তদের জেরা করার পরেও সেভাবে তথ্য মেলেনি। যে তথ্য হাতে এসেছে সেই দিয়ে চার্জশিট তৈরি করা যায় না। ১৭ জানুয়ারির মধ্যে সিবিআইকে চার্জশিট পেশ করার নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট।
অন্যদিকে, পুনে আদালত জামিন মঞ্জুর করলেও জেলেই থাকছে অমল কালে, রাজেশ বাঙ্গেরা ও অমিত দেগভেকর । কারণ, এই তিন জনেই গৌরী লঙ্কেশ হত্যাকাণ্ডে অভিযুক্ত। তাই জামিনে ছাড়া পাওয়ার পরই তাদের গ্রেফতার করে কর্ণাটক পুলিশ। আপাতত বেঙ্গালুরুর জেলে রয়েছে তারা।
প্রসঙ্গত, ২০১৩ সালের ২০ অগাস্ট খুব কাছ থেকে নরেন্দ্র দাভোলকরকে গুলি করা হয়। ২০১৫ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি গোবিন্দ পানসারে ও তাঁর স্ত্রী যখন মর্নিং ওয়াক করে ফিরছিলেন , দুষ্কৃতীরা তাঁকে ও তাঁর স্ত্রীকে লক্ষ্য করে গুলি চালায়। ২০ ফেব্রুয়ারি তিনি মারা যান। ২০১৭ সালের ৫ সেপ্টেম্বর নিজের বাড়ির সামনেই খুন হন গৌরী লঙ্কেশ।
প্রত্যেকটি খুন একই সংগঠন করেছে বলে মনে করা হচ্ছে। বড়সড় চক্রান্তের শিকার হয়েছিলেন দাভোলকাররা বলে মেনে নেয় সুপ্রিম কোর্টও।
সেই অনুযায়ী তদন্তভার সিবিআই-কে দেওয়া হয়।এখন তদন্তে সিবিআইয়ের ঢিলেমি ,সুপ্রিম কোর্টের এই সিদ্ধান্তকেই প্রশ্নের মুখে ফেলেছে।
Be the first to comment