মেঘালয়ে পুর্ব জয়ন্তিয়া পাহাড়ে খনি থেকে কয়লা তোলা ২০১৪ সালেই নিষিদ্ধ করে দিয়েছিল গ্রিন ট্রাইব্যুনাল। তার পরেও বেআইনিভাবে খনি থেকে কয়লা তোলা হচ্ছিল। শুক্রবার খনিতে নদীর জল ঢুকে অন্তত ১৩ জন শ্রমিক মারা গিয়েছেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
ইস্ট জয়ন্তিয়া হিল ডিস্ট্রিক্টের পুলিশ সুপার সিলভেস্টার নংতানার বলেন, দুর্ঘটনাগ্রস্ত খনিটি লিতিয়েন নদীর কাছে অবস্থিত। এদিন শ্রমিকরা যখন খনির মধ্যে খোঁড়াখুড়ি করছিল, তখন আচমকা খনির ছাদ ভেঙে পড়ে। তখনই খনির ভিতরে নদীর জল ঢুকে ভাসিয়ে দেয়। আমরা যথাসাধ্য চেষ্টা করছি যাতে খনির ভিতরে ঢোকা যায়। আমাদের কাছে যতদূর খবর, খনিতে যখন নদীর জল ঢোকে তখন ভিতরে ১৩ জন ছিল।
ওই ধরনের খনিগুলিকে বলে র্যাট হোল। মেঘালয়ে র্যাট হোল খনির বিরুদ্ধে প্রচার চালান অ্যাগনেস খারসাং নামে এক ব্যক্তি। কিছুদিন আগে জয়ন্তিয়া পাহাড়ে প্রচার করার সময় তাঁকে বেআইনি খনির মালিকরা আক্রমণ করেছিল বলে অভিযোগ।
মেঘালয়ের মুখ্যমন্ত্রী কনরাড সাংমা বলেন, পূর্ব জয়ন্তিয়া পাহাড়ে খনিতে জল ঢুকে ১৩ জন আটকে পড়ার ঘটনা দুর্ভাগ্যজনক। তাঁদের জীবন বাঁচানোর জন্য সব রকমের চেষ্টা হচ্ছে। এনডিয়ারএফ, জেলা প্রশাসন ও পুলিশ ত্রাণে নেমেছে।
এর আগেও মেঘালয়ে র্যাট হোল মাইনিং-এ দুর্ঘটনা ঘটেছে। ২০১২ সালে নানগালবিবিরা কয়লা খনিতে ১৫ জন আটকে পড়ে। তাদের দেহ সুদ্ধু পাওয়া যায়নি।
র্যাট হোল মাইনিং নিয়ে গ্রিন ট্রাইব্যুনালে রিপোর্ট দিয়েছিলেন শিলং-এ নর্থ ইস্টার্ন হিলস ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক ও পি সিং। তিনি রিপোর্টে লেখেন, অবৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে খনি থেকে কয়লা তোলার ফলে দূষিত হচ্ছে আশপাশের নদী ও ঝরণার জল। খনি থেকে অ্যাসিড ও অন্যান্য বর্জ্য পদার্থ জলে মেশায় তার রং হয়ে গিয়েছে লালচে অথবা বাদামি। রাস্তার ধারে যেভাবে কয়লা জমা করে রাখা হচ্ছে তাতে মাটি ও বায়ু দূষণ ঘটছে।
খনি থেকে কয়লা উত্তোলনের আদিম পদ্ধতির নাম র্যাট হোল মাইনিং। এই পদ্ধতিতে মাটিতে পাঁচ থেকে ১০০ বর্গমিটার পর্যন্ত গর্ত খুঁড়ে কয়লার সিমের কাছাকাছি পৌঁছানো যায়। তারপর অপর একটি টানেল খুঁড়ে বার করে আনা হয় কয়লা। সাধারণত জয়ন্তিয়া পাহাড় অঞ্চলে জমির মালিকরা এই পদ্ধতিতে কয়লা তোলায়। গ্রিন ট্রাইব্যুনাল র্যাট হোল খনি নিষিদ্ধ করার পর স্থানীয় খনি মালিকরা দাবি জানিয়েছিল, তাদের বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে কয়লা উত্তোলনের সুযোগ দেওয়া হোক।
Be the first to comment