আপনি কি তথ্য প্রযুক্তি, আর্থিক সেবা বা উৎপাদন ক্ষেত্রে কাজ করেন? একটি সমীক্ষার রিপোর্ট বলছে আগামী দিনে সম্ভবত আপনার কপালে চিন্তার ভাঁজ গভীর হতে চলেছে। কারণ এই সেক্টরগুলোতে আগামী ৩-৪ বছরে ৬০-৭০ শতাংশ চাকরির প্রায় পুরোটাই ডিজিটালাইজ হতে চলেছে।
অনুমান করা হচ্ছে, আগামী দিনে তথ্য প্রযুক্তি সংস্থা, আর্থিক পরিষেবা, উৎপাদন, পরিবহন, প্যাকেজিং এবং শিপিং—–প্রভৃতি গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রগুলিতে কাজ স্বয়ংক্রিয় করা হবে। সাম্প্রতিক একটি প্রতিবেদনে জারি করা হয়েছে এমন সতর্কবার্তাই। ডেটা-এন্ট্রি ক্লার্ক, ক্যাশিয়ার, ফিনানশিয়াল অ্যানালিস্ট (আর্থিক বিশ্লেষক), টেলিমার্কেটার, কাস্টমার সার্ভিস এক্সিকিউটিভ, ম্যানুয়াল ওয়ার্ক অপারেটর/নির্বাহী, কারখানার কর্মী, কম্পিউটার সাপোর্ট বিশেষজ্ঞ, খুচরা বিক্রেতা এবং বিজ্ঞাপন বিক্রেতার ভূমিকা ক্রমাগত কমে যাচ্ছে। গ্লোবাল ট্যালেন্ট অ্যাসেসমেন্ট কোম্পানি হুইবক্স, এইচআর প্রযুক্তির সংস্থা পিপলস স্ট্রং এবং ইন্ডিয়ান ইন্ডাস্ট্রি কনফেডারেশনের ২০১৯ এর রিপোর্ট অন্তত তেমনি ইঙ্গিত করছে।।
“অটোমেশন গত ১০-১২ মাসে লেনদেনে বেশ প্রভাব ফেলেছে। পরের ৩-৪ বছরে প্রায় ৬০-৭০% চাকরি সম্পূর্ণভাবে প্রতিস্থাপিত হতে পারে” এমনটাই জানিয়েছেন, ‘পিপলস স্ট্রং’-এর কো ফাউন্ডার এবং সিইও পঙ্কজ বনসল। এক হাজারেরও বেশী সংখ্যক কর্মীদের উপর একটি সমীক্ষা করে দেখা যাচ্ছে আইটি ও সফটওয়্যারের ক্ষেত্রে ইতিমধ্যেই নতুন করে সেই সব কর্মীদের প্রাধান্য দেওয়া হচ্ছে যাদের ইন্টারনেটে দক্ষতা, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, ভার্চুয়াল এবং রিয়্যালিটি সেন্স বাকিদের তুলনাউ অনেকগুণ বেশী।
বনসল আরও বলছেন, “কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা আর্টিফিশিয়াল ইন্টালিজেন্স এবং মেশিন লার্নিংয়ের চাহিদা আজকাল ব্যবসার স্বার্থেই ইন্টারনেটে অ্যাপ্লিকেশনের মাধ্যমে হচ্ছে। স্টার্টআপ ও মিডিয়েজ প্রযুক্তি সংস্থা এই প্রোফাইলের কর্মীই বেশী চাইছে।” তবে সমীক্ষার রিপোর্টে বলা হচ্ছে প্রযুক্তি সংস্থাগুলো, বিশেষত সফ্টওয়্যার শিল্পে নিয়োগের ক্ষেত্রে, দু’বছর বাদে আবারও ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হতে পারে পরিস্থিতি। কোম্পানিগুলির নিয়োগের ক্ষেত্রে অবশ্যই কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা আর্টিফিশিয়াল ইন্টালিজেন্স, গবেষণা ও উন্নয়ন,বিশ্লষণ ক্ষমতা ইত্যাদি পরখ করে নেওয়া হবে। বনসল বলছেন, “কোম্পানিগুলি এখন যে বেতন দিচ্ছে তার চেয়ে ১৫-২০ শতাংশ বেশি বেতন দেওয়া হবে এরপরে। মাঝারি থেকে বড়, প্রায় সব কোম্পানিই আগামীদিনে এ ভাবেই এগোবে।”
এই রিপোর্টটির অন্য আরেকটি উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো গিগ বা ফ্রিল্যান্স অর্থনীতির বৃদ্ধি। বনশালের জানিয়েছেন, “এশিয়া ও ভারতের বাজারে কিছুটা দেরিতে এসেছে এই গিগ বা ফ্রিল্যান্স অর্থনীতি। তবে ভারতে এই গিগ অর্থনীতির প্রভাব ২০২২ এর মধ্যেই দেখা যাবে।” রিপোর্টটিতে আরোও বলা হচ্ছে, “এখন যে স্যালারি পান কর্মীরা তার চেয়ে দ্বিগুণ টাকা পাবেন এই ব্যবস্থায়। আর সেটা সম্ভব ফ্রিল্যান্স কাজের মাধ্যমে। এখনকার রিপোর্ট অনুযায়ী গোটা বিশ্বে ৪ জন গিগ শ্রমিকের মধ্যে ১ জন ভারতের কর্মী”।
অতএব নিজেকে ঘষে-মেজে তৈরি রাখতেই হবে আগামীদিনের জন্য। নইলে কাজ হারিয়ে বসে থাকতে হবে বাড়িতে। তাই সময় থাকতে নিজের স্কিল বাড়িয়ে তৈরি থাকলেই মুশকিল আসান সম্ভব।
Be the first to comment