অভিমানে গায়ে আগুন দিয়ে আত্মঘাতী হলেন তরুণী

Spread the love

মায়ের বকুনিতে অভিমান হয়েছিল খুব। সেই অভিমান এতটাই বেশি যে গায়ে আগুন দিয়ে আত্মহত্যা করল বছর কুড়ির তরুণী।

পুলিশ জানিয়েছে, মৃতার নাম শ্রুতি।  তিন বছর বয়সে বাবা মারা যায় তরুণীর। তারপর থেকে শ্রুতি-সহ তিন ভাই বোনকে আগলে রেখেছেন মা পুণ্যবতী দেবী। সরকারি কন্ট্রাকটরের কাজ করে সংসার চালান পুণ্যবতী। শ্রুতি এসএসজে কলেজের  ইলেকট্রনিক্স অ্যান্ড কমিউনিকেশন ইন্জেনিয়ারিংয়ের  দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী।

তরুণীর মা’র কথায়, বেশ কিছুদিন ধরেই তিনি লক্ষ্য করেছিলেন পড়াশোনার থেকেও মোবাইল ফোনে বেশি সময় কাটায় শ্রুতি।  সেই নিয়ে মা ও মেয়ের মধ্যে বাকবিতণ্ডা লেগেই থাকত। গত শুক্রবারই শ্রুতি যখন ফোনে ব্যস্ত, পুণ্যবতী তাঁর হাত থেকে মোবাইলটি কেড়ে নেন। ফোন খুলে দেখেন, তাতে অতিরিক্ত সিম কার্ড লাগানো। এই বিষয়ে প্রশ্ন করলে মেয়েও এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। ফলে শুরু হয় বচসা।

হায়দ্রাবাদের কোড়াকলের সাইবারাবাদ থানার পুলিশ জানিয়েছে,  শুক্রবার রাতে ঝগড়ার পর তরুণী তাঁর মা সঙ্গে কথাবার্তা বন্ধ করে দেয়। পর দিন সকালে পুণ্যবতী তাঁর ছেলেকে নিয়ে বাড়ির বাইরে বেরোন কাজে। ফিরে এসে দেখেন, ঘরের ভিতর কেরোসিন ছড়ানো। চারদিক লণ্ডভণ্ড। মাটিতে পড়ে রয়েছে শ্রুতির আধপোড়া দেহ।

১৭৪ ধারায় (রহস্যজনক মৃত্যু) মামলা রুজু করেছে পুলিশ । শঙ্করাপল্লীর ইন্সপেক্টর এন পিল্লাইয়া বলছেন, ‘‘শ্রুতির মায়ের বয়ান অনুযায়ী তিনি শুধু ফোনের পিছনে কম সময় নষ্ট করতে বলেছিলেন, আর তাতেই রাগ ও অভিমানে শ্রুতি আত্মহত্যা করেছে। আপাতত এই বয়ানকে গুরুত্ব দিচ্ছে পুলিশ।’’ ওসমানিয়া হাসপাতালে ময়নাতদন্তের পর শ্রুতির দেহ ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে তাঁর পরিবারের কাছে।

অস্থির সময়ে যেখানে সকলেই ছুটছে তখন এই ঘটনা আরও একবার অনেকগুলো প্রশ্ন তুলে দিল। তিন বছর বয়স থেকে যে মা তাঁকে বড় করলেন, পরিশ্রম করে উপার্জন করে মেয়ের পড়াশোনার খরচ জোগালেন, সেখানে মায়ের কাছেই শ্রুতিকে নতুন সিমকার্ডের কথা লুকিয়ে যেতে হল কেন! কেনই বা ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রীর এতটুকু বাস্তব জ্ঞান থাকবে না,যেখানে মা বকলে সে দিশেহারা হয়ে আত্মহত্যার পথ বেছে নেবে! প্রশ্ন উঠছে, অভিভাবকদের সঙ্গে সন্তানদের সম্পর্কের বাঁধনটা এতো দুর্বল হচ্ছে কেন, খামতি কোথায়? সেটা খুঁজে বার করতে হবে নিজেদেরই।

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*