বৃদ্ধা মাকে মেরে পুড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠল ছেলের বিরুদ্ধে

Spread the love

দাবি ছিল পাঁচ কাঠা জমির পুরোটাই। কিন্তু দিতে নারাজ মা। তাই বৃদ্ধা মাকে মেরে পুড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠল ছেলের বিরুদ্ধে। ঘটনার দু’ সপ্তাহ পরে রবিবার অভিযুক্ত গ্রেফতার হতেই আজ অপমানে বিষ খেল তার গোটা পরিবার। মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন মৃত তরুবালা বিশ্বাসের (৭৫) পুত্রবধূ গীতা, দুই নাতি শুভ ও সুদীপ। ইতিমধ্যেই মৃত্যু হয়েছে নাতনি রিমার (১৮)। ঘটনা স্রোতে বাক্যহারা শান্তিপুরের বাগনেপাড়া।

বাগনেপাড়ার বাসিন্দারা জানাচ্ছেন, পেট চালানোর জন্য ভিক্ষে করে ঘরে ফিরতেই তরুবালাদেবীর উপর শুরু হত ছোট ছেলে সত্যেনের নির্যাতন। কারণ বড় ছেলে মারা যাওয়ার পর বড় বৌমা শ্যামলী বিশ্বাসকে তিন কাঠা জমি লিখে দিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু স্বামীর মৃত্যুর পর থেকে বর্ধমানের কালনায় বাপের বাড়িতে থাকতেন শ্যামলী। বৃদ্ধার ছোট ছেলে সত্যেন পেশায় কাঠের মিস্ত্রি। আর্থিক অবস্থা সে রকম নয়। তাই পরের বাড়ি ভিক্ষা করে দিন গুজরান করতেন তরুবালা।

পুলিশ জানিয়েছে, জমি নিয়ে বিবাদ এমন জায়গায় পৌঁছোয় যে, গত ৩০ শে নভেম্বর রাতে মায়ের গলা টিপে মেরে সাইকেলের পেছনে তাঁর দেহ চাপিয়ে বাড়ি থেকে তিন কিলোমিটার দূরে আমবাগানে নিয়ে গিয়ে কেরোসিন তেল ঢেলে দেহ জ্বালিয়ে দেয় সত্যেন। দেহ যাতে চেনা না যায় তার জন্য মায়ের কপালে সিঁদূর, হাতে শাখা পলা ও পায়ে নূপুর পরিয়ে দেয়।

পরের দিন সকালবেলা স্থানীয় বাসিন্দারা তাঁর দগ্ধ দেহ দেখতে পেয়ে পুলিশে খবর দেয়। প্রথমে দেহটি অজ্ঞাতপরিচয় হিসেবেই তদন্ত শুরু করে শান্তিপুর থানার পুলিশ। সত্যেনও পাড়ায় রটিয়ে দেয় বাড়ি ছেড়ে চলে গিয়েছে তাঁর মা। ঘটনার প্রায় ১৫ দিন পর শনিবার তরুবালার বড় বৌমা শ্যামলীর অভিযোগের ভিত্তিতে সত্যেনকে গ্রেফতার করা হয়। পুলিশের দাবি, জেরায় মাকে খুনের কথা কবুল করে সত্যেন।

এ দিকে শনিবার সত্যেন গ্রেফতারের পরেই চাপে পড়ে যায় তার পরিবার। পুলিশ জানিয়েছে, অপমানেই আজ দুপুরে মুড়ির সঙ্গে বিষ মিশিয়ে খেয়ে নেয় সত্যেনের স্ত্রী, দুই ছেলে ও মেয়ে। এ বারের উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী সত্যেনের ১৮ বছরের মেয়ে রিমাকে হাসপাতালে আনার সঙ্গে সঙ্গেই তাঁর মৃত্যু হয়। শক্তিনগর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে তাঁর স্ত্রী গীতা ও তাঁর দুই ছেলে শুভ ও সুদীপকে। তাঁদের অবস্থাও আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছেন ডাক্তাররা।

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*