স্বাধীন মতপ্রকাশের খেসারত দিলেন আরও এক সাংবাদিক। সরকারের বিরুদ্ধে মুখ খুলতেই সাংবাদিককে সোজা জেলে পুরলো মণিপুর সরকার। ফেসবুকে নরেন্দ্র মোদী ও বিজেপি সরকারের সমালোচনা করেছিলেন মণিপুরের সাংবাদিক কিশোরচন্দ্র ওয়াংথেম। সমালোচনা করে একটি ভিডিও ফেসবুকে পোস্ট করেছিলেন। তাতেই বেজায় ক্ষুব্ধ মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন্দ্র সিং। তাই শাস্তি দিতে জাতীয় নিরাপত্তা আইনের ধারায় প্রথমে ওয়াংথেমকে গ্রেফতার পরে এক বছরের কারাদণ্ডের নির্দেশ দিল মণিপুরের আদালত।
ওয়াংথেমের বিরুদ্ধে অভিযোগ, নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে একটি ভিডিও পোস্ট করেন তিনি। যেখানে মোদী ও মুখ্যমন্ত্রী বীরেন্দ্র সিংয়ের বিরুদ্ধে আপত্তিকর মন্তব্য করেন বলে অভিযোগ। ভিডিওটিতে মোদীর পাপেট বলে বীরেন্দ্র সিংকে কটাক্ষ করা হয়। ভিডিওটি মণিপুরে বেশ সাড়া ফেলে।
ওয়াংথেমকে গ্রেফতার করে মণিপুর পুলিশ। গত শনিবার মণিপুরের একটি আদালত সাংবাদিককে এক বছরের কারাদণ্ডের সাজা শোনায়। জানা যাচ্ছে, ফেসবুকে ভিডিও পোস্ট করার আগেই চাকরি ছাড়েন এই সাংবাদিক। মণিপুরের একটি প্রথম সারির নিউজ চ্যানেলের সাংবাদিক ছিলেন ওয়াংথেম। সরকারের প্রতি নিউজ চ্যানেলের পক্ষপাতিত্ব মেনে নেননি তিনি। তাই ইস্তফা দেন।
নিজের মত প্রকাশ করেই মোদীর রাজনৈতিক নীতির সমালোচনা করেছিলেন ওয়াংথেম। তা বলে সাংবাদিককে প্রায় ২০ দিন জেলে রাখার পর এক বছরের কারাদণ্ডের নির্দেশ!
এই নিয়ে সোচ্চার হয়েছে ‘অল মণিপুর ওয়ার্কিং জার্নালিস্ট ইউনিয়ন’। এছাড়াও ইম্ফলের রাস্তায় নেমেছেন সমাজকর্মীরা।
বিজেপি শাসিত মণিপুরের রাজ্যপাল নাজমা হেপতুল্লা সাংবাদিকের এই শাস্তিকে সমর্থন করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, মত প্রকাশের স্বাধীনতার অপব্যবহার অনেকেই করেন। ওয়াংথেমও করেছেন। উপযুক্ত শাস্তি তাঁকে পেতেই হবে।
স্বাধীনভাবে মতপ্রকাশের জেরে রাজনৈতিক রোষের মুখে পড়েন দেশের বহু সমাজকর্মী, সাংবাদিক। অনেকে এখনও জেলে বন্দি। তাঁদের বিচারপ্রক্রিয়া এগোয় না। মণিপুরে ওয়াংথেমের মুক্তির দাবিতে মিছিলে নেমেছেন অনেকেই। তাঁদের দাবি, জাতীয় নিরাপত্তা আইনকে অপব্যবহার করেই চলেছে সরকার। মোদীকে তাঁদের প্রশ্ন, এবার কেন্দ্রই বলে দিক মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ঠিক কতটা পরাধীন।
Be the first to comment