সুপ্রিম কোর্ট ঘোষণা করেছিল সেপ্টেম্বর মাসে। তারপরেও অনেক ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে আধার দিতে বাধ্য করা হচ্ছে। নতুন সিমের কানেকশন পেতে কিংবা ব্যাঙ্কের কাজের জন্য চাওয়া হচ্ছে আধার কার্ড। তাই এ বার আধার কার্ড চাইলে কড়া শাস্তি হতে পারে, এমনটাই জানানো হলো কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে।
সোমবার কেন্দ্রীয় সরকার মন্ত্রিসভার বৈঠকে সংশোধনী এনে সিলমোহর দিয়ে দেয় যে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট ও মোবাইল কানেকশনের জন্য আর দরকার নেই আধার কার্ড।। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে বলা হয়েছিল কয়েকটি নির্দিষ্ট ক্ষেত্রে ছাড়া আর কোথাও আধার কার্ড জরুরি নয়। আর নির্দেশের কথা মাথায় রেখেই মন্ত্রিসভা সিদ্ধান্ত নেয় যে আধার চেয়ে চাপ দেওয়া হলে নেওয়া হবে কড়া পদক্ষেপ। টেলিকম কোম্পানি বা সংশ্লিষ্ট ব্যাঙ্ককে ১ কোটি টাকা জরিমানা। হতে পারে তিন থেকে ১০ বছরের জেল।
কোনও ব্যক্তির সম্পর্কে তথ্য ব্যবহার করার আগে অনুমতি না নিলে ১০,০০০ টাকা জরিমানা ও তিন বছরের জেলের শাস্তি আগে থেকেই আছে। অনুমতি ছাড়া কোথাও ছবি বা আইডি ব্যবহার করা হলে ১০,০০০ থেকে ১ লক্ষ টাকা পর্যন্ত জরিমানা হতে পারে।
চলতি বছরের ২৬ সেপ্টেম্বর সুপ্রিম কোর্ট জানিয়ে দেয়, মোবাইলের সঙ্গে আধার লিংক করা জরুরি নয়। শুধুমাত্র প্যানের সঙ্গে আধার সংযুক্তিকরণের ক্ষেত্রেই সম্মতি দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। আর আয়কর রিটার্নের ক্ষেত্রে জরুরি হবে আধার কার্ড। সিবিএসি, নিট কিংবা ইউজিসি-র ক্ষেত্রেও আধার জরুরি নয়।
এমনকী কোনও ভর্তুকি পাওয়ার ক্ষেত্রে বা সোশ্যাল ওয়েলফেয়ার স্কিমেই আধার যুক্ত করতে না চাইলে থাকবে ‘এক্সিট’ অপশন।
শীর্ষ আদালত আরও বলেছে, অবৈধ অনুপ্রবেশকারীরা আধার কার্ড পাবে না। স্কুলে ভর্তি হওয়ার ক্ষেত্রেও আধার লাগবে না। তবে কেন্দ্রীয় সরকার যাতে আধারের ডেটা নিরাপদ করার জন্য জরুরি আইন নিয়ে আসে, সে ব্যাপারে নির্দেশ দিয়েছিল কোর্ট।
বিজেপি সরকার ক্ষমতায় আসার পর বিভিন্ন পরিষেবার ক্ষেত্রে আধার লিঙ্ক বাধ্যতামূলক করে। আধার কার্ডকে বাধ্যতামূলক করার বিপক্ষে সুপ্রিম কোর্টে ২৭ টি আবেদন জমা পড়েছিল। আবেদনকারীদের বক্তব্য ছিল, এতে ব্যক্তিগত গোপনীয়তার অধিকার ভঙ্গ করা হচ্ছে। আধার কার্ডের জন্য যে তথ্যগুলি দিতে হবে, তাও ফাঁস হয়ে যেতে পারে।
অন্যদিকে সরকারের বক্তব্য ছিল, আধার কার্ডের প্রয়োজনীয় তথ্য সম্পূর্ণ নিরাপদ। ফাঁস হওয়ার ভয় নেই। এই কার্ডের সাহায্যে লক্ষ লক্ষ দরিদ্র মানুষের কাছে সরকারি প্রকল্পের সুফলগুলি পৌঁছে দেওয়া যাবে। মাঝপথে কেউ চুরি করলে ধরা পড়বে। টানা ৩৮ দিন ধরে তার ভিত্তিতে শুনানি হয়। তারপরেই ঐতিহাসিক রায় শোনায় দেশের শীর্ষ আদালত।
Be the first to comment